কুষ্টিয়ায় জেলা প্রশাসনের বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতার আন্দোলনের হত্যাচেষ্টা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি আওয়ামী লীগ নেতা মোকাররম হোসেন ওরফে মোয়াজ্জেমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শহরের বড় বাজার এলাকা থেকে গতকাল সোমবার রাত আটটার পর মোকাররম হোসেনকে গ্রেপ্তার করে কুষ্টিয়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল। পরে তাঁকে কুষ্টিয়া মডেল থানায় সোপর্দ করা হয়। সেখানে একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে তাঁকে কুষ্টিয়া আদালতে নেওয়া হয়েছে।

আজ বেলা পৌনে একটার দিকে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ফয়সাল মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, কুষ্টিয়া মডেল থানায় গত ১৩ ফেব্রুয়ারি হওয়া একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে মোকাররম হোসেনকে আদালতে নেওয়া হয়েছে।

মোকাররম হোসেন কুষ্টিয়া পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য। তিনি কুষ্টিয়া বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি। কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক। গত বছর ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তামজিদ হোসেন নামের এক যুবককে হত্যাচেষ্টা মামলার এজাহারভুক্ত ৪২ নম্বর আসামি তিনি।

আরও পড়ুনকুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের শোভাযাত্রায় জুলাই আন্দোলনে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি আওয়ামী লীগ নেতা১৬ ঘণ্টা আগে

গতকাল সকালে কুষ্টিয়া পৌরসভা চত্বর থেকে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বের হওয়া আনন্দ শোভাযাত্রায় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রথম সারিতে মোকাররম হোসেনকে দেখা যায়। এমন ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এরপর বিকেলে ওই আওয়ামী লীগ নেতা মোকাররম হোসেনকে গ্রেপ্তারে কুষ্টিয়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল মাঠে নামে।

কুষ্টিয়া মডেল থানা সূত্র জানায়, ১৩ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়া মডেল থানায় আসিফ নামের এক যুবক বাদী হয়ে একটি হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন। গত বছরের ৫ আগস্ট জুলাই আন্দোলনে মোকাররম হোসেনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করা হয়। মামলায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছেন ১৫০ জন।

আজ বেলা পৌনে একটার দিকে কুষ্টিয়া আদালতের পরিদর্শক জহুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মোকাররম হোসেনকে আদালতে নেওয়া হয়েছে। এখনো এজলাসে তোলা হয়নি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ক ররম হ স ন আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

বিশ্বকাপে জায়গা করতে বিশ্বকাপজয়ীকে কোচের দায়িত্ব দিল ইতালি

দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলা যে কতটা গৌরবের আর আনন্দের, সেটা একজন বিশ্বকাপ জয়ের-অভিজ্ঞতাসম্পন্ন খেলোয়াড়ের চেয়ে আর কে ভালো বোঝাতে পারবেন?

আর এমন ভাবনা থেকেই এবার গানারো গাত্তুসোকে জাতীয় ফুটবল দলের কোচ নিয়োগ দিয়েছে ইতালি। চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা ২০২৬ বিশ্বকাপে জায়গা করা নিয়ে শঙ্কায় আছে। এর আগে খেলতে পারেনি ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপে। টানা তৃতীয় আসর যাতে দর্শক হয়ে না থাকতে হয়, সেই চেষ্টার অংশ হিসেবে ২০০৬ বিশ্বকাপজয়ী গাত্তুসোকে দায়িত্ব দিয়েছে ইতালিয়ান ফুটবল ফেডারেশন এফআইজিসি।

২০২৬ বিশ্বকাপের ইউরোপিয়ান বাছাইয়ে ইতালি খেলছে ‘আই’ গ্রুপে। পাঁচ দলের গ্রুপ থেকে শুধু শীর্ষ স্থানধারী দলই বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা করতে পারবে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা দল প্লে-অফে খেলার সুযোগ পাবে। এই মুহূর্তে ‘আই’ গ্রুপে ৪ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে নরওয়ে। ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ইসরায়েল। ইতালির অবস্থান তিনে, ২ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট।

গত সপ্তাহে নরওয়ের কাছে ৩-০ ব্যবধানে হারার পরই এফআইজিসি কোচ লুসিয়া স্পালেত্তিকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে বিদায় নিশ্চিতের পরও সোমবার মল দোবার বিপক্ষে ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়ান স্পালেত্তি, ম্যাচটি ইতালি ২-০ ব্যবধানে জেতে।

নরওয়ে নিজেদের প্রথম চার ম্যাচের চারটিতেই জেতায় ইতালি এখন চাপে আছে। হাতে এখনো ৬টি ম্যাচ বাকি। তবে শীর্ষস্থানে থাকতে হলে নিজেদের বাকি সব ম্যাচ তো জিততেই হবে, নরওয়েকেও পয়েন্ট হারাতে হবে। আর এমন জটিল পরিস্থিতির মধ্যেই ইতালি দলের দায়িত্ব নিচ্ছেন গাত্তুসো।

৪৭ বছর বয়সী গাত্তুসো ২০০০ থেকে ২০১০ পর্যন্ত ইতালির জাতীয় দলে খেলেছেন। এর মধ্যে ২০০৬ বিশ্বকাপজয়ী দলের সেরা পারফরমারদের একজন ছিলেন। সব ম্যাচেই শুরুর একাদশে ছিলেন, পরে জায়গা করে নিয়েছিলেন বিশ্বকাপের অলস্টার একাদশেও। ২০১৩ সালে সুইজারল্যান্ডের ক্লাব সিওনে খেলোয়াড় কাম কোচ হিসেবে কাজ শুরু করেন। তখন থেকে গত ১২ বছরে মোট ৯টি ক্লাবের ডাগআউটে দাঁড়িয়েছেন গাত্তুসো। যার মধ্যে আছে নিজের সাবেক ক্লাব এসি মিলান এবং ভ্যালেন্সিয়া ও মার্শেই। সর্বশেষ ক্রোয়েশিয়ার ক্লাব হাইদুক স্প্লিটের দায়িত্বে ছিলেন, যা গত মাসে পারস্পরিক সমঝোতায় ছেড়ে দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত কোচ হিসেবে মোট ৩৭৬টি ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়িয়ে গাত্তুসোর জয়ের হার ৪২.৮২ শতাংশ। জিতেছেন ১৬১টিতে, ড্র ১০৮ আর হার ১০৭-এ।
এখন দেখার বিষয়, ইতালি দলে তার সাফল্যের হার কতটা হয়, বিশেষ করে যখন দলের দরকার শতভাগ জয়। ইতালি জাতীয় দল তাদের পরবর্তী ম্যাচ খেলবে ৫ সেপ্টেম্বর এস্তোনিয়ার বিপক্ষে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ