কুমিল্লার চান্দিনায় চুরির অপবাদ দেওয়ায় নিজের শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করা অটোরিকশাচালক মো. সবুজ (৩০) মারা গেছেন। শুক্রবার দুপুর সোয়া একটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জাতীয় বার্ন ইউনিটে তার মৃত্যু হয়। নিহতের স্ত্রী খুশি আক্তার সমকালকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দুই সন্তানের জনক মো. সবুজ চান্দিনা উপজেলার বাড়েরা ইউনিয়নের গড়ামারা গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে। তিনি চান্দিনা উপজেলা সদরের বেলাশহর এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

পুলিশ জানায়, গত ১৩ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টায় চান্দিনা উপজেলা সদরের সরকারি হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় চুরির অপবাদ দিয়ে তার অটোরিকশা ছিনিয়ে নেওয়ায় নিজের শরীরের পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে সবুজ। এ সময় তার শরীরের ৩৫ শতাংশ পুড়ে যায়।  

স্থানীয়রা বলেন, চান্দিনা হাসপাতাল রোডের ইউনুছ মিয়ার অটোরিকশার গ্যারেজ ভাড়া নিয়ে সবুজসহ তিনজন ওই গ্যারেজে তাদের অটোরিকশাগুলো রাখত। পালাক্রমে তারা তিনজন পাহারাও দিত। ২০২৪ সালের ৭ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৩টায় ওই গ্যারেজ থেকে দুটি অটোরিকশা চুরি হয়। পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চোর শনাক্ত করে চলতি বছরের ৪ মার্চ তিনজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ১০ জনকে আসামি করে চান্দিনা থানায় মামলা করেন।  ওই মামলায় মানিক নামে একজনকে ধরে পুলিশে দেয় এলাকাবাসী। থানায় মামলা থাকাবস্থায় ওই রাতে এলাকার কয়েকজন মাতব্বর স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করার কথা বলে মানিককে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে উল্টো সবুজকে চোর সন্দেহ করে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে। সবুজের পক্ষে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ার কোনো সক্ষমতা না থাকায় সে ওই রায় মানেনি।

সবুজের স্ত্রী খুশি আক্তার বলেন, তার স্বামী চোর নয়, গরীবের জন্য আইন নাই, বিচার নাই। তারা (মাতব্বররা) চোর ধরে ছেড়ে দিছে, আর আমার স্বামীরে চুরির অপবাদ দিয়ে জরিমানা করে। আমার স্বামী এই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে নিজের গাঁয়ে আগুন লাগিয়ে মারা গেছে। আমার স্বামীর অটোরিকশাটিও ফিরিয়ে দেয়নি।

চান্দিনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.

জাবেদ উল ইসলাম জানান, চুরির অপমান সহ্য করতে না পেলে নিজের গায়ে আগুন সবুজ আত্মহত্যার চেষ্টা করে। শুক্রবার দুপুরে সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এ ঘটনায় সালিশে যারা ছিলেন তাদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আগ ন প ড় ম ত য চ র র অভ য গ চ র র অপব দ

এছাড়াও পড়ুন:

হান্নান এবার বিসিবির কোচিংয়ে

কোচিং ক্যারিয়ারে মনোযোগ দিতে জাতীয় দলের সাবেক নির্বাচক হান্নান সরকার বিসিবির চাকরি ছেড়েছিলেন। এরপর আবাহনী লিমিটেডে যোগ দিয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দলকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন। তাঁর কোচিং, খেলোয়াড় ম্যানেজমেন্ট এবং পরিকল্পনায় মুগ্ধ হয়েছিলেন অনেকেই। পরের ঢাকা লিগের জন্য এরই মধ্যে তাঁকে দলে ভিড়িয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। তবে নিজের ক্যারিয়ারকে আরও একধাপ এগিয়ে নিতে আবার বিসিবিতে যুক্ত হচ্ছেন তিনি।

চলতি মাসে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৭ দলের প্রধান কোচ হিসেবে যোগ দিচ্ছেন হান্নান। সামাজিক মাধ্যমে এক ভিডিওবার্তায় তিনি নিজেই জানিয়েছেন এই খবর। এসি রুমের আরামের জীবন ছেড়ে মাঠের ক্রিকেটে কাজ করে বেশি অবদান রাখার ইচ্ছা থেকে নির্বাচকের পদ ছেড়েছিলেন হান্নান। আমিনুল ইসলাম বুলবুলের বোর্ড তাঁকে তাঁর পছন্দের জায়গাতেই ফিরিয়েছে। বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্টের আওতায় কাজ করবেন যুবা ক্রিকেটারদের নিয়ে।

ভিডিওবার্তায় হান্নান বলেছেন, ‘‘নির্বাচকের দায়িত্ব থেকে সরে আসার কারণ যা ছিল, কোচিংয়ে পূর্ণ মনোযোগ দেওয়া, কোচিং দিয়ে দেশের ক্রিকেটে অবদান রাখা। সেই চিন্তা থেকে কোচিংয়ে এসে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ করলাম। আবাহনীর হয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি।’’

আরো পড়ুন:

এইচপি স্কোয়াডে মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের ছেলে সানদিদ

ছন্দে ফিরে ইবাদতের মুখে হাসি, উদযাপনে স‌্যালুট

‘‘তারপরই ক্রিকেট বোর্ডে যোগদানের ব্যাপারে বলছিলাম। সেটা এইচপি বা অন্য কোথাও হতে পারে। এইচপিতে হয়নি, কারণ অন্য কোচরা ওখানে কাজ করছেন। তাই ক্রিকেট বোর্ড আমাকে বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে ব্যবহার করতে চাচ্ছে। আমিও চাচ্ছিলাম, যে কোনো একটা জায়গায় কাজ করে বাংলাদেশ ক্রিকেটে অবদান রাখব।’’

বিকেএসপিতে শুরু হচ্ছে অনূর্ধ্ব-১৬ দলের চ্যালেঞ্জার সিরিজ। তিন দলের এই প্রতিযোগিতা থেকে গঠন করা হবে অনূর্ধ্ব-১৭ দল। তাদেরকেই এগিয়ে নেওয়ার কাজ করবেন হান্নান, ‘‘আপাতত অনূর্ধ্ব-১৭ দিয়ে শুরু করছি। সামনে আরও কিছুর পরিকল্পনা আছে। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট দিয়ে যে যাত্রা শুরু করছি, ইনশাআল্লাহ সামনে এক সময় এটি আরও বড় স্বপ্ন পূরণে বড় ভূমিকা রাখবে।’’

৪২ পেরোনো হান্নানের স্বপ্ন জাতীয় দলকেও কোচিং করানো। বয়সভিত্তিক দলের দায়িত্ব নিয়ে আরও একবার নিজের স্বপ্নের কথা বলেছেন তিনি।

ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ