মাদারীপুরে আলোচিত চার খুনের ঘটনায় অন্যতম আসামি জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহজাহান খানকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। এ সময় তাঁর সহযোগী সায়েদ মোল্লাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় র‌্যাব-৮ মাদারীপুর ক্যাম্প থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

গ্রেপ্তার শাহজাহান খান (৪৫) মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের টেকেরহাট এলাকার বাসিন্দা। তিনি জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক। তাঁর সহযোগী সায়েদ মোল্লা (৩৫) একই এলাকার বাসিন্দা। সোমবার রাতে রাজধানী ঢাকার হাতিরঝিল এলাকা থেকে শাহজাহান ও মঙ্গলবার সকালে ঢাকার বাড্ডা এলাকা থেকে সায়েদকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

আরও পড়ুনমাদারীপুরে তিন খুন: ৩ দিন পরে ইউপি চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামি করে দুই মামলা৩০ ডিসেম্বর ২০২৪

পূর্ববিরোধ ও বালু ব্যবসার জের ধরে ৮ মার্চ তিন ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করেন প্রতিপক্ষের লোকজন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন আতাউর রহমান সরদার ওরফে আতাবুর (৩৫), সাইফুল ইসলাম ওরফে হিটার সাইফুল (৩০), তাঁদের চাচাতো ভাই পলাশ সরদার (১৭)। আতাউর ও সাইফুল সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের সরদার বাড়ি এলাকার আজিবর সরদারের ছেলে। পলাশ একই এলাকার মুজাম সরদারের ছেলে। নিহত সাইফুল খোয়াজপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হন অলিল সরদার (৪০) ও তাজেল হাওলাদার (২০)। সর্বশেষ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তাজেল হাওলাদার। অলিল সরদার এখনো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

র‌্যাব-৮ মাদারীপুর ক্যাম্পের সূত্র জানায়, খোয়াজপুরে কীর্তিনাশা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিলেন ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল সরদার। এ নিয়ে প্রতিবেশী জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহজাহান খান ও বালু ব্যবসায়ী হোসেন সরদারের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন তিনি। এর জের ধরে ৮ মার্চ শাহজাহান খান ও হোসেন সরদারের নেতৃত্বে তাঁর লোকজন সাইফুলসহ তাঁর ভাইদের কুপিয়ে হত্যা করেন। এক দিন পরই সাইফুল ও আতাউর সরদারের মা সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ঘটনায় শুরু থেকেই ধরাছোঁয়ার বাইরে মূল অভিযুক্ত কৃষক দলের নেতা শাহজাহান খান। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব জানতে পারে তিনি রাজধানী ঢাকার হাতিরঝিল এলাকায় অবস্থান করছেন। পরে র‌্যাব-৮ ও র‌্যাব-৩ যৌথ অভিযান চালিয়ে আসামি শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করে। পরে পৃথক অভিযানে তাঁর সহযোগী সায়েদ মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

র‌্যাব-৮ মাদারীপুর ক্যাম্পে কোম্পানি কমান্ডার মীর মনির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, চার খুনের ঘটনায় অন্যতম আসামি শাহজাহান দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। তাঁকে ধরতে র‌্যাব শুরু থেকেই তৎপর ছিল। সর্বশেষ তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় শাহজাহান ও তাঁর সহযোগী সায়েদ খানকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে র‌্যাব। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের হাতিরঝিল থানায় আসামিদের হস্তান্তর করা হয়েছে। র‌্যাব-৮–এর এ ধরনের কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

আরও পড়ুনমাদারীপুরে ৩ খুন: মামলা হয়নি, আটকও নেই; পুরুষশূন্য এলাকায় বাড়ছে আতঙ্ক২৯ ডিসেম্বর ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ হজ হ ন খ ন গ র প ত র কর সরদ র র র সহয গ এল ক র ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

গভীর রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আমল মাসঊদের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার গভীর রাতে বিনোদপুরের মণ্ডলের মোড় এলাকায় তাঁর বাড়ির দরজার সামনে এ ঘটনা ঘটে। তবে এতে কেউ আহত হয়নি।

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সেখানে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়েছে। তবে কে বা কারা এটি করেছে, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগও কেউ করেনি। তাঁরা দুর্বৃত্তদের শনাক্তের চেষ্টা করছেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইফতিখারুল আমল মাসঊদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে ঘটনার পর তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘ফ্যাসিবাদী অপশক্তির জুলুম-নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম। কোনো রক্তচক্ষুর ভয়ংকর হুমকি অন্যায়ের প্রতিবাদ করা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। তবে তারা কখনো বাড়ি পর্যন্ত আসার ঔদ্ধত্য দেখাতে পারেনি। কিন্তু আজ আমার বাড়ির দরজায় গভীর রাতের অন্ধকারে হামলার সাহস দেখিয়েছে কাপুরুষের দল! এরা কারা? এদের শিকড়সহ উৎপাটনের দাবি জানাই।’

এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ভেবেছিলাম বাড়ির গেটে কিংবা গেটের বাইরে। কিন্তু গিয়ে দেখলাম একেবারে বাড়িতে হামলা হয়েছে। গতকালই ওনার অসুস্থ বাবা হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাসায় এসেছেন। জানি না শেষ কবে একজন শিক্ষকের বাড়িতে রাতের আঁধারে এভাবে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। আমরা শঙ্কিত, স্তম্ভিত।’

এদিকে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে এ সমাবেশের আয়োজন চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ