ফিলিস্তিনে নির্বিচার মুসলিম গণহত্যা বন্ধের দাবিতে মহাসমাবেশ
Published: 26th, April 2025 GMT
ফিলিস্তিনে নির্বিচার মুসলিম গণহত্যা বন্ধ, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন, অবিলম্বে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি, গণহত্যায় জড়িত ইসরায়েলিদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে মহাসমাবেশ করেছে আধিপত্যবাদবিরোধী মুসলিম ঐক্য মঞ্চ।
‘ম্যাস গ্যাদারিং ফর প্যালেস্টাইন’ নামে আজ শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাব ও আশপাশের এলাকায় এ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। এতে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে পল্টন হয়ে দৈনিক বাংলা মোড় পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ভারতের মুসলিমদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধ, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়া ও বাংলাদেশে ইসরায়েলি পণ্য ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধের দাবি জানানো হয়। এসময় তাঁরা ইসরায়েলবিরোধী নানা ম্লোগান দেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, মুসলমানদের ওপর ইসরায়েলের চরম বর্বরতা ও নৃশংসতা আর সহ্য করা যায় না। ইসরায়েলের এ বর্বরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা অব্যাহত রাখতে হবে। বক্তারা বলেন, যত দিন প্রাণ থাকবে, ফিলিস্তিনের নিপীড়িত মুসলিমদের পক্ষে কথা বলা বন্ধ করা হবে না।
বক্তারা অভিযোগ করেন, ইসরায়েলের আধিপত্য এখন আর শুধু মধ্যপ্রাচ্যে সীমাবদ্ধ নয়; দক্ষিণ এশিয়াতেও এর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চলছে। বক্তারা বলেন, ভারতের মোদি সরকার দক্ষিণ এশিয়ায় ইসরায়েলি ধাঁচের আধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে। এর অংশ হিসেবে সম্প্রতি ভারতের লোকসভায় মুসলিমবিরোধী ও অসাংবিধানিক ওয়াক্ফ বিল পাস হয়েছে। লোকসভায় এই বিল বাতিল ঘোষণা করার দাবি জানান তাঁরা।
কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। এতে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে পল্টন হয়ে দৈনিক বাংলা মোড় পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ