নোয়াখালীতে বিএনপির এক পক্ষের মানববন্ধনে অপর পক্ষের হামলা
Published: 10th, April 2025 GMT
নোয়াখালীর জেলা শহরে বিএনপির এক পক্ষের মানবন্ধনে অপর একটি পক্ষ বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত পাঁচ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) নোয়াখালী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মানবন্ধনে এই ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে আহতরা হলেন, সুবর্ণচর উপজেলার চরজব্বর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি কামাল উদ্দিন (৫৫), স্থানীয় যুবদল কর্মী রাকিব জিয়া (২৭), স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সুজন মিয়া (২৬), যুবদল নেতা মো.
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী বক্তারা বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলার বাদী সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক। তার বড় ভাই চরজব্বর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল্যাহ মিয়া উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা। তিনি আওয়ামী লীগের ক্ষমতার সময় স্থানীয় এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর সঙ্গে আতাত করে বিএনপির সকল আন্দোলন-সংগ্রাম থকে নিজেকে আড়ালে রেখে গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগের সকল সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আবদুল্যাহ মিয়া এলাকায় বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে নোয়াখালী পৌর যুবদল নেতা জাকির হোসেনের চার একরের একটি মৎস্য খামার, স্থানীয় ব্যবসায়ী সাহাব উদ্দিনের তিন একরের একটি মৎস্য খামার, নাছের আহাম্মদের দুই একর জমি, আবদুল হাইয়ের দুই একর জমি, ইলিয়াছ মিয়ার দুই একর জমিসহ ১৬ জন ব্যক্তির প্রায় ৩০ একর জমি জোরপূর্বক দখল, খামারের মাছ লুট, চাঁদা আদায়সহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন।
বক্তারা আরো বলেন, আবদুল্যাহ মিয়া ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর উদ্যোগে আজ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধনে দাঁড়ান এলাকার কয়েকশ’ নারী-পুরুষ। এসময় আবদুল্যাহ মিয়ার অনুসারী সুবর্ণচর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আবুল খায়ের আকাশ মানববন্ধনে বাধা দেয়। এতে মানববন্ধনকারীরা তাকে প্রতিহত করলে আকাশ ফোন দিয়ে তার লোকজন জড়ো করে পুনরায় মানববন্ধনকারীদের ওপর হামলা করে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে পাঁচ জন আহত হয়।
পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। আহদের মধ্যে তিন জনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সুবর্ণচর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল খায়ের আকাশ বলেন, “মানববন্ধনকারীরা পরিকল্পিতভাবে নিজেদের মানববন্ধনে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে আমাদেরকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার ষড়যন্ত্র করছে।”
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল্যাহ মিয়া অভিযোগের বিষয়ে বলেন, “স্থানীয় জনবিচ্ছিন্ন কিছু লোক আমাকে রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করার জন্য আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি দলের নাম ব্যবহার করে জমি দখল তো দূরের কথা, কারো সঙ্গে কখনো খারাপ আচরণও করিনি।”
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম বলেন, “খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তীতে এই বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঢাকা/সুজন/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আবদ ল য হ ম য় ব এনপ র আওয় ম য বদল
এছাড়াও পড়ুন:
শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
মাদারীপুরের শিবচরে জামিনে থাকা আসামি রাকিব মাদবরকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বাদী হয়ে শিবচর থানায় মামলাটি করেন।
এর আগে গত রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়কে একটি ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাকিব শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
দুই দিন পার হয়ে গেলেও এই ঘটনায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিবচর পৌর বাজারের সদর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একটা সভ্য স্বাধীন দেশে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।
মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বলেন, ‘রাকিবরে এতগুলো মানুষের সামনে কুপাইয়া মাইরা ফালাইলো। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসলো না। যারা খুন করছে, তারা রাকিবের পূর্বশত্রু। আবুল কালাম সরদারের নির্দেশে তার লোকজন এই খুন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় কোনো আসামি এখন অবধি গ্রেপ্তার করে নাই। আসামিগো গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারের লোকজনের সঙ্গে নিহত রাকিব মাদবরের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ মে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ নিহত হন। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি রাকিব সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে এলাকায় আসেন। রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের একটি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
আরও পড়ুনশিবচরে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫