যাত্রীবাহী মাইক্রোবাস ভেবে পুলিশের গাড়িতে ডাকাতির চেষ্টা, দুজন গ্রেপ্তার
Published: 28th, April 2025 GMT
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায় সড়কে পুলিশের গাড়িতে ডাকাতির চেষ্টা চালানোর সময় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তিনজন পালিয়ে যান। গতকাল রোববার দিবাগত রাত সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার ২ নম্বর পালশা ইউনিয়নের ধলিহার খাঁ পুকুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তার দুই ব্যক্তি হলেন এমদাদুল হক (৪৯) ও আজিজার রহমান (৩৮)। তাঁদের মধ্যে এমদাদুল হক জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার বিয়ালা গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে এবং আজিজার রহমান একই উপজেলার চাকলমা নিমেরপাড়া এলাকার মৃত সৈয়দ আলীর ছেলে। এমদাদুল হকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ডাকাতির ১২টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পলাতক তিনজন হলেন জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার জগডুম্বর গ্রামের হেলাল উদ্দিন (২৮), ক্ষেতলাল উপজেলার বড়তাড়া কুঠিপাড়া এলাকার আবদুস সাত্তার (৪৪) এবং বগুড়ার শেরপুর উপজেলার মো.
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাতে ঘোড়াঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল পিকআপ ভ্যান নিয়ে ডুগডুগি বাজার এলাকায় টহলে যায়। রাত সাড়ে তিনটার দিকে টহল শেষে থানায় ফেরার পথে ধলিহার খাঁ পুকুর এলাকায় পৌঁছালে পাঁচজন দেশি অস্ত্রসহ রাস্তার ওপর অবস্থান নেন। পুলিশ তাঁদের ধাওয়া করলে তিনজন পালিয়ে যান এবং দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে দুটি হাঁসুয়া, একটি বড় রশি ও সাতটি লাঠি জব্দ করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা স্বীকার করেছেন, পুলিশের গাড়িটিকে যাত্রীবাহী মাইক্রোবাস ভেবে ডাকাতির চেষ্টা করেন।
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল হক বলেন, সড়কে ডাকাতির প্রস্তুতির সময় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ডাকাতির চেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে। আজ সকালে তাঁদের দিনাজপুর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পলাতক তিনজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপজ ল র
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’
ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।
হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।
আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’
গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’
আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই।