পুলিশের ওপর হামলা জামায়াত-শিবিরের, আহত ২
Published: 22nd, April 2025 GMT
বিয়ানীবাজারে জামায়াত ও শিবির নেতাকর্মীর হামলার শিকার হয়ে পুলিশের দুই সদস্য আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার বিকেলে উপজেলার ঘুঙ্গাদিয়া গ্রামে উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আবুল খয়েরের বাড়িতে আসামি ধরতে গেলে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় দুই পুলিশ সদস্যকে জিম্মি করে রাখা হয়। খবর পেয়ে প্রায় ৫ ঘণ্টা পর তাদের উদ্ধার করে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ।
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- বিয়ানীবাজার থানার উপপরিদর্শক সৌরভ ও কনস্টেবল দেলোয়ার হোসেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ এপ্রিল পৌর শহরের মাঝ বাজারে মতিন নামের এক যুবককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করেন পৌরসভার নয়াগ্রামের জামিল আহমদ। এ ঘটনায় ওই দিন আব্দুল মতিন বাদী হয়ে বিয়ানীবাজার থানায় মামলা করেন। মামলায় একমাত্র আসামি করা হয় ঘুঙ্গাদিয়া গ্রামের জামিল আহমদকে।
গোপন সংবাদ পেয়ে পুলিশের এসআই সৌরভ ও কনস্টেবল দেলোয়ার হোসেন আসামি জামিল আহমদকে গ্রেপ্তারের জন্য ঘুঙ্গাদিয়া গ্রামে যান। এ সময় পুলিশ জানতে পারে, আসামি জামিল আহমদ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির আবুল খয়েরের কেয়ারটেকার রুবেল আহমদের ঘরে অবস্থান করছেন। অভিযান চালাতে গেলে আবুল খয়ের তাদের বাধা দেন। বিনা অনুমতিতে অভিযান কেন করা হবে, সেটিও জানতে চান। একপর্যায়ে তিনি উপজেলা জামায়াত ও শিবিরের নেতাকর্মীকে বিষয়টি জানালে নেতাকর্মীরা আবুল খয়েরের বাড়ি ঘেরাও করে এসআই সৌরভ ও কনস্টেবল দেলোয়ারকে মারধর করেন।
খবর পেয়ে বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফ উজ্জামান এবং উপপরিদর্শক (তদন্ত) জুবেদ আলীসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে জিম্মিদশা থেকে দুই পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, হঠাৎ চিৎকার শুনে তিনি সেখানে গিয়ে দেখতে পান, দুই পুলিশ সদস্য পৌর জামায়াতের নায়েবে আমির আবুল খয়েরের বাড়িতে বসে আছেন। কিছুক্ষণের মধ্যে শত শত লোক এসে জড়ো হন। তারা পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা করেন। এমনকি মারধরও করেন। পরে জামায়াতের আমির তাদের ভেতরে নিয়ে যান। খবর পেয়ে থানার ওসি এলে রাত ৯টার দিকে তাদের ছাড়া হয়। শুনেছি, পুলিশ আসামির মোবাইল ট্র্যাকিং করতে করতে জামায়াত নেতার বাড়ি পর্যন্ত চলে আসে। একপর্যায়ে তারা বুঝতে পারে, ওই বাড়ির কেয়াটেকার রুবেলের রুমেই জামিলের অবস্থান।
এ বিষয়ে পৌর জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির আবুল খয়ের সমকালকে বলেন, তার গাড়িচালক বাড়িতে পুলিশ আসার বিষয়টি তাকে জানান। এর পর তিনি পুলিশ সদস্যদের কাছে তার বাড়িতে আসার কারণ জানতে চান। তখন ওই দুই পুলিশ সদস্য তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। সংবাদ পেয়ে এলাকার লোকজন তার বাড়িতে চলে আসেন। তখন এলাকাবাসী অনেকটা উত্তেজিত হয়ে উঠলে তিনি ওই দুই পুলিশ সদস্যকে তার ঘরে নিরাপদে রাখেন। পরে ঘটনাস্থলে থানার ওসি ও উপপরিদর্শক (তদন্ত) এলে ওই পুলিশ সদস্যরা তার কাছে ভুল স্বীকার করেন। এমনকি তার সঙ্গে খারাপ আচরণের জন্য ক্ষমাও চান।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, উপপরিদর্শক সৌরভ ও কনস্টেবল দেলওয়ারকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন মারধর করেছে। পরে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশের একটি দল স্থানীয় জামায়াত নেতার বাড়ি থেকে ওই দুই পুলিশ সদস্যকে জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে বিয়ানীবাজার থানার ওসি আশরাফ উজ্জামান সমকালকে বলেন, আমাদের লোকজন সেখানে অভিযানে গিয়েছিল। এ সময় এলাকাবাসীর সঙ্গে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম দ ই প ল শ সদস য ত কর ম উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে সিঙ্গাপুর হাইকমিশনের সাক্ষাৎ
ঢাকাস্থ সিঙ্গাপুর হাইকমিশনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মি. মিচেল লি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) ঢাবি উপাচার্যের কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে হাইকমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি ধান্যা লিঙ্গেশ, হিউ কক সিয়াং, ঢাবি উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মো. হাসান আব্দুল্লাহ তৌহিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
উত্তরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে হামলা, আহত ৫
ছাত্রদলের দেওয়া বিবৃতি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকি: ডুজা
সাক্ষাৎকালে তারা পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সিঙ্গাপুরের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে যৌথ সহযোগিতামূলক শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণের সম্ভাব্যতার নিয়ে আলোচনা করেন।
সিঙ্গাপুর হাইকমিশনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মি. মিচেল লি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বুদ্ধিবৃত্তিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য শিক্ষা সহযোগিতা জোরদার করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস এবং এর শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম সম্পর্কে চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে অবহিত করেন।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন এবং এর শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমের প্রতি গভীর আগ্রহ প্রকাশের জন্য অতিথিদের ধন্যবাদ জানান।
পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স এর উদ্যোগে আয়োজিত অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে সিঙ্গাপুর হাইকমিশনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মি. মিচেল লি ‘মেকিং ফ্রেন্ড অ্যান্ড স্টেইং রেলিভ্যান্ট: সিঙ্গাপুরস ফরেন পলিসি এক্সপ্লেইন্ড’ শীর্ষক বিশেষ বক্তব্য দেন।
ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স অফিসের পরিচালক অধ্যাপক ড. সামসাদ মর্তুজার সভাপতিত্বে এতে ঢাবি উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ বক্তব্য রাখেন।
অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুরের বৈদেশিক নীতি ও কূটনৈতিক কৌশলসমূহ তুলে ধরে চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মি. মিচেল লি বলেন, “সিঙ্গাপুর বিশ্ব রাজনীতি, বৈশ্বিক অর্থনীতি ও বৈশ্বিক সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে। সিঙ্গাপুরের এই সফলতার পেছনে রয়েছে প্রাণবন্ত অর্থনীতি, শক্তিশালী প্রতিরক্ষা, সামাজিক স্থিতিশীলতা ও সংহতি, বৈশ্বিক বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব, আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং বিশ্বাসযোগ্য ও সামঞ্জস্যপূর্ণ অংশীদারিত্বের নীতি।”
শিক্ষা, গবেষণা, অর্থনীতি, বাণিজ্যসহ দ্বিপাক্ষিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদার করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এবং সিঙ্গাপুর একযোগে কাজ করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী