কুষ্টিয়ায় জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারের (এসপি) সঙ্গে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায় অংশ নিতে দেখা গেছে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যাচেষ্টা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি এক আওয়ামী লীগ নেতাকে। 

সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকালে কুষ্টিয়া পৌরসভা চত্বর থেকে বের হওয়া জেলা প্রশাসন আয়োজিত শোভাযাত্রায় ব্যানারের সামনের সারিতে ছিলেন তিনি।

এজাহারভুক্ত আসামির নাম মোকারম হোসেন মোয়াজ্জেম। তিনি কুষ্টিয়া পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর দায়ের হওয়া একটি হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি তিনি। দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন মোকারম হোসেন।

আরো পড়ুন:

মুন্সীগঞ্জে ডেকে নিয়ে তরুণীকে সংঘবদ্ধ ‘ধর্ষণ’, গ্রেপ্তার ১

মাগুরার সেই শিশু ধর্ষণ মামলার চার্জশিট দিল পুলিশ

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো.

তৌফিকুর রহমান বলেন, “আমি তাকে চিনি না। খেয়ালও করিনি। তিনি মামলার আসামি হলে আমি পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলব।”

 

জেলা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ আয়োজনে মামলার আসামি ও আওয়ামী লীগ নেতাকে দেখতে পেয়ে রাজনৈতিক ও সাধারণ মহলে আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়েছে। শোভাযাত্রায় তার উপস্থিতির ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন নেটিজেনরা। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাংলা নববর্ষ উদযাপনে নানা আয়োজন করে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন। এরই অংশ হিসেবে সকাল সাড়ে ৮টায় কুষ্টিয়া পৌরসভা চত্বর থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়। মজমপুর গেটসহ শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কুষ্টিয়া কালেক্টরেট চত্বরে বনবীথিতে গিয়ে শোভাযাত্রাটি শেষ হয়। এ সময় জেলা প্রশাসনের আনন্দ শোভাযাত্রার ব্যানার ধরে সামনের সারিতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারের সঙ্গে মোকারম হোসেন মোয়াজ্জেমকেও দেখা যায়। 

মোকারম হোসেন গত ৫ আগস্ট কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় তামজিদ হোসেন জনি নামে এক যুবককে হত্যাচেষ্টা মামলার এজাহারভুক্ত ৪২ নম্বর আসামি। ওই মামলার প্রধান আসামি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ। মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৭৩ জনের নাম উল্লেখ করা ছাড়াও আরো ৪০ থেকে ৪৫ জনকে নাম না আসামি করা হয়। গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলাটি করেন ভুক্তভোগী বড় ভাই জিলহজ হোসেন।

জানতে চাইলে মোকারম হোসেন মোয়াজ্জেম প্রথমে মামলার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “আমি আজ সকালে জেলা প্রশাসনের বর্ষবরণের আনন্দ শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলাম।” মামলার প্রমাণ রয়েছে জানালে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা আছে বলে তিনি জানান।

কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার বলেন, “এমনটা কেন হলো। ব্যাপারটি নিয়ে আমি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলব।”

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান বলেন, “আমি কিছু জানি না। এখনই ব্যবস্থা নিচ্ছি।”

ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ আনন দ শ ভ য ত র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

নিয়োগবিধির প্রজ্ঞাপন : প্রধান শিক্ষক পদে ৮০ শতাংশ নিয়োগ পদোন্নতিতে

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগে নতুন বিধিমালা, ২০২৫–এ পরিবর্তন এনেছে সরকার। নতুন সংশোধন অনুযায়ী, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা ও বয়সসীমায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের পরামর্শক্রমে এই সংশোধনী জারি করা হয়েছে গতকাল রোববার (২ নভেম্বর)।

নতুন বিধিমালায় বলা হয়েছে, প্রধান শিক্ষক পদে ৮০ শতাংশ নিয়োগ পদোন্নতির মাধ্যমে এবং ২০ শতাংশ সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে হবে। পদোন্নতির জন্য প্রার্থীকে সহকারী শিক্ষক পদে অন্তত ১২ বছর চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে এবং মৌলিক প্রশিক্ষণ ও চাকরি স্থায়ীকরণ সম্পন্ন করতে হবে।

আরও পড়ুনইউরোপে পাইলটদের বেতন কোন দেশে কত ৪ ঘণ্টা আগে

সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক—উভয় পদেই প্রার্থীদের কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্তত দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএসহ স্নাতক বা স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি থাকতে হবে। শিক্ষাজীবনের কোনো পর্যায়ে তৃতীয় বিভাগ বা সমমানের ফলাফল গ্রহণযোগ্য হবে না। এ ছাড়া তফসিল–২ অনুযায়ী গৃহীত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক উভয় পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৩২ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে।

আরও পড়ুনকুয়েতে ডেপুটেশনে নিয়োগ দেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বেতন ৩ লাখ ৪৮ হাজার টাকা০২ নভেম্বর ২০২৫

নতুন বিধিমালার মাধ্যমে ‘অন্যান্য বিষয়ে’ শব্দের পরিবর্তে ‘বিজ্ঞানসহ অন্যান্য বিষয়ে অন্যূন’ শব্দটি যুক্ত করা হয়েছে। ফলে এখন থেকে বিজ্ঞান বিষয়ের প্রার্থীরাও সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সংশোধিত বিধিমালার ফলে শিক্ষক নিয়োগের মান আরও উন্নত হবে এবং বিজ্ঞান শিক্ষায় দক্ষ প্রার্থীরা সুযোগ পাবেন। এর মাধ্যমে সরকার প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষক নিয়োগে নতুন ধারা আনতে চায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ