রাজবাড়ীতে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে পৌরসভার কর্মচারীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ
Published: 10th, April 2025 GMT
রাজবাড়ী পৌরসভার এক কর্মচারীকে লাঞ্ছিতের অভিযোগ উঠেছে সাবেক মেয়র ও বিএনপি নেতা তোফাজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তার কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই কর্মচারী।
অভিযোগকারীর নাম মোকলেছুর রহমান। তিনি রাজবাড়ী পৌরসভার পৌরসভার হিসাবরক্ষক হিসেবে কর্মরত। অন্যদিকে অভিযুক্ত তোফাজ্জল হোসেন রাজবাড়ী পৌর বিএনপির সভাপতি ও মোকলেছুরের মামাতো ভাই।
এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় পৌরসভা চত্বরে প্রতিবাদ সভা করেছে রাজবাড়ী পৌর কর্মচারী সংসদ। তাঁরা তোফাজ্জল হোসেনের বিচার দাবি করেছেন।
মোকলেছুর রহমান বলেন, ‘গতকাল বেলা ১১টার দিকে আমি নিজ কক্ষে কাজ করছিলাম। এ সময় তোফাজ্জল হোসেন পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা তায়েব আলীর কক্ষে ঢুকে আমাকে ডেকে পাঠান। কক্ষটিতে যাওয়া মাত্রই তিনি বেশ উত্তেজিত হন। একপর্যায়ে আমার হাত ধরে টানাটানি করে বলতে থাকেন, “চল তোকে ডিসির (জেলা প্রশাসক) কাছে যেতে হবে।” কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার গালে চড় মারেন তিনি। এ সময় পৌর নির্বাহী কর্মকর্তাসহ অন্য কর্মচারীরা তাঁকে থামিয়ে আমাকে নিজ কক্ষে নিয়ে আসেন।’
মোকলেছুর বলেন, ‘তিনি (তোফাজ্জল) কেন আমার গায়ে হাত তুলেছেন এবং গালমন্দ করছিলেন, জানি না। আমি এর বিচার চাই।’
পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা তায়েব আলী বলেন, ‘সাবেক মেয়র তোফাজ্জল আমার কক্ষে প্রবেশ করার আগে তাঁদের মধ্যে মুঠোফোনে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। পৌরসভার আগের কোনো বিষয় নিয়ে মোকলেছুর রহমানের ওপর তিনি হয়তো ক্ষিপ্ত ছিলেন।’
এসব অভিযোগের বিষয়ে তোফাজ্জল হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ‘মোকলেছুর রহমান সম্পর্কে আমার ফুপাতো ছোট ভাই। অন্যায় করলে একটু শাসন করতেই পারি। পারিবারিক বিষয় নিয়ে আমার সঙ্গে কথা–কাটাকাটি হয়েছে। যেহেতু আমি পৌরসভার মেয়র ছিলাম। সেখানে দেখা হলে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে একটা চড় মেরেছি।’
লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম কল ছ র র কর মকর ত প রসভ র
এছাড়াও পড়ুন:
ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতি মেয়ে
ফরিদপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা।গত মঙ্গলবার এনসিপির সদস্যসচিব আক্তার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ওই চিঠিতে ফরিদপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক করা হয়েছে মো. আব্দিুর রহমানকে এবং সংগঠক করা হয়েছে মো. রাকিব হোসেনকে।
এছাড়া ফরিদপুর অঞ্চলের পাঁচটি জেলা, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী জেলার দু’জন করে ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফরিদপুর জেলার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে যে দু’জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের একজন হলেন সৈয়দা নীলিমা দোলা। তিনি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে এবং জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোহাম্মদ নাসিরের ভাগনি। দোলার বাবা সৈয়দ গোলাম দস্তগীর পেশায় ব্যবসায়ী।
সৈয়দা নীলিমা ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগীত বিভাগে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি কিছুদিন একটি মোবাইল ফোন কোম্পানিতে চাকরি করেন। বর্তমানে ‘সিনে কার্টেল’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী।
এ বিষয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা বলেন, ‘আমার পরিবারের সদস্যদের আওয়ামী রাজনীতি করা সংক্রান্ত কিছু পোস্ট আপনাদের সামনে আসতে পারে। আমি নিজে এর একটা ব্যাখ্যা রাজপথের সহযোদ্ধাদের দিয়ে রাখতে চাই। আমি ১০ বছর ধরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করছি। নো মেট্রো অন ডিইউ মুভমেন্ট, রামপাল বিরোধী আন্দোলন, ডিএসএ বাতিলের আন্দোলন, সুফিয়া কামাল হলকে ছাত্রলীগ মুক্ত করাসহ অন্যান্য সকল আন্দোলনে আমি পরিচিত মুখ। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমার লেখালেখিও পুরনো। ২০১২ সালে পরিবার ছাড়ার পর রাজপথই আমার আসল পরিবার। জুলাইয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অন্যতম মামলা তাহির জামান প্রিয় হত্যা মামলার একজন প্রত্যক্ষদর্শী আমি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরাসরি ছাত্রলীগ করে অনেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। আমি কখনও ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না, তাই আমার নাগরিক কমিটির সদস্য হতে বাধা কোথায়? এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা জেনে-বুঝে এবং আমি ‘লিটমাস’ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরই আমাকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ নেত্রীর মেয়ে দায়িত্ব পেয়েছেন জেলার এনসিপি কমিটি গঠনে-এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব সোহেল রানা বলেন, ‘তার (সৈয়দা নীলিমা) পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড আওয়ামী লীগ। আমরা দেখেছি, গত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে তার মামা গোলাম নাসির কিভাবে আমাদের ওপর নির্বিচার গুলি ছুড়েছিল। তার মায়ের কর্মকাণ্ডও আমাদের অজানা নয়।’
সৈয়দা নীলিমা দোলার সঙ্গে আমাদের পরিচয় পর্যন্ত নেই মন্তব্য করে সোহেল রানা বলেন, ‘আসলে দায়িত্ব দেওয়ার আগে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে নেওয়া হলে ভাল হতো। যাচাই-বাছাই করা হলে এ রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।’