রুপালি জগতের ঝলমলে আলোর ঝলকানির পেছনে অন্ধকার দিকও রয়েছে। প্রায়ই কাস্টিং কাউচ, যৌন হেনস্তা, স্বজনপ্রীতিসহ নানা অভিযোগ শোনা যায়। এ নিয়ে অনেক তারকা অভিনয়শিল্পী তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। এবার বলিউড পরিচালক সাজিদ খানের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুললেন হিন্দি টিভি সিরিয়ালের জনপ্রিয় অভিনেত্রী নবীনা বোলে।
শুভজিৎ ঘোষের ইউটিউব চ্যানেলে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছিলেন নবীনা। এ আলাপচারিতায় কাস্টিং কাউচের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানান ‘ইশকবাজ’ তারকা। নবীনা বলেন, “আমার জীবনে ভয়ংকর একজন মানুষ এসেছিলেন, যার সঙ্গে আমি কখনো দেখা করতে চাই না, তার নাম সাজিদ খান। গ্ল্যাডরার্গের পরে সে এসেছিল এবং নারীদের অসম্মান করার সব সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল।”
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নবীনা বলেন, “আমি তার ফোন কল পেয়ে ভীষণ উচ্ছ্বসিত ছিলাম। তারপর আক্ষরিক অর্থে তিনি বলেন, ‘তুমি কেন তোমার পোশাক খুলছো না! অন্তর্বাস পরে বসো, আমি দেখতে চাই তুমি কতটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করো।’ এটা ২০০৪-২০০৬ সালের ঘটনা।”
আরো পড়ুন:
মা হতে যাচ্ছেন শিরিন
কাশ্মীরে হামলা: পাকিস্তানি অভিনেতার সিনেমা মুক্তিতে বাধা
সাজিদ খানের অফিসে এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার স্মৃতিচারণ করে নবীনা বলেন, “তার কথা শুনে চমকে উঠেছিলাম। বুঝতে পারছিলাম না কী উত্তর দেব। এরপর সাজিদ বলেন, ‘কেন? তুমি কি স্টেজে বিকিনি পরো না? তাহলে সমস্যা কী?’ বুঝতে পারছিলাম না কী উত্তর দেব। এরপর বলি, আপনি যদি দেখতে চান, তবে আমাকে বাড়ি গিয়ে বিকিনি নিয়ে আসতে হবে। কিন্তু এই মুহূর্তে আমি পোশাক খুলতে পারব না। কোনোভাবে সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসি। এরপর সে আমাকে অন্তত ৫০ বার ফোন করে জিজ্ঞাসা করেছে যে, আমি কোথায় পৌঁছেছি এবং কেন আসছি না।”
এ ঘটনার এক বছর পর, নবীনা যখন ‘মিসেস ইন্ডিয়া’-তে অংশ নেন, তখন সাজিদ আবারো তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ বিষয়ে নবীনা বলেন, “সে আমাকে আবারো ফোন করে জিজ্ঞাসা করেছিল, ‘তুমি কী করো? একটি চরিত্রের জন্য আমার সঙ্গে তোমার দেখা করা উচিত।’ তারপর আমার মনে হয়েছিল, ‘এই লোকটি এত বেশি নারীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে যে, তার মনেও নেই এক বছর আগে সে আমাকে তার অফিসে ডেকেছিল এবং সে আমার সঙ্গে চূড়ান্ত খারাপ ব্যবহার করেছিল।”
এবারই প্রথম নয় ২০১৮ সালে পরিচালক সাজিদ খানের বিরুদ্ধে একাধিক নারী যৌন হেনস্তার অভিযোগ তুলেন। ‘মি-টু’ আন্দোলনের অংশ হিসেবে অভিযোগ করেছিলেন—অভিনেত্রী র্যাচেল হোয়াইট, শার্লিন চোপড়া, সহকারী পরিচালক সালোনি চোপড়া, সাংবাদিক করিশমা উপাধ্যায়। এ তালিকায় এবার যুক্ত হলেন নবীনা।
নবীনার জন্ম ও বেড় ওঠা মুম্বাইয়ে। ভারতনাট্যমে প্রশিক্ষণ নেন তিনি। টিভিতে অভিষেকর আগে মডেলিং করেন। অনেক প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির পণ্যের বিজ্ঞাপনে দেখা গেছে তাকে। ২০০৭ সালে টিভি সিরিয়ালে অভিষেক ঘটে। ‘মিলে জাব হাম তুম’, ‘জিনি আউর জুজু’, ‘ইশকবাজ’-এর মতো জনপ্রিয় ধারাবাহিকে অভিনয় করে খ্যাতি কুড়ান এই অভিনেত্রী। বেশ কয়েকটি ওয়েব সিরিজেও অভিনয় করেছেন নবীনা।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র
এছাড়াও পড়ুন:
মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকতে না পেরে বিদেশ চলে যান পিয়া বিপাশা
লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে পা রাখেন পিয়া বিপাশা। এরপর অভিনয় করেছেন মিউজিক ভিডিও, নাটক ও সিনেমায়। কিন্তু হুট করেই নাই হয়ে গেলেন। পরে জানা গেল অভিনেত্রী আমেরিকায়। গেল পাঁচ বছর সেখানেই বাস করছেন তিনি। সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে প্রবাসজীবনসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
পিয়া বিপাশা জানান, একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাস শুরু করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের সঙ্গে তাঁর প্রেম ও ভালোবাসা তৈরি হয়। তারপর তাঁরা বিয়ে করেন। দুজনে মিলে বিয়ে করলেও আনুষ্ঠানিকতা সারেননি। চলতি বছরের শেষ দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে নেওয়ার ইচ্ছা।
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘বাংলাদেশে ভালো লাগত না। কারণ, লবিং ছাড়া কাজ হতো না। ভালো একটা সিনেমা করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর হয়নি। এরপর আমার মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছাই নষ্ট হয়ে যায়। আমি আসলে কাজ করতে চেয়েছিলাম টাকা কামানোর জন্য। কাজ না করতে পারলে টাকা কামাব কী করে। তাই সিদ্ধান্ত নিই অন্য কিছু করার।’
বিপাশার কথায়, ‘টাকা রোজগারের জন্য আমি বিনোদন অঙ্গনে কাজ করেছিলাম। কারণ, আমার একটা মেয়ে ছিল। মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকার বিষয় ছিল। পরে দেখলাম, যেভাবে কাজ হয়, আমাকে দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, আমেরিকায় চলে আসার। এখানে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিই। অনেক টাকাও আয় করছি।’
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘সত্যি বলতে এখন আমার এমন অবস্থা, টাকা ইনকাম না করলেও হয়। যতটুকুই করি, আমার মেয়ে ও হাজব্যান্ড ওরাই বলে। আমার এখন আর কোনো স্বপ্ন নেই। যা চেয়েছি, গত পাঁচ বছরে সবই পেয়েছি। টাকাপয়সা, সুন্দর জীবন, প্রতিষ্ঠিত হওয়া, ভালো স্বামী—সবই আমার হয়েছে। টাকা নিয়ে এখন কোনো চিন্তা নেই আমার—যা আয় করি, তা ব্যয় করার সময় পাই না।’
পিয়া বিপাশা জানান, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে বিভিন্ন পণ্যের যেসব পোস্ট করেন, তার জন্য বেশ ভালো সম্মানী পান। তাঁর দাবি, এই সম্মানী কখনো দুই হাজার ডলার, আবার কখনো তিন হাজার ডলারের মধ্যে।
২০১৩ সালে ‘দ্বিতীয় মাত্র’ নাটকে তাহসান খানের বিপরীতে অভিনয় করেন। ছোটবেলায় রূপকথার বই পড়তে পছন্দ করতেন। বই পড়ার সময় গল্পের নায়িকার চরিত্রে নিজেকে কল্পনাও করতেন। বড় পর্দায়ও অভিনয় করেছিলেন। ‘রুদ্র: দ্য গ্যাংস্টার’ নামের সেই ছবি মুক্তি পায়। এরপর ‘রাজনীতি’ ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। পরে সেই ছবিতে পিয়া বিপাশার পরিবর্তে অপু বিশ্বাস অভিনয় করেন।