নোয়াখালীর জেলা শহরে বিএনপির এক পক্ষের মানবন্ধনে অপর একটি পক্ষ বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত পাঁচ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। 

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) নোয়াখালী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মানবন্ধনে এই ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে আহতরা হলেন, সুবর্ণচর উপজেলার চরজব্বর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি কামাল উদ্দিন (৫৫), স্থানীয় যুবদল কর্মী রাকিব জিয়া (২৭), স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সুজন মিয়া (২৬), যুবদল নেতা মো.

শরীফ (৩৫) ও সুবর্ণচর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আবুল খায়ের আকাশ (৩৮)।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী বক্তারা বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলার বাদী সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক। তার বড় ভাই চরজব্বর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল্যাহ মিয়া উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা। তিনি আওয়ামী লীগের ক্ষমতার সময় স্থানীয় এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর সঙ্গে আতাত করে বিএনপির সকল আন্দোলন-সংগ্রাম থকে নিজেকে আড়ালে রেখে গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগের সকল সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন। 

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আবদুল্যাহ মিয়া এলাকায় বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে নোয়াখালী পৌর যুবদল নেতা জাকির হোসেনের চার একরের একটি মৎস্য খামার, স্থানীয় ব্যবসায়ী সাহাব উদ্দিনের তিন একরের একটি মৎস্য খামার, নাছের আহাম্মদের দুই একর জমি, আবদুল হাইয়ের দুই একর জমি, ইলিয়াছ মিয়ার দুই একর জমিসহ ১৬ জন ব্যক্তির প্রায় ৩০ একর জমি জোরপূর্বক দখল, খামারের মাছ লুট, চাঁদা আদায়সহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন।

বক্তারা আরো বলেন, আবদুল্যাহ মিয়া ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর উদ্যোগে আজ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধনে দাঁড়ান এলাকার কয়েকশ’ নারী-পুরুষ। এসময় আবদুল্যাহ মিয়ার অনুসারী সুবর্ণচর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আবুল খায়ের আকাশ মানববন্ধনে বাধা দেয়। এতে মানববন্ধনকারীরা তাকে প্রতিহত করলে আকাশ ফোন দিয়ে তার লোকজন জড়ো করে পুনরায় মানববন্ধনকারীদের ওপর হামলা করে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে পাঁচ জন আহত হয়।

পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। আহদের মধ্যে তিন জনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সুবর্ণচর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল খায়ের আকাশ বলেন, “মানববন্ধনকারীরা পরিকল্পিতভাবে নিজেদের মানববন্ধনে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে আমাদেরকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার ষড়যন্ত্র করছে।”

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল্যাহ মিয়া অভিযোগের বিষয়ে বলেন, “স্থানীয় জনবিচ্ছিন্ন কিছু লোক আমাকে রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করার জন্য আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি দলের নাম ব্যবহার করে জমি দখল তো দূরের কথা, কারো সঙ্গে কখনো খারাপ আচরণও করিনি।”

সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম বলেন, “খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তীতে এই বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ঢাকা/সুজন/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আবদ ল য হ ম য় ব এনপ র আওয় ম য বদল

এছাড়াও পড়ুন:

চামড়াশিল্প ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে

কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে পতিত ফ্যাসিস্ট আমলের পুরোনো চক্র ও সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলন। এই সিন্ডিকেট ও চামড়াশিল্প ধ্বংসের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংগঠনটি আয়োজিত ‘চামড়া শিল্পের নৈরাজ্য ও সিন্ডিকেট রুখো’ শীর্ষক মানববন্ধনে এসব কথা বলা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক মির্জা শরিফুল আলম। সভায় বক্তব্য দেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান, কলামিস্ট মীর আবদুল আলীম, রাজনীতিবিদ নুরুজ্জামান হীরা, মানবাধিকারকর্মী আব্দুল্লাহ আল-মামুন প্রমুখ।
কয়েক বছর ধরে কাঁচাচামড়ার দাম কমছে। দাম না পেয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া নদী বা খালে ফেলে দিয়েছেন কিংবা মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন– এমন ঘটনাও ঘটছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। চলতি বছর ৮৫ থেকে ৯০ লাখ পশুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ট্যানারি মালিকদের। এর ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ সংগ্রহ হয় কোরবানির সময়। 

জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান বলেন, এবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। কিছু ক্ষেত্রে বর্গফুটের হিসাবে চামড়ার দাম আরও কম পড়েছে। কোরবানিদাতাদের থেকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকায় গরুর চামড়া কিনেছেন। সেসব চামড়া আড়তদার ও ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করেছেন ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে চামড়া সংগ্রহ করলেও ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। সিন্ডিকেটের কারণে চামড়ার দাম পড়ে গেছে তলানিতে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও বেশির ভাগ ছাগলের চামড়া নষ্ট হয়েছে। বিদেশি চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের ফ্যাসিস্ট সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। দেশে ও বিশ্ববাজারে চামড়াজাত পণ্যের দাম আকাশচুম্বী। অথচ কোরবানির চামড়া শিল্প নিয়ে গভীর চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র চলছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, বিদেশি চক্রান্তে দেশের সোনালি আঁশখ্যাত পাট শিল্পকে সুকৌশলে ধ্বংস করা হয়েছে। এবার আরেক সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্পকে শেষ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। গত বছরের মতো এবারও কম দামে সব ধরনের চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে। এতে করে গরিব-অসহায় মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাগুরছড়া ট্র্যাজেডির ২৮তম বার্ষিকী পালিত
  • রূপগঞ্জে মামুন হত্যা : মাহবুবের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগে মানববন্ধন
  • সাইক্লিস্ট হত্যার বিচার দাবিতে রাজধানীতে মানববন্ধন
  • ‘চট্টগ্রামে সাইক্লিস্ট ওসমানের মৃত্যু দুর্ঘটনা নয়, হত্যা’
  •  সোনারগাঁয়ে প্রাচীন স্থাপত্যকীর্তি কোম্পানিকা সেতু রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন
  • রাজশাহীতে বিএনপি নেতাকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল
  • সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি দুদিন পর দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে
  • কাছারিবাড়িতে হামলা ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব থেকে, রবীন্দ্রস্মৃতিবিজড়িত  নিদর্শন নষ্ট হয়নি: সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়
  • চামড়াশিল্প ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে