মুরাদনগরে চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজিতে সাবেক এমপি ও তাঁর অনুসারীরা
Published: 13th, April 2025 GMT
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ এবং তাঁর অনুসারীরা আওয়ামী লীগের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুরাদনগর উপজেলার নেতা–কর্মীরা।
‘মুরাদনগরের সাধারণ ছাত্র–জনতা’ ব্যানারে তাঁরা সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে বর্তমানে এনসিপির সঙ্গে যুক্ত মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহের মুন্সি, উপজেলা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি কামরুল হাসান, ভাঙ্গুরা পূর্ব ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি শেখ আলমগীর, কুমিল্লা উত্তর জেলা যুবদলের সদস্য শফিকুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের যেসব নেতা–কর্মী এত দিন দুঃশাসনের প্রতীক ছিলেন, তাঁরা এখন সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদের ছত্রচ্ছায়ায় নতুন রূপে দাপটের সঙ্গে ফিরে এসেছেন।
শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ ও তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় হামলা, চাঁদাবাজি ও জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মহিউদ্দিন অঞ্জন, যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ রানাসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা এসব কাজের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন অভিযোগ তাঁদের।
এ সময় বক্তারা মুরাদনগর উপজেলায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান। সংবাদ সম্মেলনে মুরাদনগর উপজেলা এনসিপির আহ্বায়ক মিনহাজুল হক অভিযোগ করেন, হামলা, ভাঙচুর ও দখলদারত্বের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা সাবেক এমপি মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদের অনুসারী। তিনি বলেন, ‘৫ আগস্ট–পরবর্তী সময়ে তাঁরা মুরাদনগরে সব অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন। অপকর্মের প্রতিবাদ করায় তাঁরা আমাদের ওপর একাধিকবার হামলা করেছেন। বিভিন্ন সময়ে ভিত্তিহীন অপবাদ দেওয়ারও চেষ্টা করেছেন।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুরাদনগর শাখার সাবেক আহ্বায়ক ওবায়েদ উল্লাহ বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে উপদেষ্টার আত্মীয় পরিচয়ে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ তোলা হচ্ছে, অথচ এসবের কোনো প্রমাণ নেই। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার সঙ্গে আমার তেমন কোনো আত্মীয়তার সম্পর্ক নেই। সাধারণ নাগরিক হিসেবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করছি। কয়েক দিন আগে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রতিবেদ করায় আমার ওপর স্থানীয় বিএনপি নেতা–কর্মীরা হামলা করেন।’
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদের মুঠোফোন ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনি বর্তমানে দেশের বাইরে আছেন।
সংবাদ সম্মেলনে করা এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও বানোয়াট বলেছেন মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন। তিনি উল্টো অভিযোগ করেন, যাঁরা ঢাকায় এই সংবাদ সম্মেলন করছেন, তাঁরাই এলাকায় আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করছেন।
এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অত্যাচার ও নির্যাতনে আমরা গত ১৭ বছর বাড়িতে ঘুমাতে পারিনি। আমাদের নেতা শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ দেশে থাকতে পারেননি। আমাদের বিরুদ্ধে ৭১টি মামলা দেওয়া হয়েছে। ১৭ বছরে ৩৪টি ঈদের একটিও বাড়িতে করতে পারেনি। তাহলে আমরা কেন আওয়ামী লীগকে প্রতিষ্ঠিত করতে যাব?’
একজন উপদেষ্টার নির্দেশে স্থানীয় বিএনপি নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মহিউদ্দিন অঞ্জন। বিএনপি নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ সব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন তিনি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম র দনগর উপজ ল র অন স র ব এনপ র কর ম র আওয় ম সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
হাত-পা বাঁধা ও কম্বলে প্যাঁচানো মরদেহ উদ্ধার
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার একটি ডোবা থেকে হাত-পা বাঁধা ও কম্বল দিয়ে প্যাঁচানো অবস্থায় এক অটোরিকশা চালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সকাল ৭টার দিকে সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের রতনপুর আনসার ক্যাম্পের পাশের ডোবা থেকে মরদেহটি উদ্ধার হয়।
আরো পড়ুন:
উত্তর বাড্ডায় বদ্ধ ঘরে মিলল নারী-পুরুষের মরদেহ
নিখোঁজের ১২ দিন পর কৃষকের গলিত মরদেহ উদ্ধার
মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম মজিবর মাঝি (৪৫)। তিনি বরিশাল জেলার হিজলা থানার বাসিন্দা। মুন্সীগঞ্জ সদরের রামপাল ইউনিয়নের শান্তিনগর এলাকায় থেকে তিনি অটোরিকশা চালাতেন। গত শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) থেকে তার সন্ধান পাচ্ছিলেন না স্বজনরা।
নিহত মজিবরের ছেলে মো. রাসেল বলেন, “বাবা মুন্সীগঞ্জে একা থাকতেন। তিনি স্থানীয় একটি গ্যারেজ থেকে ভাড়ায় অটোরিকশাটি চালাতেন। গত শুক্রবার মাওয়া যাওয়ার কথা বলে তিনি বের হন। এরপর আর ফেরেননি। গতকাল গ্যারেজ মালিক ফোন দিয়ে জানালে, আমি থানায় সাধারণ ডায়েরি করি। আজ সকালে বাবার মরদেহ ডোবায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়। অটোরিকশাটির কোনো হদিস নেই।”
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম সাইফুল আলম বলেন, “মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”
ঢাকা/রতন/মাসুদ