ভাই ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তাঁকে দেখতে যাচ্ছিলেন জোয়ার সরদার (৬৫)। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী পারুলী বেগম (৫৫) ও ছেলে ইমান সরদার (৩৫)। কিন্তু ভাইকে আর দেখতে পারলেন না তিনি। পথে সড়ক দুর্ঘটনায় জোয়ার সরকার ও ইমান নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন পারুলী বেগম।

ফরিদপুর সদর উপজেলার গেরদা ইউনিয়নের জোবায়দা-করিম জুট মিলের কাছে একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের খাদে পড়ে ৭ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকা–বরিশাল মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে জোয়ার সরদার (৬৫) ও তাঁর ছেলে ইমান সরদার রয়েছেন। তাঁদের বাড়ি নগরকান্দা উপজেলার শেয়ার কান্তিগ্রামে।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে আরও আছেন নগরকান্দার কাঠিয়া বড়গ্রামের বাসিন্দা রাজীব খানের স্ত্রী দীপা খান (৩৪), ফরিদপুর সদরেরচরের চাঁদপুর গ্রামের বলরাম সরকারের স্ত্রী ভারতী সরকার (৪০), চরভদ্রাসন উপজেলার গাজীটেক গ্রামের বাসিন্দা খালেক চৌধুরীর ছেলে আলম চৌধুরী (৪০), ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট মহল্লার বাসিন্দা লতিফ ব্যাপারীর স্ত্রী ফজিরননেসা এবং লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার পূর্ব ফকিরপাড়া গ্রামের জহিরউদ্দিনের ছেলে আজিবরউদ্দিন (৪৩)।

আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত ব্যক্তিদের স্বজনের আহাজারি দেখা যায়। বাবা জোয়ার সরদার ও ভাই ইমান সরদারের লাশের পাশে দাঁড়িয়ে আহাজারি করছিলেন শাহেদ সরদার। তিনি জানান, দুদিন আগে তাঁর চাচা চান মিয়া সরদার অসুস্থ হয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁকে দেখতে বাবা, মা ও ভাই হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা ও ভাই এখন লাশ হয়ে সেই হাসপাতালে। মায়ের অবস্থাও গুরুতর।

নিহত ভারতী সরকারের সঙ্গে বাসে ছিলেন তাঁর ভাতিজা বাঁধন সরকার (২৫)। দুর্ঘটনায় আহত বাঁধনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বলেন, তাঁর বাবা অসুস্থ। ফরিদপুর শহরে একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাঁকে দেখতে যাচ্ছিলেন। তালমার মহিলা রোড থেকে বাসটি ছাড়ার পর বেপরোয়া গতিতে চলতে শুরু করে। যাত্রীরা বারবার বলার পরও চালক কারও কথা শোনেননি। চালকের জন্যই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থেকে ফারাবী পরিবহনের একটি বাস ফরিদপুরে যাচ্ছিল। ফরিদপুর সদর উপজেলার গেরদা ইউনিয়নের জোবায়দা-করিম জুট মিলের কাছে বাসটি আরেকটি বাসকে অতিক্রম (ওভারটেক) করতে যায়। তখন বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পিলারে ধাক্কা লেগে সড়কের পাশের পুকুরে পড়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা এসে উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। হতাহত ব্যক্তিদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

ওই দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইশরাত জাহান। তিনি বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, বাসের গতি ৮০ কিলোমিটারের ঊর্ধ্বে ছিল। চালকের বেপরোয়া গতির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।’

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে বাবা ও ভাইয়ের লাশের পাশে দাঁড়িয়ে আহাজারি করছিলেন শাহেদ সরদার। আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ র ঘটন য় উপজ ল র সরদ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির প্রতি সমর্থন জানালেন গভর্নর ক্যাথি হোকৌ

নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোকৌ গতকাল রোববার নিউইয়র্ক নগরের ডেমোক্রেটিকদলীয় মেয়রপ্রার্থী জোহরান মামদানিকে সমর্থন করেছেন। তাঁদের মধ্যে মতবিরোধ থাকা সত্ত্বেও হোকৌ তাঁকে ‘নিউইয়র্ক নগরকে সাশ্রয়ী করার বিষয়ে মনোযোগী একজন নেতা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

দ্য নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক লেখায় হোকৌ জোহরানের প্রতি এ সমর্থন জানান। ফলে গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী ৩৩ বছর বয়সী জোহরানের অবস্থান আরও শক্তিশালী হলো। তিনি রাজ্যের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ডেমোক্র্যাট ও ক্ষমতাধর ব্যক্তি। এই সমর্থন হাউস মাইনরিটি লিডার হেকিম জেফরিস, সিনেট মাইনরিটি লিডার চাক শুমারের মতো অন্য শীর্ষস্থানীয় ডেমোক্র্যাটদের ওপর নতুন করে চাপ সৃষ্টি করেছে। তাঁরা এখনো জোহরানকে সমর্থন জানাননি। জেফরিস ও শুমার দুজনেই ব্রুকলিনের বাসিন্দা।

গভর্নর হোকৌর এ সমর্থন দুই মাসের বেশি সময় ধরে দুজনের মধ্যে বজায় রাখা সতর্ক দূরত্বের অবসান ঘটাল। গত জুনে ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে (দলীয় বাছাইপর্বে) জোহরান সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোকে হারিয়ে সবাইকে চমকে দেন। হোকৌ প্রথমে জোহরানকে সমর্থন জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন।

হোকৌ লিখেছেন, ‘কয়েক মাস ধরে আমি তাঁর সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেছি। আমাদের মধ্যে মতবিরোধ ছিল। কিন্তু আমাদের আলোচনায় আমি এমন একজন নেতাকে দেখেছি, যিনি আমার মতোই এমন একটি নিউইয়র্ক গড়তে চান, যেখানে শিশুরা তাদের এলাকায় নিরাপদে বেড়ে উঠতে পারবে এবং প্রতিটি পরিবারের জন্য সুযোগ হাতের নাগালে থাকবে। আমি এমন একজন নেতাকে দেখেছি, যিনি নিউইয়র্ক নগরকে সাশ্রয়ী করার দিকে মনোনিবেশ করেছেন। তাঁর এ লক্ষ্যকে আমি আন্তরিকভাবে সমর্থন করি।’

জোহরানের নির্বাচনী প্রচারের মূল ভিত্তি ছিল জীবনযাত্রার ব্যয় কমানো এবং প্রগতিশীল বিভিন্ন এজেন্ডা, যেমন বিনা মূল্যে সিটি বাস, সরকারি গ্রোসারি এবং শহরের সবচেয়ে ধনী বাসিন্দাদের ওপর কর আরোপ।

জোহরান মামদানি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির প্রতি সমর্থন জানালেন গভর্নর ক্যাথি হোকৌ