ভিডিওটি চেন্নাই সুপার কিংসের এক্স অ্যাকাউন্টে বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে পোস্ট করা হয়। সেখানে দেখা যায়, নেটের ভেতর গ্লাভস পরে সম্ভবত ব্যাটিং অনুশীলনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। তখন ডোয়াইন ব্রাভো গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন ধোনির কাছে। তাঁকে দেখে খোঁচা মারার লোভটা সামলাতে পারেননি চেন্নাইয়ের নেতৃত্বে ফেরা ধোনি।

আরও পড়ুনপিএসএলে কি আজ অভিষেক হবে রিশাদের১ ঘণ্টা আগে

চেন্নাইয়ের অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের কনুইয়ের হাড়ে চিড় ধরায় আইপিএল থেকে তিনি ছিটকে গেছেন। অধিনায়ক হিসেবে তাই ধোনিকে ফিরিয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজি দলটি। তাঁর অধিনায়কত্বেই আজ রাতে কলকাতা নাইট রাইডার্সের মুখোমুখি হবে চেন্নাই। এই ম্যাচের আগে এমএ চিদাম্বরাম স্টেডিয়ামে অনুশীলনে ব্রাভোর সঙ্গে দেখা হয় ধোনির।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক অলরাউন্ডারকে দেখেই নেটের ভেতর থেকে ধোনি বলেন, ‘বিশ্বাসঘাতক এখানে এসেছে।’ ব্রাভোও হাঁটতে হাঁটতে ধোনির কাছে এগিয়ে যাওয়ার পথে হাসতে হাসতে উত্তর দেন, ‘জীবন খুবই অন্যায্য।’ নেটের পাশে দাঁড়ানো চেন্নাই অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজা এ সময় তাঁকে দেখে বুকে জড়িয়ে নেন এবং বলেন, ‘হেই ডিজে।’ ব্রাভো এরপর ধোনির সঙ্গে নেটের বাইরে থেকেই হাত মেলান এবং তাঁর সঙ্গে খুনসুটিতে মেতে ওঠেন।

আরও পড়ুনআইপিএলে চার–ছক্কায় হাজারি কোহলি২ ঘণ্টা আগে

চেন্নাইয়ে দুই মেয়াদে ধোনির সতীর্থ ছিলেন ব্রাভো। ২০১১ থেকে ২০১৫ ও ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত। ২০২৩ ও ২০২৪ সালে চেন্নাইয়ে বোলিং কোচের দায়িত্বও পালন করেছেন। এবার আইপিএল শুরুর আগে কলকাতার মেন্টরের দায়িত্ব নেন স্বীকৃত টি–টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এ উইকেটশিকারি (৫৮২ ম্যাচে ৬৩১ উইকেট)। অর্থাৎ আজকের ম্যাচে সাবেক সতীর্থ ও বন্ধুরও মুখোমুখি হতে হবে ধোনিকে।
৪১ বছর বয়সী ব্রাভোর সঙ্গে ধোনির বন্ধুত্ব এখনো অটুট। কিন্তু চেন্নাই ছেড়ে কলকাতার কোচিং প্যানেলে যুক্ত হওয়ায় ধোনি সম্ভবত ব্রাভোকে খোঁচা মারার লোভটা সামলাতে পারেননি।

ধোনির নেতৃত্বে চেন্নাইয়ের ২০১১, ২০১৮, ২০২১ ও ২০২২ সালে আইপিএল জয়ে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন ব্রাভো। কলকাতার মেন্টর গৌতম গম্ভীর ভারত জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর ফ্র্যাঞ্চাইজিতে তাঁর জায়গা নিয়েছেন ব্রাভো।

৫ ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ৯–এ থাকা চেন্নাই নিজেদের সর্বশেষ চার ম্যাচেই হেরেছে। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কলকাতার বিপক্ষে তাই একটু চাপেই থাকবেন ধোনি। ৫ ম্যাচে ২ জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে আছে কলকাতা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কলক ত র

এছাড়াও পড়ুন:

ব্যয় বাড়ল ১৪৪ কোটি টাকা

‘খুলনা জেলা কারাগার নির্মাণ’ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন হয় ২০১১ সালে। ২০১৬ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। এর পর আটবার প্রকল্পের সময় বেড়েছে, দুই দফা সংশোধনের পর ব্যয় বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ। এ অবস্থায় প্রকল্পটি শেষ হওয়া নিয়ে হতাশা দেখা দেয়। 
আশার কথা, নতুন জেলা কারাগারের কাজ শেষ হয়েছে। গত ২৫ মে গণপূর্ত বিভাগের কাছ থেকে নতুন কারাগারটি বুঝে নেওয়ার কথা ছিল কারা কর্তৃপক্ষের। কিছু কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় হস্তান্তর হয়নি। চলতি জুন মাসে যে কোনো সময় নতুন কারাগার হস্তান্তরের কথা রয়েছে। জনবল পদায়ন হলেই নতুন কারাগারে বন্দি স্থানান্তর শুরু হবে।
১৯১২ সালে নগরীর ভৈরব নদীতীরে নির্মাণ করা হয় খুলনার প্রথম কারাগার। সেখানে বন্দি ধারণক্ষমতা ৬৭৮ জনের। রয়েছেন ১ হাজার ৪শর বেশি বন্দি। ১১৩ বছরের পুরোনো জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে থাকতে হয় তাদের। এসব বিবেচনায় নিয়েই নতুন কারাগার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
খুলনার সিটি (রূপসা সেতু) বাইপাস সড়কের জয় বাংলা মোড়ের অদূরে প্রায় ৩০ একর জমির ওপর নতুন কারাগার নির্মাণ হচ্ছে। মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী নতুন কারাগারে ৪ হাজার বন্দি থাকতে পারবেন। প্রকল্পের আওতায় আপাতত ২ হাজার বন্দি রাখার অবকাঠামো তৈরি হয়েছে। পরে প্রয়োজন পড়লে পৃথক প্রকল্প নিয়ে অন্য অবকাঠামো নির্মাণ হবে।
নতুন কারাগার হবে সংশোধনাগার
কারাগার ঘুরে দেখা গেছে, ভেতরে সাজানো-গোছানো অভিজাত আবাসিক এলাকার মতো পরিবেশ। রং দেওয়া নতুন ভবন, পথের ধারে 
ফুল, দামি পার্কিং টাইলস দেওয়া ফুটপাত ধরে হাঁটলে এটি কারাগারই মনে হয় না। নতুন এ কারাগার নির্মাণ হচ্ছে সংশোধনাগার হিসেবে। এখানে বিচারাধীন ও সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের পৃথক স্থানে রাখা হবে। কিশোর ও কিশোরী বন্দিদের জন্য রয়েছে পৃথক ব্যারাক। নারীদের জন্য পৃথক হাসপাতাল, মোটিভেশন সেন্টার ও ওয়ার্কশেড আছে। একইভাবে বন্দিদের জন্য ৫০ শয্যার হাসপাতাল থাকবে। 
আরও থাকবে কারারক্ষীদের সন্তানদের জন্য স্কুল, বিশাল লাইব্রেরি, ডাইনিং রুম, আধুনিক স্যালুন ও লন্ড্রি। কারাগারে শিশুসন্তানসহ নারী বন্দিদের জন্য থাকবে পৃথক ওয়ার্ড ও ডে-কেয়ার সেন্টার। এ ওয়ার্ডটিতে সাধারণ নারী বন্দি থাকতে পারবেন না। সেখানে শিশুদের জন্য লেখাপড়া, খেলাধুলা, বিনোদন ও সংস্কৃতি চর্চার ব্যবস্থা থাকবে। কারাগারে পুরুষ ও নারী বন্দিদের হস্তশিল্পের কাজের জন্য আলাদা আলাদা ওয়ার্কশেড, বিনোদন কেন্দ্র ও নামাজের ঘর রয়েছে। মোট ৫২টি স্থাপনা রয়েছে এ কারাগারে। 
গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রাশিদুল ইসলাম জানান, বন্দিদের প্রতিটি ব্যারাকের চারপাশে পৃথক সীমানাপ্রাচীর রয়েছে। এক শ্রেণির বন্দিদের অন্য শ্রেণির বন্দিদের সঙ্গে মেশার 
সুযোগ নেই। কারাগারের ভেতরে শুধু সীমানাপ্রাচীরই রয়েছে প্রায় ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের। ভেতরে ড্রেন, ফুটপাত, নিজস্ব পয়োবর্জ্য শোধন কেন্দ্র, ওয়াকওয়ে, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থা, দুটি পুকুর ও সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সবকিছুর কাজ শেষ।
সময় বেড়েছে আটবার, ব্যয় বেড়ে দ্বিগুণ
২০১১ সালের অনুমোদিত খুলনা জেলা কারাগার নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ছিল ১৪৪ কোটি টাকা। ২০১৭ সালের ৬ জুন প্রকল্পটি প্রথম দফা সংশোধন করা হয়। এতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ২৫১ কোটি টাকা। নতুন লক্ষ্য নেওয়া হয় ২০১৯ সালের ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার। এর পর পাঁচ দফায় পাঁচ বছর সময় বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু কাজ আর শেষ হয়নি। ২০২৩ সালের মে মাসে দ্বিতীয় দফায় প্রকল্প সংশোধন করা হয়েছে। এতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮৮ কোটি টাকায়।
হস্তান্তর ও চালু কবে
খুলনা গণপূর্ত বিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান বলেন, নতুন কারাগারের সব কাজ শেষ। কয়েকটি স্থাপনায় রঙের শেষ প্রলেপসহ টুকটাক কাজ বাকি রয়েছে। আগে করলে এসব নষ্ট হয়ে যাবে। এ কারণে হস্তান্তর তারিখ নির্ধারণ হলেই এসব কাজ করা হবে। 
খুলনার জেল সুপার নাসির উদ্দিন প্রধান বলেন, কিছু কাজ বাকি ছিল, সেগুলো শেষ করতে বলা হয়েছে। সব ঠিক থাকলে চলতি জুন মাসেই আমরা কারাগার বুঝে নেব। তিনি আরও বলেন, কারাগার পরিচালনার জন্য ৬০০ জনবলের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পুরোনো কারাগারে প্রায় ২০০ জনবল রয়েছে। স্থাপনা বুঝে নেওয়ার পর কারাগার চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্যয় বাড়ল ১৪৪ কোটি টাকা
  • সারোগেসির মাধ্যমে বাবা হয়েছেন যেসব অভিনেতা
  • চুইঝাল চাষে সাফল্য পেয়ে প্রবাসফেরত শাহ আলম বললেন, ‘আর বিদেশে যাব না’