সোনারগাঁ পৌর এলাকায় ডাকাত আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন পৌরবাসী। জানমালের নিরাপত্তায় বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার মানুষ লাঠিসোটা, টর্চলাইট, বাঁশি নিয়ে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন।
পৌর এলাকায় সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ডাকাতির ঘটনায় পৌরবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ডাকাতদের প্রতিহত করতে পৌরসভার অর্জুন্দী, ভট্টপুর, বানীনাথপুর, ষোলপাড়া ও নোয়াইলসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ লাঠিসোটা নিয়ে পাহারা দিচ্ছেন। রাত ১০টা থেকে ভোর পর্যন্ত গ্রামবাসী কয়েকটি গ্রুপ করে পর্যায়ক্রমে এ পাহারার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
জানা যায়, সোনারগাঁ পৌরসভার নোয়াইল গ্রামের মুদি ব্যবসায়ী মামুন মিয়ার বাড়িতে গত ১৬ মার্চ রাতে ডাকাতি হয়। ডাকাতরা স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও মোবাইল সেটসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুটে নেয়। ডাকাতিতে বাধা দেওয়ায় ব্যবসায়ীর স্ত্রী মনি আক্তারকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করা হয়। পরদিন ১৭ মার্চ একই এলাকায় ডাকাতি করতে গিয়ে দুই ডাকাত গণধোলাইয়ের শিকার হয়। একই দিনে লাহাপাড়া গ্রামের দুবাই প্রবাসী আজিজুল ইসলামের বাড়িতে দিনদুপুরে ডাকাতি করতে গিয়ে আরও এক ডাকাতকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন স্থানীয়রা। ডাকাতের ছুরিকাঘাতে প্রবাসীর স্ত্রী লাবন্য আক্তার আহত হন।
গত ৩০ মার্চ মোগরাপাড়া রতনদী এলাকায় দেশীয় অস্ত্রসহ দুই ডাকাতকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দেন এলাকাবাসী। ১ এপ্রিল সোনারগাঁ পৌরসভার সাবেক কমিশনার ও কৃষ্ণনগর গ্রামের বাসিন্দা আমির হোসেন ভূঁইয়া ও তাঁর চাচাতো ভাই দলিল লেখক আব্দুর রউফ ভূঁইয়ার বাড়িতে ডাকাতির হুমকি দিয়ে বাড়ির দেয়ালে পোস্টার লাগিয়ে দেয় ডাকাত দল। এর আগে ২৫ মার্চ চিঠি পাঠিয়ে একই হুমকি দেয় ডাকাতরা। একের পর এক ডাকাতি, ডাকাতির হুমকি ও ডাকাত আটকের ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ফলে গ্রামবাসী প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়াই নিজ উদ্যোগে তাদের জানমালের নিরাপত্তার জন্য গ্রুপ করে পাহারার ব্যবস্থা করেছেন।
অর্জুন্দী এলাকার বাসিন্দা জানান, ২৫-৩০ জন লোক লাঠিসোটা ও টর্চলাইট হাতে একত্রিত হয়ে গ্রাম পাহারা দিচ্ছেন। গ্রামের মানুষকে একত্রিত করে সাতটি দলে ভাগ করে প্রতিদিন পাহারা দেওয়া হচ্ছে। তারা গ্রামের প্রতিটি বাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিত করছেন। কোথাও চিৎকার চেঁচামেচি শুনলে তারা এগিয়ে যাচ্ছেন, এলাকায় অপরিচিত কাউকে দেখলে তার দিকে লক্ষ্য রাখছেন।
অর্জুন্দী গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, পাহারা দেওয়ার পর থেকে আগের মতো অপরিচিত কেউ আর গ্রামে ঢোকে না। এক সময় ডাকাতের পাশাপাশি মাদকসেবী, মাদক ব্যবসায়ী ও অপরিচিত মানুষ গাড়ি নিয়ে চলাচল করত। এখন সেটা দেখা যায় না।
বানীনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা ফয়সাল মিয়া বলেন, ডাকাতরা শুধু সম্পদ লুট করে না, মানুষকে কুপিয়ে জখমও করে। তাই আতঙ্কটা বেশি। ডাকাতি প্রতিরোধে রাত ১০টা থেকে ৩টা পর্যন্ত পাহারা দেওয়া হচ্ছে।
সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ মফিজুর রহমান বলেন, গ্রামবাসীর নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে নিজেরাই পাহারা দেওয়ার বিষয়টি প্রশংসনীয়। পুলিশের জনবল কম তাই সব স্থানে যাওয়া সম্ভব হয় না। সবার প্রতি নিরাপত্তা জোরদার করার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের এ কাজে পুলিশ সহযোগিতা করবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এল ক য় স ন রগ প রব স ব যবস আতঙ ক
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় বিকেলে বৈঠকে বসছে কমিটি
সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ পর্যালোচনায় আজ সোমবার বিকেল ৪টায় বৈঠকে বসছে এ সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের কমিটি। জাতিসংঘের গুমবিষয়ক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে আজ সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা আজ বিকেল ৪টায় মিটিংয়ে বসছি। সেখানে তাদের দাবিগুলো পর্যালোচনা করব। আমরা সুপারিশগুলো উপদেষ্টা পরিষদে তুলব। সরকারি কর্মচারী ভাইদের বলব, সরকারি কাজে যেন ব্যাঘাত না ঘটে। আমাদের সিদ্ধান্ত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেন।’
তিনি বলেন, ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ পুনরায় বিবেচনার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। অবশ্যই এটা পুনরায় বিবেচনার সুযোগ রয়েছে। সরকারি কর্মচারীরা বিড়ম্বনার শিকার হতে পারেন এমন কিছু করা হবে না। এজন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
গত ৪ জুন এ অধ্যাদেশ নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি পর্যালোচনায় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশীদ। এ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব।