ছোট শিশুরা অল্পতেই জেদ করে। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে তা অতিরিক্ত হয়ে যায। সন্তান এমন আচরণ করলে কিছু বিষয় মাথায় রাখুন। তাহলেই তাদের রাগ-জেদ সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। যেমন-
অতিরিক্ত শাসন করবেন না
সন্তান খুব বেশি রেগে গেলে বা জেদ করলে তাকে উল্টো বকাবকি, মারধোর বা শাস্তি দেওয়ার কথা ভাবা ঠিক নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শিশুরা বিভ্রান্ত হয়ে এমন আচরণ করে, তাই চেষ্টা করবেন এমন সময়ে বাচ্চাকে কাছে নিয়ে ভালোবাসা ও স্নেহের সাথে শান্ত করতে। বকাবকি করলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
মাঝেমাঝে অবজ্ঞা করতে শিখুন
বেশিরভাগ বাবা-মাই সন্তান চাওয়া মাত্রই সব কিছু হাজির করেন তার সামনে। সহজেই পেয়ে গেলে শিশু অর্জন করার আনন্দ বা গুরুত্ব বুঝবে না। ফলে কখনও যদি চাওয়া মাত্র কিছু না পায় তখন জেদ দেখাতে শুরু করে। অভিভাবকের উচিত হবে সন্তানের চোখে চোখ না রেখে তার আচরণকে কোনোরকম গুরুত্ব না দেওয়া। মনোযোগ না পেলে হতাশ হয়ে এমনি জেদ কমে যাবে।
শিশুকে ব্যস্ত রাখুন
ফোন, ল্যাপটপ বা টিভি নয়, শিশুর পছন্দের কোনো খেলনা, আঁকার রং বা গল্পের রঙিন বই দিয়ে তাকে ব্যস্ত রাখুন। তাহলে সে রাগ- জেদের কারণ ভুলে অন্যদিকে মনোযোগ দেবে।
বাবা মাকে দেখে সন্তান শেখে
বাবা মায়ের মধ্যে সম্পর্ক বা বাড়ির অন্যান্যদের সাথে সবার কেমন ব্যবহার আচরণ তা দেখেই শিশুরা শেখে। তাই তাদের সামনে ঝগড়া চিৎকার চেঁচামেচি করবেন না।
অভিভাবকদের করণীয়
শিশু যখন রাগ বা জেদ দেখাতে শুরু করলে উল্টে রেগে গিয়ে শিশুদের গায়ে হাত তোলা বা বকাঝকা করা যাবে না। যতটা সম্ভব মাথা ঠান্ডা রেখে নরম স্বরে কথা বলতে হবে তাদের সাথে। জেদ করলে শিশুকে ভালোবেসে কাছে রাখুন। স্বাভাবিক হয়ে এলে তাকে ভালোভাবে বোঝানোর চেষ্টা করুন। তাকে বলুন, এমন আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, চার বছরের নিচে শিশুদের অতিরিক্ত জেদের কারণে মারধোর, তিক্ত কথাবার্তা বা কঠিন শাস্তি দেওয়া উচিত না। সাধারণত ৩ বছরের পর থেকেই শিশু তার নিজের মনের ভাব সঠিকভাবে প্রকাশ করতে পারে। এর ফলে রাগ বা জেদের সম্ভাবনা ধীরে ধীরে কমে আসে। তবে চার বছর বয়সের পরও যদি অতিরিক্ত রাগের কারণে শিশু নিজেকে বা অন্যকে আঘাত করতে থাকে, বা জেদ না কমে তবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সে শুধু নিজের রেকর্ডের জন্য খেলে, দলের জন্য নয়—সমর্থকদের বিদ্রুপ
এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছে আল-নাসর। তবে মাঠের ফলাফলের চেয়েও এখন আলোচনায় ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর প্রতিক্রিয়া। ম্যাচ শেষে তার ‘বিষণ্ণ ও নাটকীয়’ আচরণ উপহাস হিসেবে দেখছেন ফুটবলপ্রেমীরা।
বুধবার রাতে জেদ্দার আলিনমা স্টেডিয়ামে জাপানি ক্লাব কাওয়াসাকি ফ্রন্টেলের বিপক্ষে ৩-২ গোলে হারে সৌদি ক্লাব আল-নাসর। এই পরাজয়ে রোনালদোর দলের সামনে চলতি মৌসুমে আর কোনো ট্রফি জয়ের সুযোগ থাকল না। সেমিফাইনালের ম্যাচটিতে রোনালদো একটি সুবর্ণ সুযোগও নষ্ট করে। প্রতিপক্ষ দলের গোলরক্ষককে কাটিয়ে গেলেও শেষ মুহূর্তে বল জালে পাঠাতে ব্যর্থ হন পর্তুগিজ মহাতারকা। সমর্থকদের মতে, রোনালদোর গোল মিস করাটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।
ম্যাচ শেষে হতাশ রোনালদোকে দেখা যায় মাঠের কেন্দ্রবিন্দুতে দাঁড়িয়ে নিজে নিজে কথা বলতে ও আকাশের দিকে তাকিয়ে কিছুটা নাটকীয় ভঙ্গিতে হাত নেড়েছেন। তার এই অদ্ভুত আচরণ নিয়েই এখন সরগরম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।
একজন টুইটারে লিখেছেন, ‘রোনালদোর জন্য ‘ফুটবলকে ছেড়ে দাও, তার আগেই যে ফুটবল তোমাকে ছাড়বে’—এই কথাটা একেবারে যথার্থ।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘এই লোকটা এখন আর মজার না… শুধু অহঙ্কারে ভরা।’
তৃতীয় একজন মন্তব্য করেছেন, ‘মেসির বিশ্বকাপ জয় মানসিকভাবে শেষ করে দিয়েছে রোনালদোকে।’ অন্য একজন কটাক্ষ করে বলেন, ‘ক্যামেরার জন্য এমন মরিয়া চেষ্টাও এক রকম প্রশংসার দাবি রাখে—যদি না সেটা এত করুণ হতো।’
অনেকে আবার রোনালদোর স্বার্থপরতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন, ‘সে শুধু নিজের রেকর্ডের জন্য খেলে, দলের জন্য নয়।’
তবে এত সমালোচনার পরও অবসরের কোনো ইঙ্গিত দেননি রোনালদো। বরং সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়ে দলের প্রতি নিজের গর্বের কথা জানান তিনি। রোনালদো লেখেন, ‘সবসময় স্বপ্ন পূরণ হয় না। তবে আমি গর্বিত আমাদের পারফরম্যান্স নিয়ে। যারা আমাদের পাশে থেকেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। আপনাদের সমর্থন আমাদের অনেক কিছু বলে।’
এদিকে ম্যাচ শেষে আল-নাসরের কোচ স্তেফানো পিওলি দলের পারফরম্যান্সে ক্ষোভ ঝাড়েন। তিনি বলেন, ‘আমাদের কৌশলে সমস্যা ছিল, দ্বিতীয়ার্ধে ঝুঁকি নিয়েছিলাম। তবে যে পারফরম্যান্স হয়েছে, তা হতাশাজনক। প্রতিপক্ষ আমাদের চমকে দেয়নি, বরং নিজেদের দুর্বলতাই বড় ধাক্কা দিয়েছে।’
এই হারে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে পড়েছে আল-নাসর, আর প্রশ্নটা থেকে গেছে—রোনালদো আসলে কোথায় গিয়ে থামবেন?