আরইবির করা মামলা প্রত্যাহার ও চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহালের দাবিতে স্মারকলিপি
Published: 25th, April 2025 GMT
সারা দেশের গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে সরকারি বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পবিস)। এসব সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে দুই দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। এর মধ্যে একটি দাবি পূরণে সরকারি সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। একই সঙ্গে সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামে চলমান মামলা প্রত্যাহার ও চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
এ দাবি জানিয়ে বিভিন্ন সমিতির ২৮ হাজার ৩০৭ জনের স্বাক্ষরসহ একটি স্মারকলিপি বৃহস্পতিবার জমা দেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা বরাবর আবেদনটি তাঁর দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া স্মারকলিপিটির অনুলিপি জমা দেওয়া হয়েছে সরকারের আরও কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে। এতে অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন করে আরইবি ও সমিতি একীভূত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানানো হয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, গত ১৬ অক্টোবর আরইবি কর্তৃক ১০ জন কর্মকর্তা বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত হন এবং একই রাতে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। পরদিন সকাল থেকে শুরু হয় কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার এবং আরও ১৪ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এই ঘটনাগুলো পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশার জন্ম দেয়, যার ফলে কিছু এলাকায় সাময়িক বিদ্যুৎ–বিভ্রাটের ঘটনাও ঘটে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড মামলা, চাকরিচ্যুতি, বদলি, সাময়িক অব্যাহতিসহ বিভিন্ন হয়রানিমূলক পদক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে। এ স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর দেওয়ার কারণেও সম্প্রতি মাদারীপুর ও রাজশাহীতে কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, আরইবির দমন-পীড়ন বন্ধ এবং সংস্কার আন্দোলনের কারণে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার ও চাকরিচ্যুত সহকর্মীদের চাকরিতে পুনর্বহালের জন্য গত জানুয়ারিতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৩০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর গণস্বাক্ষরসহ আবেদন করে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো খুবই মানবেতর জীবন যাপন করছে। ক্ষতিগ্রস্তদের ছেলেমেয়ের পড়াশোনাও চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। তাই মানবিক দিক বিবেচনায় মামলা প্রত্যাহার ও চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহালের জন্য বিদ্যুৎ উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেন তাঁরা।
আরও পড়ুনব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ, সাড়ে ৭ লাখ গ্রাহকের ভোগান্তি১৭ অক্টোবর ২০২৪গত বছরের জানুয়ারি থেকে দুই দফা দাবিতে টানা কর্মবিরতিসহ বিভিন্ন সময় নানা কর্মসূচি পালন করেছে সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দুই দফার মধ্যে আছে অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন করে আরইবি ও সমিতি একীভূত করা এবং সমিতির অনিয়মিত কর্মীদের স্থায়ী চাকরিতে নেওয়া। একপর্যায়ে তাঁদের একজনের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে গত অক্টোবরে বিভিন্ন জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেন তাঁরা। এর পর থেকেই কারও কারও বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাসহ বিভিন্ন রকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয় আরইবি।
আরও পড়ুনকুমিল্লায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ১৫৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ৫১৮ অক্টোবর ২০২৪.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে, নিম্নমুখী চালের দাম
ঈদের বন্ধের আমেজ কাটতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে চট্টগ্রামের পাইকারি ও খুচরা বাজারগুলো। ক্রেতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারগুলোতে বেড়েছে সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের সরবরাহ। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক দিনের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে সবজির দাম। পেঁয়াজ, রসুন ও চালের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও নিম্নমুখী।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার পর নগরের কাঁচাবাজারে সবজির সরবরাহ কমে যায়। ফলে দাম ছিল কিছুটা বাড়তি। গত রোববার ও সোমবারের দিকে নগরের আড়তগুলোতে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে। অধিকাংশ সবজির দামও ৪০ টাকার আশপাশে ছিল। তবে গত মঙ্গলবার থেকে আবারও বাজারে পুরোদমে সবজির সরবরাহ শুরু হয়েছে। যার কারণে দাম কমতে শুরু করেছে।
আজ শুক্রবার নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজারের পাইকারি আড়তে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২০ থেকে ৪০ টাকা দরে। বেশির ভাগ সবজির দাম প্রতি কেজি ১০ থেকে ৩৫ টাকা। তবে খুচরা বাজারগুলোতে প্রায় দ্বিগুণ দামে সবজি বিক্রি হতে দেখা যায়। নগরের বহদ্দারহাট, চকবাজার, সাব এরিয়া ও কাজির দেউড়ি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব বাজারে অধিকাংশ সবজির দাম ৬০ টাকার বেশি। লাউ, মিষ্টিকুমড়া ও ফুলকপির দাম কিছুটা কম। এসব সবজির দাম ৫০ টাকার আশপাশে। খুচরা বাজারগুলোতে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা কেজি দরে। পরিবহন খরচ ও আগে কেনার অজুহাতে বাড়তি দাম নিচ্ছেন বিক্রেতারা। রিয়াজউদ্দিন বাজারের আড়তদার নুরুল ইসলাম বলেন, বাজারে সব সবজির দাম কম। কিন্তু খুচরা ব্যবসায়ীদের কারণে ভোক্তাদের ভোগান্তি হচ্ছে। আড়তের দামের দ্বিগুণ দামে তাঁরা সবজি বিক্রি করছেন।
সবজির বাজারের পাশাপাশি পেঁয়াজ, রসুন ও চালের দামও নিম্নমুখী। খাতুনগঞ্জের পাইকারি আড়তে আজ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৫২ টাকা দরে। খুচরা পর্যায়ে দাম ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি। অন্যদিকে রসুনের কেজি আড়তে ছিল ৮৫ থেকে ১১০ টাকা। খুচরায় সেটি ১০০ থেকে ১৩০ টাকা।
পাহাড়তলী চালের আড়তে মোটা চাল (গুটি, স্বর্ণা) কেজিপ্রতি ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে জিরাশাইল ৭২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত তিন দিন আগ থেকে চালের বাজার কিছুটা নিম্নমুখী বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) চালের দাম কমেছে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন বলেন, চালের সরবরাহ যথেষ্ট আছে। চালের দাম বাড়ার আশঙ্কা নেই এখন।