গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় রাতভর নির্যাতনে নুরুল ইসলাম নামে এক অটোরিকশাচালক হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাতে উপজেলার ভাতারিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শনিবার দুপুরে তাঁর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের স্ত্রীর দাবি, নির্যাতন করে হত্যার পর নুরুলকে একটি কক্ষে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়।

নুরুল ইসলাম গাইবান্ধা সদর উপজেলার মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। তিনি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই এলাকায় একটি ভাড়া কক্ষে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন।

রনি হোসেন নামে এক অটোরিকশাচালকের দাবি, শুক্রবার বিকেলে কালিয়াকৈরের চন্দ্রায় নায়াগ্রা পোশাক কারখানার সামনে থেকে নুরুলসহ তিনজন তাঁর অটোরিকশা ভাড়া নেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রনিকে নিয়ে আটাবহ ইউনিয়নের মরকাবহ এলাকায় যান তারা। সেখানে রনিকে বেঁধে ডোবায় ফেলে অটোরিকশা নিয়ে পালায় তিনজন। পরে রনি কোনো রকমে বাঁধন খুলে দৌড়ে সড়কে উঠে স্থানীয়দের সহায়তা চান। কয়েক ব্যক্তি অটোরিকশা নিয়ে ধাওয়া করেন। দু’জন পালিয়ে গেলেও ডোবাইল ব্রিজের কাছে ধরা পড়েন নুরুল। সেখানে তাঁকে মারধর করেন স্থানীয়রা। পরে নুরুলকে কালিয়াকৈর থানায় নিয়ে যান আব্দুল কাদের ও রনি। ওসি তাদের ধমক দিয়ে তাঁকে আগে হাসপাতালে নিতে বলেন। সেখান থেকে তারা নুরুলকে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। কিন্তু চিকিৎসক ভর্তি না করে ফিরিয়ে দেন। সাড়ে ১১টার দিকে নুরুলকে ভাতারিয়ায় নিজ বাসায় নিয়ে একটি আমগাছে রশি দিয়ে বেঁধে রাখেন কবীর। এ সময় রনি ও কাদের সেখানে ছিলেন।

রনি বলেন, ভোরে শৌচাগারে যাওয়ার কথা বললে নুরুলের বাঁধন খুলে দেওয়া হয়। এ সময় তিনি দৌড়ে একটি কক্ষে ঢুকে দরজা বন্ধ করে গলায় রশি বেঁধে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে পড়েন। রনি, কাদের ও কবীর একটি ছুরি দিয়ে স্টিলের দরজা কেটে ওই কক্ষে ঢুকে নুরুলকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। এর পর তারা বিষয়টি পুলিশকে জানান। তবে কবীর হোসেন ও আব্দুল কাদেরের দাবি, নুরুলকে তারা নির্যাতন করেননি।

বিকেলে স্বামীর মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন রুপালি খাতুন। এ সময় তিনি মোবাইল ফোনে সমকালকে বলেন, ‘আমার স্বামী শুক্রবার বিকেলে এক আত্মীয়ের বাড়ি যাবে বলে বের হন। রাত ১০টার দিকে মোবাইল ফোনে জানান, তিনি দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন। এর পর থেকে তাঁর মোবাইলে কল যায়নি। পরদিন সকালে কালিয়াকৈর থানা থেকে ফোনে জানানো হয়, আমার স্বামী মারা গেছেন। রাতভর নির্যাতন করে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।’

কালিয়াকৈর থানার ওসি রিয়াদ মাহমুদ বলেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হত য ন র লক উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

হাত-পা বাঁধা ও কম্বলে প্যাঁচানো মরদেহ উদ্ধার

মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার একটি ডোবা থেকে হাত-পা বাঁধা ও কম্বল দিয়ে প্যাঁচানো অবস্থায় এক অটোরিকশা চালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকাল ৭টার দিকে সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের রতনপুর আনসার ক্যাম্পের পাশের ডোবা থেকে মরদেহটি উদ্ধার হয়।

আরো পড়ুন:

উত্তর বাড্ডায় বদ্ধ ঘরে মিলল নারী-পুরুষের মরদেহ

নিখোঁজের ১২ দিন পর কৃষকের গলিত মরদেহ উদ্ধার

মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম মজিবর মাঝি (৪৫)। তিনি বরিশাল জেলার হিজলা থানার বাসিন্দা। মুন্সীগঞ্জ সদরের রামপাল ইউনিয়নের শান্তিনগর এলাকায় থেকে তিনি অটোরিকশা চালাতেন। গত শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) থেকে তার সন্ধান পাচ্ছিলেন না স্বজনরা।

নিহত মজিবরের ছেলে মো. রাসেল বলেন, “বাবা মুন্সীগঞ্জে একা থাকতেন। তিনি স্থানীয় একটি গ্যারেজ থেকে ভাড়ায় অটোরিকশাটি চালাতেন। গত শুক্রবার মাওয়া যাওয়ার কথা বলে তিনি বের হন। এরপর আর ফেরেননি। গতকাল গ্যারেজ মালিক ফোন দিয়ে জানালে, আমি থানায় সাধারণ ডায়েরি করি। আজ সকালে বাবার মরদেহ ডোবায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়। অটোরিকশাটির কোনো হদিস নেই।”

মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম সাইফুল আলম বলেন, “মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”

ঢাকা/রতন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ