আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার ফয়সালা হওয়ার আগে নির্বাচন নয়: এনসিপি
Published: 25th, April 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার বলেছেন, আওয়ামী লীগকে আইন করে নিষিদ্ধ করতে হবে। আগামী নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে। তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করতে হবে। এই দাবির ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। যাঁরা রিফাইন্ড (পরিশুদ্ধ) আওয়ামী লীগকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করছেন, তাঁরা দিবাস্বপ্ন দেখা বন্ধ করুন।
আজ শুক্রবার বিকেলে রামপুরায় এনসিপির গুলশান জোন আয়োজিত আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে সরোয়ার তুষার এ কথা বলেন।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গুপ্ত হত্যাকারী দলে পরিণত হয়েছে। তাদের সমর্থকদের উদ্দেশে বলতে চাই, আপনারা শেখ হাসিনাকে বর্জন করুন, তাঁর বিচার চান। তাহলে দেশের জনগণ আবারও সমাজে আপনাদের স্থান করে দেবে।’
পুলিশকে উদ্দেশ করে সরোয়ার তুষার বলেন, ‘জুলাইয়ে আপনারা যা করেছেন, তা থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় হচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতাদের গ্রেপ্তার করে জেলে ঢোকান। আপনাদের নাকের ডগায় আওয়ামী লীগ মিছিল করলে আমরা মনে করতে বাধ্য হব, আপনারা তাদের প্রশ্রয় দিচ্ছেন।’
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব হবে না বলে মন্তব্য করেন এনসিপির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে কারচুপি হলে কমিশনারদের যেন শাস্তি না দেওয়া যায়, সে বিষয়ে তদবির শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। এত ভয় কেন আপনাদের। আপনারা কি আগামী নির্বাচনে কারচুপির চিন্তা করছেন। একটি বিশেষ দলের সঙ্গে ইসির বক্তব্য পুরোপুরি মিলে যাচ্ছে। আমাদের সন্দেহ হয়, এই নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব কি না। এ জন্য আমরা ফ্যাসিবাদী আইন পরিবর্তনের কথা বলেছি।’
বিএনপির উদ্দেশে সরোয়ার বলেন, যাঁরা ৩৬ দিনের সমালোচনা করেন, তাঁরা এটার কারণেই রাজনীতি করতে পারছেন। সুতরাং ৩৬ দিনকে খোঁটা দেবেন না।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাইফুল্লাহ হায়দার, সংগঠক ইমরান ইমন প্রমুখ। সমাবেশ শেষে আওয়ামী লীগের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন এনসিপির নেতা–কর্মীরা। বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে রামপুরার ডিআইটি রোডে বিকেল সাড়ে চারটা থেকে দীর্ঘ যানজট দেখা যায়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন এনস প র আওয় ম আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।