সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ভাইকে দেখতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন বাবা-ছেলে
Published: 8th, April 2025 GMT
ফরিদপুরের নগরকান্দায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত বড় ভাইকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন বাবা-ছেলে। এ ঘটনায় আহত স্ত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কে সদর উপজেলার বাখুন্ডা নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জোয়াদ সরদার (৬৫) ও তার ছেলে ইমান সরদার (৩৫)। তাদের বাড়ি নগরকান্দা উপজেলার কোদালিয়া শহীদনগর ইউনিয়নের শেখর কান্দি গ্রামে।
বিকেলে শেখরকান্দি গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, মরদেহ দুটি বাড়িতে পৌঁছানোর পর স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সাত ভাইয়ের মধ্যে জোয়াদ সরদার মেঝো।
নিহত জোয়াদের ছোট ভাই আবেদ আলী সরদার জানান, ‘বড় ভাই চান মিয়া সরদার ঈদের পরের দিন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হন। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন। তাকে দেখতে আজ দুপুরে ভাই জোয়াদ সরদার, ভাতিজা ইমান আলী সরদার ও ভাবী রাবেয়া বেগম ফরিদপুরের উদ্দেশে বাসে রওনা হন। পথে বাসটি দুর্ঘটনায় পড়ে। এতে ভাই ও ভাতিজা নিহত হয়। আহত ভাবীকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
একই দুর্ঘটনায় নগরকান্দার আরও দুজন নিহত হন। তারা হলেন- উপজেলার সালমা ইউনিয়নের কাঠিয়া কালীবাড়ি গ্রামের রাজিব খানের স্ত্রী দীপা খান (৩৪) ও সন্তোষী গ্রামের বলরাম সরকারের স্ত্রী ভারতী সরকার (৪০)।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন ন হত দ র ঘটন য সরদ র
এছাড়াও পড়ুন:
ভুয়া র্যাবকে ধাওয়া দিল আসল র্যাব, পথে দুই পক্ষকেই পেটাল জনতা
জোরে হর্ন দিতে দিতে দ্রুতগতিতে ছুটছিল একটি মাইক্রোবাস। সেটির কিছুটা পেছনে ছুটছিল আরেকটি মাইক্রোবাস। বিষয়টিকে অস্বাভাবিক মনে হওয়ায় মহাসড়কে গাছ ফেলে প্রথম মাইক্রোবাসটিকে থামান স্থানীয় লোকজন। গাড়িতে থাকা ব্যক্তিরা নিজেদের র্যাব বলে পরিচয় দেন। তবে তাঁদের কারও গায়ে র্যাবের পোশাক ছিল না। সন্দেহ হয় স্থানীয় লোকজনের। ওই ব্যক্তিরা পালাতে চেষ্টা করলে তাঁদের আটকে মারধর শুরু করেন স্থানীয় লোকজন।
এমন সময়ে সেখানে পৌঁছে যায় দ্বিতীয় মাইক্রোবাসটি। এতে ছিলেন র্যাবের প্রকৃত সদস্যরাই। যদিও কয়েকজনের গায়ে ইউনিফর্ম ছিল না। তাঁরা নিজেদের পরিচয় দিয়ে স্থানীয় লোকজনের হাতে আটক ব্যক্তিদের উদ্ধারের চেষ্টা করেন। তবে স্থানীয় লোকজনের রোষের মুখে পড়ে তাঁরাও পিটুনির শিকার হন। একপর্যায়ে স্থানীয় থানা থেকে পুলিশ ও র্যাবের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লোকজনকে শান্ত করে এই দুই পক্ষকেই উদ্ধার করেন।
ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার চর যশোরদী ইউনিয়নের জয় বাংলার মোড় এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে; গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপপরিদর্শক (এসআই) আমীরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, জনতার হাত থেকে র্যাব ও ভুয়া র্যাব সদস্যদের উদ্ধার করে নগরকান্দা থানায় নিয়ে আসা হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে তাঁদের নিয়ে ফরিদপুর র্যাব ক্যাম্পের সদস্যরা মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর থানার উদ্দেশে যান।
মারধরের শিকার ভুয়া র্যাব পরিচয়দানকারী ব্যক্তিরা হলেন শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার ছাব্বিশপাড়া গ্রামের স্বপন খান (৪৫), চাঁদপুর সদরের মদনা গ্রামের মিন্টু গাজী (৪৫), গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কুনসিবাড়ি গ্রামের মো. সাইফুল ইসলাম (৩০), মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার আন্ডারচর এলাকার মো. জামিল (৩২) এবং ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার হিদাডাঙ্গা গ্রামের দিদার (২৯)। তাঁদের থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে র্যাব-১০–এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, আসামিরা দুজন সোনা ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ডাকাতি করেছিলেন।
র্যাব-১০ ফরিদপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার তারিকুল ইসলাম বলেন, র্যাব-১০–এর হেডকোয়ার্টার থেকে একটি টিম ডাকাত দলকে ধাওয়া করে আসছিল। স্থানীয় লোকজন ভুল বুঝে উভয় পক্ষের ওপর চড়াও হন। কিছু র্যাবের সদস্যরা সাদাপোশাকে থাকায় উত্তেজিত লোকজন তাঁদের তাৎক্ষণিকভাবে প্রকৃত র্যাব বলে চিনতে ভুল করেন।
র্যাব-১০ মুন্সিগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার আনোয়ার হোসেন আজ মঙ্গলবার বেলা পৌনে একটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ভুয়া র্যাবের দলকে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর থেকে ধাওয়া করে নিয়ে যাচ্ছিলাম। তারা পদ্মা সেতু ও এক্সপ্রেসওয়ের টোল দিয়ে বের হয়ে যেতে পারলেও শেষ পর্যন্ত তাদের ধরা গেছে।’ নিজেরাও মারধরের শিকার হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জনগণ যখন ভুয়া র্যাব পরিচয়কারীদের মারপিট করছিলেন, তখন তাঁদের যাতে মেরে না ফেলেন, এই আশঙ্কায় আমরা জনগণের পিটুনি থেকে তাঁদের বাঁচানোর চেষ্টা করি। তবে প্রথম পর্যায়ে জনগণ আমাদেরও ভুয়া র্যাব মনে করেছিলেন। এ কারণে আমাদের সঙ্গে কিছু ঘটনা ঘটেছিল, তবে তা আমলযোগ্য নয়।’