সাগর থেকে ১১ মাঝিমাল্লাসহ দুটি মাছ ধরার ট্রলার ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি
Published: 8th, April 2025 GMT
কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্ট মার্টিন দ্বীপের অদূরে বঙ্গোপসাগর থেকে দুটি মাছ ধরার ট্রলারসহ ১১ জন মাঝিমাল্লাকে করে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। অপহরণের শিকার মাঝিমাল্লাদের নাম জানা যায়নি। তবে ট্রলার দুটির মালিক অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের অদূরে মৌলভীর শীল নামের এলাকায় বাংলাদেশ জলসীমা থেকে মাঝিমাল্লাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয় বলে সেখানে মাছ ধরায় নিয়োজিত জেলেরা জানিয়েছেন।
টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম বলেন, আজ সকালে সেন্ট মার্টিনের অদূরে মাছ শিকারের সময় মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সদস্যরা স্পিডবোটে এসে মাছ শিকারে যাওয়া ট্রলারগুলো ধরে নিয়ে যায়। এর মধ্যে একটি ট্রলারের মালিক আবুল কালাম নিজে। অপরটির মালিক মোহাম্মদ শাওনের আরেক ব্যক্তি। এ ছাড়া আরও দুটি মাছ ধরার ট্রলার ধরে নেওয়া খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে সেগুলোর মালিক ও ট্রলারের নাম জানা যায়নি। ওই দুটি ট্রলারে ১০-১২ জন জেলে থাকতে পারেন।
আবুল কালাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কিছুদিন পরপর আরাকান আর্মি এ ধরনের ঘটনা ঘটনাচ্ছে। ট্রলারমালিক, মাছ ব্যবসায়ীসহ জেলেদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ সমস্যা সমাধানে সরকারের সহযোগিতা চাই আমরা।’
টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুল মান্নান বলেন, ‘সাগর থেকে আবারও মাছ ধরার ট্রলার চারটি ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া আমার এলাকার বেশ কয়েকটি ট্রলারকে ধাওয়া করেছে আরাকান আর্মির সদস্যরা। ট্রলারগুলো ফিরে এলে বিস্তারিত জানা যাবে।’
জানতে চাইলে কোস্টগার্ড টেকনাফ স্টেশনের লে.
এ প্রসঙ্গে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘মাছ ধরার ট্রলারসহ জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করে তাদের ফেরত আনার চেষ্টা চালানো হবে।
এর আগে গত ৫ মার্চ সেন্ট মার্টিন উপকূলে মাছ ধরার সময় ৬টি ট্রলারসহ প্রায় ৫৬ জেলেকে ধরে নিয়ে যান মিয়ানমারের নৌবাহিনীর সদস্যরা। পরদিন তাঁদের ছেড়ে দিলেও ট্রলারের মাছ, তেল, জাল ও খাদ্যসামগ্রী সে দেশের নৌবাহিনীর সদস্যরা লুট করে নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ফিরে আসা জেলেরা।
এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি টেকনাফের নাফ নদী থেকে চারটি মাছ ধরার নৌকাসহ ১৯ বাংলাদেশি জেলেকে অপহরণ করা হয়। এই অপহরণের সঙ্গে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সদস্যরা জড়িত বলে জানা গেছে।
মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের সদস্য আরাকান আর্মি গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে হামলা চালিয়ে রাখাইন রাজ্যের ১৭টি শহরের মধ্যে ১৩ টির নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বলে সে দেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে। গত বছরের ৮ ডিসেম্বর আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপসহ সীমান্তের অধিকাংশ এলাকায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার দাবি করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছিল। রাখাইনে বাংলাদেশ সীমান্তে বর্তমানে অনেকটাই কোণঠাসা মিয়ানমারের সেনা ও নৌবাহিনী। এর পর থেকে নাফ নদীতে তাঁদের জলসীমায় নৌযান চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আর ক ন আর ম র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
পটিয়ায় ব্যবসায়ীকে অপহরণ, দুই ঘণ্টা পর উদ্ধার
চট্টগ্রামের পটিয়া পৌর সদরের মুন্সেফ বাজার এলাকার একটি দোকান থেকে নুরুল আবছার (২৭) নামের এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যায় একদল মুখোশধারী ব্যক্তি। আজ বুধবার সকাল সাতটায় তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পুলিশের তৎপরতায় সকাল সাড়ে ৯টায় তিনি ছাড়া পান।
উদ্ধারের পর পটিয়া থানা প্রাঙ্গণে অপহরণের শিকার নুরুল আবছার প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ব্যাংকে চাকরি করতেন। সম্প্রতি তাঁর চাকরি চলে যায়। এরপর পটিয়া পৌর সদরের মুন্সেফ বাজার এলাকার সাহিত্য বিশারদ সড়কে মুরগির দোকান দেন। প্রতিদিনের মতো আজ সকালে দোকান খোলেন তিনি। এ সময় তিন থেকে চারজন মুখোশধারী লোক ধারালো অস্ত্রের মুখে তাঁকে ধরে অটোরিকশায় উঠিয়ে নিয়ে যায়। তারা তাঁর পকেটে থাকা ৪০ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। পরে আরও ৪ লাখ টাকা দাবি করে, পরে ১৭ লাখ এনে দিতে বলেন। তাঁকে চন্দ্র কালারপোল নামের নির্জন এলাকায় নিয়ে অপহরণকারীরা তাঁকে মারধরের পাশাপাশি ছুরিকাঘাতও করেন।
পটিয়া থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) প্রদীপ চন্দ্র দে প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত তাঁকে উদ্ধারের তৎপরতায় নামে। পরে চন্দ্র কালারপোল এলাকায় পুলিশ গেলে উপস্থিতি টের পেয়ে অপহরণকারীরা পালিয়ে যায়।
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান জানান, ব্যবসায়ীকে অপহরণ করার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরে তাঁকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।