দিনাজপুরের বিরামপুরে জমিজমা–সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এক সাংবাদিকের বাড়ির সীমানাপ্রাচীর ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জাতীয় পার্টির নেতা মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে ফিজুলের (৫৫) বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই সাংবাদিক গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিরামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান বিরামপুর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইসলামপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। তিনি জাতীয় পার্টির বিরামপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। ভুক্তভোগী সাংবাদিকের নাম জাকিরুল ইসলাম (৩২)। তিনি নয়াদিগন্ত ও সকালের সময়ের বিরামপুর উপজেলা প্রতিনিধি।

থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগ ও ভুক্তভোগী সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জাকিরুল ইসলাম নিজের কেনা ও পৈতৃক জমিতে ১২ বছরের বেশি সময় বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করছেন। বাড়ির সীমানা নিয়ে তাঁর সঙ্গে প্রতিবেশী মোস্তাফিজুর রহমানের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে।

জাকিরুল ইসলামের অভিযোগ, গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মোস্তাফিজুর রহমান ও তাঁর সহযোগীরা দেশি অস্ত্র নিয়ে এসে বাড়ির সীমানাপ্রাচীর ভেঙে ফেলেন। এরপর জোরপূর্বক নতুন একটি সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু করেন। এতে বাধা দিলে মোস্তাফিজুর রহমান তাঁকে মারধর করে মাটিতে ফেলে দেন। এ সময় তাঁর স্ত্রী এগিয়ে এলে তাঁকেও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং পরিবারের সদস্যদের হুমকি দেন।

জাকিরুল ইসলাম জানান, এর আগে ৯ এপ্রিল সকালে মোস্তাফিজুর রহমান একইভাবে জোর করে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের চেষ্টা করেন। পরে ওই দিন দুপুরে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পৌর প্রশাসক নুজহাত তাসনিমের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। ইউএনও অভিযোগ তদন্তের জন্য পৌরসভার নকশাকার মো.

মনিরুজ্জামানকে পাঠান।

এ বিষয়ে জানতে মোস্তাফিজুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমতাজুল হক বলেন, বসতবাড়ির সীমানাপ্রাচীর ভাঙার অভিযোগে গতকাল রাতে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। আজ শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হবে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম স ত ফ জ র রহম ন জ ক র ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার হরিতলা মোড়ে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে ইউএনওর অপসারণের দাবি জানানো হয়।

এলাকার সচেতন নাগরিক, ব্যবসায়ী মহল, অভিভাবক, ছাত্রছাত্রী, কর্মচারী-শিক্ষকমণ্ডলীর ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়। এতে এলাকাবাসী ছাড়া তাহেরপুর কলেজের অধিকাংশ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন থেকে কলেজের সম্পত্তি অন্যত্র ইজারা দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদ জানানো হয়।

তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়। পৌরসভার নির্মিত দোকানঘর থেকে তাহেরপুর কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ায় এ কর্মসূচি পালন করা হয় বলে অভিযোগ। আওয়ামী লীগের নেতার দাবি, তিনি দলীয় পরিচয়ে নয়, কলেজশিক্ষক হিসেবে মানববন্ধনে যোগ দিয়েছেন। তবে ব্যানারে ফ্যাসিবাদ শব্দটি প্রথমে দেখেননি। পরে দেখেছেন।

মানববন্ধনে তাহেরপুর কলেজের শিক্ষক রইচ আহমেদ, সুরাইয়া আক্তার, তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তারা বাগমারার ইউএনওকে ফ্যাসিবাদের দোসর ও চব্বিশের চেতনাবিরোধী অভিযোগ তুলে তাঁদের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ার নিন্দা জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাহেরপুর কলেজ–সংলগ্ন স্থানে পৌর কর্তৃপক্ষ দোকানঘর নির্মাণ করেছে। পৌরসভার পক্ষে নিয়মিত ভাড়া আদায় করা হয় ওই প্রতিষ্ঠান থেকে। ৫ আগস্টের পর থেকে কলেজের পক্ষ থেকে ৪১টি দোকানঘর নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করা হয়।

পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে বাগমারার ইউএনও দোকানঘর থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেন। দোকানঘরগুলো পৌরসভার হওয়ায় তারাই সেখান থেকে ভাড়া আদায় করবে বলে জানানো হয়। সেখান থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ আর ভাডা আদায় করবে না জানিয়ে ২২ এপ্রিল পৌরসভার প্রশাসককে লিখিতভাবে জানান কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম। এর পর থেকে কর্তৃপক্ষ ইউএনওর ওপর ক্ষুব্ধ হয়।

তাহেরপুর কলেজের সহকারী অধ্যাপক সুরাইয়া আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, কলেজের জায়গায় তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়ব ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ দোকানঘর নির্মাণ করে মোটা অঙ্কের টাকায় ভাড়া দেন। ৫ আগস্টের পর তাঁরা (কলেজ কর্তৃপক্ষ) সেগুলো নিয়ন্ত্রণে নেন। তবে ২২ এপ্রিল ইউএনও সাদা কাগজে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছ থেকে ভাড়া আদায় বিষয়ে একটি লিখিত নিয়েছেন। এর প্রতিবাদে মূলত তাঁদের এই কর্মসূচি।

পৌরসভার দোকানঘর থেকে কেন পৌরসভা ভাড়া আদায় করবে না জানতে চাইলে সুরাইয়া আক্তার বলেন, ‘জায়গাগুলো কলেজের ছিল।’ ব্যানারে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখা হলেও কেন আওয়ামী লীগের নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করলেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কলেজের স্বার্থে আমরা এক।’

জানতে চাইলে ইউএনও মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, দোকানগুলো তাহেরপুর পৌরসভার। সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করে পৌরসভার কোষাগারে জমা করা হয়। তিনি প্রশাসক হিসেবে ভাড়া আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছেন। কলেজের অধ্যক্ষ নিজেই জানিয়েছেন, এখন থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ ভাড়া আদায় করবে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পড়াশোনায় ফিরছেন দিনাজপুরের ‘ইংলিশম্যান’ হৃদয়, শেখাবেন ইংরেজি
  • আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা
  • নারায়ণগঞ্জে ৩০ স্কুলে চালু হলো ‌‘মিড ডে মিল’
  • গাজীপুরে ১০ মাটি খেকোকে কারাদণ্ড
  • পাঠাগার থেকে লুট হওয়া বই ফেরত পেলো কর্তৃপক্ষ
  • দমদমিয়া আলোর পাঠশালায় গিয়ে শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নিলেন ইউএনও
  • রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশ, লুট হওয়া বই ফেরত পেল পাঠাগার কর্তৃপক্ষ
  • মুদি দোকানে যৌন উত্তেজক ঔষধ, জরিমানা