কুষ্টিয়ায় জেলা প্রশাসনের বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনের হত্যাচেষ্টা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি আওয়ামী লীগ নেতা মোকাররম হোসেন ওরফে মোয়াজ্জেমকে অংশ নিতে দেখা গেছে। আজ সোমবার সকালে কুষ্টিয়া পৌরসভা চত্বর থেকে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বের হওয়া ওই শোভাযাত্রায় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রথম সারিতে তাঁকে দেখা যায়।

এমন ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এরপর বিকেলে ওই আওয়ামী লীগ নেতা মোকাররম হোসেনকে গ্রেপ্তারে কুষ্টিয়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল মাঠে নামে।

মোকাররম হোসেন কুষ্টিয়া পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য। তিনি কুষ্টিয়া বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি। ৫ আগস্ট কোটাবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময় তামজিদ হোসেন নামের এক যুবককে হত্যাচেষ্টা মামলার এজাহারভুক্ত ৪২ নম্বর আসামি তিনি।

গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর তামজিদ হোসেনের বড় ভাই জিলহজ হোসেন বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। ওই মামলার প্রধান আসামি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ। মামলায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের ৭৩ জনের নাম উল্লেখসহ ৪০ থেকে ৪৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। ৫ আগস্টের পর মোকাররম হোসেন দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন।

বিকেল পৌনে চারটার দিকে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ফয়সাল মাহমুদ প্রথম আলোকে অভিযান চালানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মোকাররম হোসেনকে গ্রেপ্তারে চেম্বার অব কমার্সে যাওয়া হয়েছিল। হয়তো খবর পেয়ে তিনি সেখান থেকে সরে গেছেন।

এদিকে জেলা প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ আয়োজনে মামলার আসামি ও আওয়ামী লীগ নেতা মোকাররমকে প্রথম সারিতে প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের পাশে দেখে রাজনৈতিক ও সাধারণ মহলে আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়েছে। সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন নেটিজেনরা।

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে জেলা প্রশাসন আজ সকাল নয়টার দিকে কুষ্টিয়া পৌরসভা চত্বর থেকে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা বের করে। মজমপুর রেলগেটসহ শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কুষ্টিয়া কালেক্টরেট চত্বরে বনবীথিতে গিয়ে শোভাযাত্রাটি শেষ হয়। এ সময় জেলা প্রশাসনের আনন্দ শোভাযাত্রার ব্যানার ধরে সামনের সাড়িতে মোকাররমের পাশে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ অন্য কর্মকর্তাদের দেখা যায়।

কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্যসচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার বলেন, ‘এমনটা কেন হলো জানি না। ব্যাপারটি নিয়ে আমি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলব।’

কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো.

তৌফিকুর রহমান বলেন, ‘আমি তাঁকে চিনি না। খেয়ালও করিনি। পুলিশকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আনন দ শ ভ য ত র ম ক ররম হ স ন আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

সিরাজ–কৃষ্ণাতে ম্যাচে ফিরল ভারত

অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফিতে মোহাম্মদ সিরাজের মতো আর কোনো পেসার নেই, এভাবে বলাই যায়। কারণ, সিরাজ ও ক্রিস ওকসই এই সিরিজের সব কটি ম্যাচ খেলেছেন। সেই ওকসও ওভাল টেস্টের প্রথম দিনে চোট পেয়ে টেস্ট থেকে ছিটকে গেছেন, টিকে আছেন সিরাজ।

টিকে থাকা সিরাজ কী করেছেন? গতকাল ওভাল টেস্টের দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনে ৮ ওভারের এক স্পেলে ফিরিয়েছেন ওলি পোপ, জো রুট, জ্যাকব বেথেলকে। এরপর আরও এক উইকেট। সিরাজকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন প্রসিধ কৃষ্ণা। দ্বিতীয় সেশনের শেষ ওভারে দুই উইকেটসহ তিনিও নিয়েছেন ৪ উইকেট। ভারতের ২২৪ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ড অলআউট হয়েছে ২৪৭ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ভারত কাল দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে ২ উইকেটে ৭৫ রান নিয়ে। দুই ‘জীবন’ পাওয়া যশস্বী জয়সোয়াল ৫১ ও আকাশ দীপ ৪ রান নিয়ে উইকেটে আছেন।

অথচ কাল প্রথম সেশন শেষে ম্যাচের চিত্র ছিল আলাদা। ইংল্যান্ড প্রথম ১৬ ওভারেই তোলে ১ উইকেটে ১০৯ রান। দুই ওপেনার জ্যাক ক্রলি ও বেন ডাকেট ৭৭ বলে গড়েন ৯২ রানের জুটি। এমন বাজবলীয় শুরুর পর চিত্র পুরোপুরি বদলে যায় দ্বিতীয় সেশনে। শুরুটা করেন কৃষ্ণা। তাঁর শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দেন ক্রলি। পরের গল্পটা সিরাজের। প্রথম স্পেলে ৪ ওভারে ৩১ রান দেওয়া সিরাজকে অধিনায়ক গিল যখন বোলিংয়ে আনেন, তখন ইংল্যান্ডের রান ২৪ ওভারে ২ উইকেটে ১৪২। তিনি একে একে ফেরান দুই সেট ব্যাটসম্যান পোপ (২২), রুটকে (২৯) ও বেথেলকে (৬)। এরপর কৃষ্ণার দুই উইকেটে দ্বিতীয় সেশনটা পুরোপুরি ভারতের হয়ে যায়। ইংল্যান্ড দ্বিতীয় সেশনে ১০৬ রান তুলতে হারায় ৬ উইকেট। তৃতীয় সেশনে আর ৩২ রান যোগ করতে পারে তারা।

আরও পড়ুনকাঁধের চোটে ভারতের বিপক্ষে আর খেলতে পারবেন না ওকস১১ ঘণ্টা আগেলোকেশ রাহুলকে আউট করার পর অ্যাটকিনসনের আনন্দ

সম্পর্কিত নিবন্ধ