মাদারীপুরে পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনতাই
Published: 11th, April 2025 GMT
মাদারীপুরের কালকিনিতে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাসহ দুজনকে ছিনিয়ে নিয়েছে তাদের সহযোগীরা।
কালকিনি থানা জানিয়েছে, এই ঘটনায় পুলিশের পাঁচ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে কালকিনি থানা ভবন-সংলগ্ন মাছ বাজারে এই ঘটনা ঘটে।
আরো পড়ুন:
থানায় লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়ায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ক্ষোভ
‘ক্রিম আপা’র বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় মামলা
যাদের ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে, তারা হলেন- কালকিনি পৌর এলাকার ঠেঙ্গামারা গ্রামের সিরাজ খানের ছেলে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মো.
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রতক্ষদর্শী জানান, পুলিশ মাদকসহ দুই আসামিকে আটক করে হাতকড়া পরায়। এসময় পুলিশ সদস্য কম ছিলেন। তখন উপজেলার ছাত্রলীগের সভাপতি বাকামিন খানের লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করে পুলিশের কাছ থেকে আসামিদের ছিনিয়ে নিয়ে যান।
কালকিনি থানার এ.এস.আই. সোহেল রানা বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এস.আই. আবুল বাশারের নেতৃত্বে আমরা বেশ কয়েকজন মিলে থানা ভবন-সংলগ্ন মাছ বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে উপজেলার ছাত্রলীগের সভাপতি মো. বাকামিন খানের বড় ভাই উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রাসেদ খান ও আল আমিনকে পাঁচ পিচ ইয়াবাসহ আটক করি। পরে আটককৃতদের সহযোগীরা আমাদের কাছ থেকে তাদের দুইজনকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।”
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “দুই মাদক ব্যবসায়ীকে আটকের পর তাদের সহযোগীরা তাদের ছিনিয়ে নেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি হয়। তখন পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পুলিশের ওপর হামলা ও আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় পৃথক মামলা হচ্ছে।
ঢাকা/বেলাল/রাসেল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
লবণশ্রমিকদের নিরাপত্তা ও কর্মপরিবেশের উন্নয়ন করতে হবে
দেশে প্রায় ৪০ হাজার কৃষক পরিবার এবং ৫৫ হাজার দক্ষ শ্রমিক সরাসরি লবণ উৎপাদনে যুক্ত। আরও ৫ লাখের বেশি শ্রমিক এই খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ফলে লবণ খাত দেশের গ্রামীণ অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে এই খাতের কর্মপরিবেশের উন্নয়ন করতে হবে। উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। বুধবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত এক পরামর্শ সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা।
‘দেশে লবণ খাতে কর্মপরিবেশ উন্নয়ন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাতীয় পরামর্শ সভা’ শিরোনামে সভাটির আয়োজন করে আইজেক প্রকল্প। আইজেক প্রকল্পের পূর্ণ নাম হচ্ছে ইমপ্রুভিং স্কিলস অ্যান্ড ইকোনমিক অপরচুনিটিজ ফর উইমেন অ্যান্ড ইয়ুথ ইন কক্সবাজার। কানাডার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের অর্থায়নে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) নেতৃত্বে ইনোভিশন কনসালটিং প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
সভায় জানানো হয়, প্রকল্পের আওতায় ইতিমধ্যে ১৮৫ জন শ্রমিক ও কৃষককে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এবং ৪৪৪ জনকে চিকিৎসাসহায়তা দেওয়া হয়েছে। কক্সবাজারে ২টি হাসপাতাল ও ৬টি লবণ কারখানার সঙ্গে আইজেক প্রকল্পের সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ওবায়দুর রহমান লবণকে ‘সাদা সোনা’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্য, অন্তর্ভুক্তিকরণ, ক্ষুদ্রঋণ ও আধুনিক প্রযুক্তিকে অগ্রাধিকার দিয়ে লবণ খাতকে শক্তিশালী করব।’ তিনি লবণশ্রমিকদের শ্রম অধিকার আইনের অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মুনির হোসেন খান বলেন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় সহায়তা দেওয়া হয়। তবে এ বিষয়ে আরও সচেতনতা এবং সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন।
সভায় লবণচাষি দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা পানিশূন্যতা, অপর্যাপ্ত স্যানিটেশন ও অনিশ্চিত আয়ে ভুগি। আমাদের নিয়মিত চিকিৎসা ও নিরাপত্তা প্রয়োজন।’
সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন ইনোভিশন কনসালটিংয়ের কান্ট্রি ডিরেক্টর কাজী শহীদ হাসান ফেরদৌস। আইএলও কক্সবাজার সাব অফিসের প্রধান রুচিকা বেহল লবণ চাষ ও আইজেক প্রকল্প নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এ ছাড়া সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ গুলজারুল আজিজ, বিসিকের লবণ বিভাগের প্রধান সরওয়ার হোসেন, ইনোভিশনের পোর্টফোলিও পরিচালক তাসমিয়া তাবাসসুম রহমান, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবসায় কৌশল ও ইএসজি প্রধান ফিরোজ আলম তালুকদার, এসিআই লিমিটেডের ব্যবসায় ব্যবস্থাপক জিসান রহমান, প্রিটি কম্পোজিট টেক্সটাইলসের নির্বাহী পরিচালক দেওয়ান মাহবুব কামরান, কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক আবেদ আহসান সাগর, আইএলওর কারিগরি বিশেষজ্ঞ জনসন, আইএলওর ইআইএস প্রকল্পের ব্যবস্থাপক সাদ গিলানি।
বক্তারা বলেন, লবণের বিশুদ্ধতা বাড়ানো এবং লবণভিত্তিক শিল্পের আধুনিকায়ন অত্যন্ত জরুরি। কাঁচা লবণের বিশুদ্ধতা ও আর্দ্রতা সমস্যা দূর করতে কাঠামোগত অদক্ষতার সমাধান প্রয়োজন।