গাজীপুরের কালিয়াকৈর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জোড়াপাম্প এলাকার বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম। তাঁর এলাকার বাড়িতে জমা হওয়া ময়লা-আবর্জনা আগে পৌরসভার লোকজন প্রতিদিন ভ্যানে করে নিয়ে যেতেন। কিন্তু এখন এক সপ্তাহ পর পর ময়লা নেয়। এতে দুর্গন্ধে বাড়িতে থাকা যায় না জানিয়ে তিনি বলছিলেন, পথে মুখ রুমাল দিয়ে ঢেকে চলাচল করতে হয়। আগে মশা নিধনের জন্য ওষুধ ছিটালেও এখন তাও বন্ধ রয়েছে।
পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড শিল্পাঞ্চল হওয়ায় এ এলাকায় প্রায় ১০ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। কিন্তু বিভিন্ন ধরনের নাগরিক সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সবশেষ কয়েক মাসে পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়েছে। বিশেষ করে তিনটি ওয়ার্ডে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। বাড়ির ময়লা বিভিন্ন স্থানে সড়কের পাশে ফেলে রাখা হলেও কয়েক দিন পর পর তা অপসারণ করছেন কর্মীরা। যারা এ কাজে জড়িত, তাদেরও মাসে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা করে দিতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, পৌরসভার নির্ধারিত ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় মহাসড়কের পাশে কিংবা সরকারি বনের জমিতে এমনকি পানি নিষ্কাশনের নালার ওপর এসব ফেলে রাখছেন। এতে পথচারীদের দুর্ভোগ বেড়েছে। বিষয়টি পৌর কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন সময়ে জানালেও ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় সমস্যার সমাধান হয়নি। এতে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, বাড়ছে রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি।
আগে ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের খালি জায়গায় ময়লা-আবর্জনা ফেলা হতো বলে জানান ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো.
তিনটি ওয়ার্ডের কয়েকটি স্থানে সরেজমিন দেখা গেছে, যত্রতত্র ফেলে রাখা হয়েছে ময়লা-আবর্জনা। রয়েছে মাছিসহ বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড়ের আনাগোনা। পচা দুর্গন্ধে ভরে আছে আশপাশ। এসব এলাকা দিয়ে যাতায়াত করাই দুষ্কর। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের হরিণহাটি এলাকার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উত্তরে ফেলে রাখা হয়েছে বাসাবাড়ির ময়লা। এ সড়ক দিয়ে বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের হরিণহাটি এলাকার বাসিন্দা বিএনপি নেতা রাজু আহমেদ। তিনি বলেন, ঠিকমতো ময়লা পরিষ্কার না করায় পোকামাকড়ের উপদ্রবের পাশাপাশি দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে ভাড়াটিয়া থাকতে চান না বাসায়। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব চান্দরা জালালগেইট রমেসের টেক এলাকার ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম ও তালেব মিয়ার ভাষ্য, সড়কের পাশে পৌরসভা বড় ডাস্টবিন তৈরি করেছে। প্রতিদিন ময়লা অপসারণের কথা থাকলেও সপ্তাহ পার হলেও নেয় না। দুর্গন্ধের কারণে দোকানে ক্রেতা আসতে চান না।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর পৌরসভায় প্রশাসক ও ওয়ার্ডে কাউন্সিলরের পরিবর্তে একজন সরকারি কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, আগে প্রতিদিন ময়লা কয়েকটি স্থানে রাখা হলে সকালে কর্তৃপক্ষ তা অপসারণ করত। এখন মহাসড়কের পাশে কিংবা বাড়ির আশপাশে দিনের পর দিন পড়ে থাকে। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সারোয়ার হোসেন পূর্বচান্দরা এলাকায় ময়লার মিনি ডাম্পিং করেছিলেন। সেখান থেকেও সপ্তাহে একদিনও ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করা হচ্ছে না।
৯ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বপাড়া, পশ্চিমপাড়া ও আহাম্মদনগরে যেখানে সেখানে ময়লার স্তূপ রয়েছে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, নির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলর না থাকায় কাউকে কিছু বলাও যায় না। ওয়ার্ডে একজন সরকারি কর্মকর্তা দায়িত্বে থাকলেও তাদের সার্কেল অফিসে পাওয়া যায় না।
ওয়ার্ডের বাসিন্দা সফিকুল ইসলাম ও সিদ্দিকুর হোসেন বলছিলেন, পৌরসভার নাগরিক হিসেবে সব ধরনের সুবিধা পাওয়ার কথা থাকলেও তা তারা পাচ্ছেন না। নালা ময়লায় ভরে গেলেও পরিষ্কার করার লোক নেই।
৯ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বে রয়েছেন উপজেলা এলজিইডি অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুল বাছেদ। তিনি বলেন, নতুনভাবে টেন্ডার পাওয়া ব্যক্তি আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে পৌরসভার গাড়ি দিয়ে এনে অস্থায়ী ভাগাড়ে রাখবেন। আগের লোক কাজ না করার কারণে হয়তো নাগরিকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
কালিয়াকৈর পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. জাহিদুল আলম তালুকদার বলেন, মাঝে একটু সমস্যা থাকায় নিয়মিত ময়লা সরানো যায়নি। ডাম্পিংয়ের জন্য একটি জমি অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ময়ল র স ত প সড়ক র প শ এল ক র ব প রসভ র র ময়ল সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে বন্দুক হামলায় তিন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরো দুই পুলিশ।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ২টার কিছু পর এক পারিবারিক বিরোধের তদন্তে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে পুলিশ। খবর বিবিসির।
আরো পড়ুন:
শেরপুরে পুলিশের উপর হামলা: থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ৪
ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ ও থানায় হামলা, ভাঙচুর-আগুন
পেনসিলভানিয়া স্টেট পুলিশের কমিশনার কর্নেল ক্রিস্টোফার প্যারিস জানান, অভিযুক্ত বন্দুকধারী পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে।
গুলির ঘটনার পর ইয়র্ক কাউন্টির নর্থ কোডোরাস টাউনশিপের স্প্রিং গ্রোভ এলাকার একটি স্কুল জেলা সাময়িকভাবে ‘শেল্টার ইন প্লেস’ ঘোষণা করে। তবে পরে জানানো হয়, স্কুল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জনসাধারণের জন্য বর্তমানে কোনো সক্রিয় হুমকি নেই। এ ঘটনা ঘটে ফিলাডেলফিয়া থেকে প্রায় ১০০ মাইল (১৬০ কিমি) পূর্বে অবস্থিত ইয়র্ক কাউন্টির এক গ্রামীণ এলাকায়।
তারা বলছে, আগের দিন শুরু হওয়া একটি তদন্তের অংশ হিসেবে কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন। তবে তদন্ত চলমান থাকায় বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করা হয়নি।
পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জোশ শাপিরো বিকেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বলেন, “আমরা তিনজন মহামূল্যবান প্রাণ হারালাম, যারা এই দেশকে সেবা দিয়েছেন। এই ধরনের সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সমাজ হিসেবে আমাদের আরো ভালো করতে হবে।”
নিহত তিন কর্মকর্তার সম্মানে গভর্নর শাপিরো রাজ্যের সব সরকারি ভবন ও স্থাপনায় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেন।
ঢাকা/ইভা