ঢাকার বনানীতে বেসরকারি প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজকে ছুরিকাঘাত করে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার দিবাগত রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার হওয়া তিনজন হলেন আল-কামাল শেখ (১৯), আলভি হোসেন জুনায়েদ (১৯) ও আল-আমিন সানি (১৯)। তাঁদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি।

বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মেহেদী হাসান প্রথম আলোকে বলেন, অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

গত শনিবার বিকেল চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সামনে ‘ইঙ্গিতপূর্ণ’ হাসাহাসিকে কেন্দ্র করে জাহিদুল ইসলামকে (২২) হত্যা করা হয়। জাহিদুল বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহে।

এ হত্যার ঘটনায় বনানী থানায় গত শনিবার রাতে মামলা হয়। নিহত জাহিদুলের মামাতো ভাই মো.

হুমায়ুন বাদী হয়ে আটজনের নাম উল্লেখ করে ওই মামলা করেন।

আরও পড়ুনজাহিদুল হত্যা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৫ নেতাকে দায়ী করলেন ছাত্রদল সভাপতি১৮ ঘণ্টা আগে

জাহিদুলকে ছুরিকাঘাত করে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। গতকাল রোববার বেলা ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কার্যালয়ের সামনে জাহিদুলের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জানাজা শেষে মরদেহ তাঁর গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয়।

গতকাল দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম দাবি করেন, জাহিদুল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। এ হত্যাকাণ্ডের জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাঁচ নেতাকে দায়ী করেন তিনি।

আরও পড়ুনজাহিদুল হত্যা নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালাচ্ছে ছাত্রদল: উমামা ফাতেমা১১ ঘণ্টা আগে

রাকিবুলের এ অভিযোগকে ‘ঘৃণ্য মিথ্যাচার’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সংগঠনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা গতকাল রাতে সংবাদ সম্মেলন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে ছাত্রদল বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।

আরও পড়ুনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাহিদুল ইসলামের গায়েবানা জানাজা১০ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুন‘সন্তানই যদি না থাকে বাঁইচ্যা থাইকা কী লাভ’১৬ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল ল ইসল ম গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ