উপকূলীয় শহর পরিবেশগত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় (সিটিইআইপি) নির্মিত হয়েছিল পিরোজপুর মাল্টিপারপাস সুপারমার্কেট। ২০২১ সালে কাজ শেষ হওয়ার পর ২০২৪ সালের শেষের দিকে বরাদ্দ হয় ১৪টি দোকান। চার বছরে এসেও এ মার্কেটটি কোনো কাজে আসছে না। দু-একটি দোকান নামমাত্র চালু দেখা যায়। বাকি কক্ষগুলো অন্য কাজে ব্যবহার করা হয়। দোকান মালিকদের ভাষ্য, নকশাগত ত্রুটির কারণে মার্কেটটির সুফল পাচ্ছেন না পৌরবাসী।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পিরোজপুরের পুরাতন পৌরসভা সড়কে ২০২১ সালে মাল্টিপারপাস সুপারমার্কেটের কাজ শেষ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)। এতে খরচ হয় পাঁচ কোটি ৮০ লাখ টাকা। সিটিইআইপি প্রকল্পের আওতায় এতে অর্থসহায়তা দেয় দাতা সংস্থা এশীয় ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)। এ মার্কেটের জমিতে আগে ছিল পুরাতন পৌর ভবন। সেটি ভেঙে মাল্টিপারপাস সুপারমার্কেট নির্মিত হয়। 

সরেজমিনে মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, ভবনটি রক্ষণাবেক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেই। প্রস্রাব-পায়খানা ও ময়লার কারণে ভেতরের বেশির ভাগ কক্ষে টেকাই দায়। সাবেক এক যুবলীগ নেতার নামে বরাদ্দ দুটি কক্ষ দখল করে নিজ কার্যালয়ে রূপান্তরিত করেছেন এক বিএনপি কর্মী। 

হোমিও চিকিৎসক মো.

শাহজাহান বসছেন নিজ ভাইয়ের নামে নেওয়া একটি দোকানে। তিনি বলেন, নিজের নামেও একটি দোকান বরাদ্দ নিয়েছিলেন। প্রতিবন্ধকতার কারণে সেটি বন্ধ অবস্থায় আছে। মার্কেটটির অবস্থা খুবই নাজুক জানিয়ে তিনি বলেন, আদতে এটি পুরোপুরিভাবে চালু হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এটি রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তায় কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না পৌর কর্তৃপক্ষ। দ্রুত সময়ের মধ্যে নিরাপত্তা প্রহরী নিয়োগের দাবি জানান তিনি।

মার্কেটের সামনের সড়কে স্থাপন করা হয়েছে ইজিবাইক স্ট্যান্ড। স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, এখানকার অধিকাংশ কক্ষ গুদাম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। যে কারণে মার্কেটের মূল চরিত্র ও অবয়ব দৃশ্যমান নয়। তাই এলাকাবাসীরও এ মার্কেট নিয়ে কোনো আগ্রহ নেই। 

পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর মো. আব্দুল হাই হাওলাদারের দাবি, একরকম বাধ্য হয়ে তারা এ মার্কেটটি নির্মাণে সম্মতি দিয়েছিলেন। যদিও পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি আব্দুস ছালাম বাতেনের ভাষ্য, বিশেষ মহলের স্বার্থরক্ষায় মার্কেটটি নির্মাণ করা হয়েছে। এতে বিদেশি সংস্থার টাকার অপচয় হয়েছে। এটি এখন গুদাম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। মার্কেটের মূল উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হয়নি। মার্কেট নির্মাণের পরে দোকান বরাদ্দ নিয়ে স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতি হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, পিরোজপুরের একটি প্রভাবশালী মহল নিজস্ব লোকজনকে দোকান বরাদ্দ দিয়েছিলেন। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এলজিইডি যখন উপকূলীয় শহর পরিবেশগত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বহুমুখী মার্কেটটি নির্মাণ শুরু করে, তখনই নকশাগত ত্রুটির বিষয়টি সামনে এসেছিল। তবে বিদেশি সহায়তায় নির্মাণের কারণে পৌরসভার তৎকালীন মেয়র, প্রকৌশল বিভাগ ও স্থানীয় ব্যবসায়ী মহলের কোনো আপত্তি গ্রাহ্য করা হয়নি। 

পিরোজপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকোশলী ধ্রুব লাল দত্ত বণিক বলেন, সুপারমার্কেটটি ছয়তলা ভিত্তির ওপর নির্মিত। একতলার ১৪টি দোকান নির্মাণের পর আগ্রহী ব্যক্তিরা দরপত্রের মাধ্যমে বন্দোবস্ত পান। এ জন্য তাদের জামানত দিতে হয়েছে দুই লাখ ৫০ হাজার থেকে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত। মাসিক ভাড়া ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা। ৬ মাস আগে দোকানগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রসভ র বর দ দ

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা বিভিন্ন দলের

ইরানে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দল। অবিলম্বে এই হামলা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে দুনিয়ার শান্তিকামী দেশ ও বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তারা। গতকাল রোববার পৃথক বিবৃতিতে এসব দলের নেতারা এই দাবি জানান। তারা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ-ইহুদিবাদী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ ও ইরানের জনগণের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ বকুল এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান সময়ের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তার নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংকট সৃষ্টি করে রেখেছে। একতরফা যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ইরানের রাজনৈতিক সামরিক অগ্রযাত্রাকে রুখতে চেষ্টা করছে। যুদ্ধবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে এখনই থামতে হবে। অন্যায়ভাবে ইরানের শিশু-নারী ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর বোমা ও মিসাইল হামলা বন্ধ করতে হবে। 

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক পৃথক বিবৃতিতে বলেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অঞ্চল লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বেপরোয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা রাষ্ট্রীয় ভয়ানক সন্ত্রাসী তৎপরতা। পরিকল্পিত এই হামলা আন্তর্জাতিক সব ধরনের বিধিবিধানকে  বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল। জাতিসংঘকেও এরা পুরোপুরি ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ