Samakal:
2025-08-01@21:55:07 GMT

ময়লায় ভরে যাচ্ছে পৌর এলাকা

Published: 10th, April 2025 GMT

ময়লায় ভরে যাচ্ছে পৌর এলাকা

গাজীপুরের কালিয়াকৈর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জোড়াপাম্প এলাকার বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম। তাঁর এলাকার বাড়িতে জমা হওয়া ময়লা-আবর্জনা আগে পৌরসভার লোকজন প্রতিদিন ভ্যানে করে নিয়ে যেতেন। কিন্তু এখন এক সপ্তাহ পর পর ময়লা নেয়। এতে দুর্গন্ধে বাড়িতে থাকা যায় না জানিয়ে তিনি বলছিলেন, পথে মুখ রুমাল দিয়ে ঢেকে চলাচল করতে হয়। আগে মশা নিধনের জন্য ওষুধ ছিটালেও এখন তাও বন্ধ রয়েছে।

পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড শিল্পাঞ্চল হওয়ায় এ এলাকায় প্রায় ১০ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। কিন্তু বিভিন্ন ধরনের নাগরিক সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সবশেষ কয়েক মাসে পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়েছে। বিশেষ করে তিনটি ওয়ার্ডে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। বাড়ির ময়লা বিভিন্ন স্থানে সড়কের পাশে ফেলে রাখা হলেও কয়েক দিন পর পর তা অপসারণ করছেন কর্মীরা। যারা এ কাজে জড়িত, তাদেরও মাসে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা করে দিতে হচ্ছে। 
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, পৌরসভার নির্ধারিত ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় মহাসড়কের পাশে কিংবা সরকারি বনের জমিতে এমনকি পানি নিষ্কাশনের নালার ওপর এসব ফেলে রাখছেন। এতে পথচারীদের দুর্ভোগ বেড়েছে। বিষয়টি পৌর কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন সময়ে জানালেও ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় সমস্যার সমাধান হয়নি। এতে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, বাড়ছে রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি।
আগে ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের খালি জায়গায় ময়লা-আবর্জনা ফেলা হতো বলে জানান ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো.

সারোয়ার হোসেন আকুল। তাঁর ভাষ্য, এখন কর্তৃপক্ষ সেখানে ফেলতে না দেওয়ায় কয়েকটি ওয়ার্ডের ময়লা পানি নিষ্কাশনের খালে ফেলছে। এতে খালটি ভরাট হওয়ায় বর্ষায় মৌসুমে জলাবদ্ধতার শিকার হতে হবে। সে জলাবদ্ধতা ভোগাবে নাগরিকদের। 
তিনটি ওয়ার্ডের কয়েকটি স্থানে সরেজমিন দেখা গেছে, যত্রতত্র ফেলে রাখা হয়েছে ময়লা-আবর্জনা। রয়েছে মাছিসহ বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড়ের আনাগোনা। পচা দুর্গন্ধে ভরে আছে আশপাশ। এসব এলাকা দিয়ে যাতায়াত করাই দুষ্কর। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের হরিণহাটি এলাকার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উত্তরে ফেলে রাখা হয়েছে বাসাবাড়ির ময়লা। এ সড়ক দিয়ে বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। 

পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের হরিণহাটি এলাকার বাসিন্দা বিএনপি নেতা রাজু আহমেদ। তিনি বলেন, ঠিকমতো ময়লা পরিষ্কার না করায় পোকামাকড়ের উপদ্রবের পাশাপাশি দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে ভাড়াটিয়া থাকতে চান না বাসায়। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব চান্দরা জালালগেইট রমেসের টেক এলাকার ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম ও তালেব মিয়ার ভাষ্য, সড়কের পাশে পৌরসভা বড় ডাস্টবিন তৈরি করেছে। প্রতিদিন ময়লা অপসারণের কথা থাকলেও সপ্তাহ পার হলেও নেয় না। দুর্গন্ধের কারণে দোকানে ক্রেতা আসতে চান না।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর পৌরসভায় প্রশাসক ও ওয়ার্ডে কাউন্সিলরের পরিবর্তে একজন সরকারি কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, আগে প্রতিদিন ময়লা কয়েকটি স্থানে রাখা হলে সকালে কর্তৃপক্ষ তা অপসারণ করত। এখন মহাসড়কের পাশে কিংবা বাড়ির আশপাশে দিনের পর দিন পড়ে থাকে। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সারোয়ার হোসেন পূর্বচান্দরা এলাকায় ময়লার মিনি ডাম্পিং করেছিলেন। সেখান থেকেও সপ্তাহে একদিনও ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করা হচ্ছে না।
৯ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বপাড়া, পশ্চিমপাড়া ও আহাম্মদনগরে যেখানে সেখানে ময়লার স্তূপ রয়েছে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, নির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলর না থাকায় কাউকে কিছু বলাও যায় না। ওয়ার্ডে একজন সরকারি কর্মকর্তা দায়িত্বে থাকলেও তাদের সার্কেল অফিসে পাওয়া যায় না। 
ওয়ার্ডের বাসিন্দা সফিকুল ইসলাম ও সিদ্দিকুর হোসেন বলছিলেন, পৌরসভার নাগরিক হিসেবে সব ধরনের সুবিধা পাওয়ার কথা থাকলেও তা তারা পাচ্ছেন না। নালা ময়লায় ভরে গেলেও পরিষ্কার করার লোক নেই। 

৯ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বে রয়েছেন উপজেলা এলজিইডি অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুল বাছেদ। তিনি বলেন, নতুনভাবে টেন্ডার পাওয়া ব্যক্তি আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে পৌরসভার গাড়ি দিয়ে এনে অস্থায়ী ভাগাড়ে রাখবেন। আগের লোক কাজ না করার কারণে হয়তো নাগরিকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
কালিয়াকৈর পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. জাহিদুল আলম তালুকদার বলেন, মাঝে একটু সমস্যা থাকায় নিয়মিত ময়লা সরানো যায়নি। ডাম্পিংয়ের জন্য একটি জমি অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়েছে। 
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ময়ল র স ত প সড়ক র প শ এল ক র ব প রসভ র র ময়ল সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ