চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে রইস হত্যাকারিদের গ্রেপ্তার দাবি
Published: 28th, April 2025 GMT
সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ রইস উদ্দিন হত্যার সঙ্গে জড়িতদের চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ এই কর্মসূচি থেকে সংগঠনের নেতাকর্মীরা এ দাবি করেন।
বক্তারা বলেন, আমাদের নেতা রইসের হত্যাকাণ্ড সম্পূর্ণ পরিকল্পিত। মব জাস্টিসের কারণে এমন পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন তিনি। এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে একটি উগ্রবাদি অপশক্তি কাজ করছে। পুলিশের অবহেলাও রয়েছে।
তারা বলেন, ২০১৩ সালের নুরুল ইসলাম ফারুকীর হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়ায় উগ্র গোষ্টি আবারও মাথাছাড়া দিয়ে উঠছে। তারাই নৃশংসভাবে রইসকে খুন করেছে। তাকে যেভাবে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে তা মধ্যযুগের বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। ২৬ এপ্রিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত ম্যাস গ্যাদারিং ফর প্যালেস্টাইন অনুষ্ঠান সফলে ব্যাপক তৎপরতার কারণে উগ্রবাদি গোষ্ঠী তাকে টার্গেট করে।
ছাত্রসেনা ঢাকা নগর নেতা মোহাম্মদ আবুল হাসানের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মুজাফফর আহমদ মুজাদ্দেদী, গোলাম মাহমুদ ভূইয়া মানিক, অ্যাডভোকেট ইকবাল হাসান, মুহাম্মদ আব্দুল হাকিম, ক্যানসার গবেষক অধ্যক্ষ ডা.
সমাবেশ শেষে প্রেসক্লাবের সামনে থেকে নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রেসক্লাবের গিয়ে শেষ হয়।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জাফলংয়ের পাথর কোয়ারিতে এখনও রাজনৈতিক ছায়া
ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের আগে সিলেটের জাফলংয়ের পাথর কোয়ারির নিয়ন্ত্রণ ছিল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর কবজায়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারানোর পর রাজত্ব বদলেছে। বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও শ্রমিক দলের নেতাকর্মীর হাতে এখন পাথর কোয়ারির চাবি। ইজারা স্থগিত থাকলেও রাতদিন বোমা মেশিন ও এক্সক্যাভেটর দিয়ে পাথর তোলা থেমে নেই। গত ৫ আগস্টের পর ৯ মাসে অন্তত ৪০০ কোটি টাকার বালু পাথর লুট হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো জানিয়েছে।
লুটের অভিযোগে একাধিক নেতাকর্মী দলের পদ পদবি হারালেও এ পথ থেকে তারা ফিরছেন না। থানায় মামলা করেও দমানো যাচ্ছে না তাদের। সর্বশেষ শনিবার সরকারের দুই উপদেষ্টা জাফলংয়ে পরিদর্শনে গেলে তাদের গাড়িবহরে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটে। ভিডিও ফুটেজে যুবদল, ছাত্রদল ও শ্রমিক দলের একাধিক নেতাকেই ঘটনাস্থলে দেখা যায়।
শনিবার দুপুরে জাফলংয়ের প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) পরিদর্শনে যান বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা শেষে ফেরার পথে স্থানীয় বিএনপি ও ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে একদল মানুষ পাথর কোয়ারি চালুর দাবিতে উপদেষ্টাদের গাড়িবহরের সামনে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় জাফলং ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আজির উদ্দিন, যুবদল নেতা সুমন আহমদ ও শ্রমিক দলের দেলওয়ার হোসেনকে দেখা যায়। এ ছাড়া জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমেদসহ আরও কয়েক নেতাকর্মীকে সেখানে দেখা গেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
পরিদর্শন শেষে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সিলেটের নান্দনিক ও নৈসর্গিক আবেদন আছে। এ রকম জায়গায় আমরা আর পাথর তোলার অনুমতি দেব না। এখানকার শ্রমিকদের বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য কাজ করছি। পরে বিকেলে সিলেট সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের উপদেষ্টা বলেন, অবৈধ পাথর উত্তোলনকারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, অবৈধভাবে বালু-পাথর তোলার কারণে পরিবেশের ধ্বংস হচ্ছে। আপাতত পাথর তুলতে দেওয়া হবে না।
গাড়িবহরে বাধার বিষয়ে গোয়াইনঘাট থানার ওসি সরকার মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদ জানান, হঠাৎ কিছু লোক উপদেষ্টাদের গাড়ি আটকে দেয়। পরে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিয়ে রাস্তা চলাচলের উপযোগী করে।
শুরুতে জাফলং নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ ওঠে সিলেট জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত গোয়াইনঘাটের সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আলম স্বপনসহ যুবদল ও ছাত্রদল নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে গত ১৬ অক্টোবর রফিকুল ইসলামের দলীয় পদ স্থগিত করে কেন্দ্রীয় কমিটি। সর্বশেষ ৯ জুন জেলা যুবদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কাশেমকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় যুবদল। বালু ও পাথর তোলার দায়ে গত ২৫ মার্চ ৩১ জনের বিরুদ্ধে গোয়াইনঘাট থানায় মামলা করে পরিবেশ অধিদপ্তর।
এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদ এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, দলের কেউ জড়িত থাকলে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। অনেকে দলের নাম ভাঙিয়েও অপরাধ করছে।
আজিরের নেতৃত্বে দুই উপদেষ্টার গাড়িবহরে বাধা প্রসঙ্গে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিনার বলেন, বিষয়টি কেন্দ্রীয় কমিটিকে জানানো হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।