চলতি অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) মুনাফা কমেছে স্কয়ার ফার্মার। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটের ঘোষণায় জানা গেছে, তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস হয়েছে ৬ দশমিক ৮৩ টাকা; ২০২৪ সালের একই সময় যা ছিল ৫ দশমিক ৫৫ টাকা। অর্থাৎ জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে ইপিএস বেড়েছে প্রায় ২৩ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।

সামগ্রিকভাবে চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত স্কয়ার ফার্মার মুনাফা বেড়েছে। জুলাই ২০২৪ থেকে মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত ৯ মাসে কোম্পানিটির সম্মিলিত ইপিএস দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ১৫ টাকা; জুলাই ২০২৩ থেকে মার্চ ২০২৪ সময় যা ছিল ১৮ দশমিক ২৪ টাকা। এ সময় কোম্পানিটির ইপিএস বেড়েছে ১৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ।

অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে স্কয়ার ফার্মার শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো বা নগদ প্রবাহ কমেছে। এই সময় নগদ প্রবাহ ছিল ১১ টাকা ৯০ পয়সা; আগের অর্থবছরের একই সময়ে অর্থপ্রবাহ ছিল ১৭ দশমিক ৩২ টাকা। ৩১ মার্চ ২০২৪ তারিখে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য ছিল ১৫১ দশমিক ৯৪ টাকা। ২০২৪ সালের ৩০ জুন তারিখে যা ছিল ১৪২ দশমিক শূন্য ৫ টাকা।

২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত দেশে শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং নগদ প্রবাহ বেড়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ওই সময় দেশীয় ক্রেতাদের অতিরিক্ত ঋণসুবিধা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কোম্পানি বিমা দাবি পেয়েছে। সেই সব কারণ এখন আর নেই। ফলে তা কমে এসেছে।

গত অর্থবছর রেকর্ড লভ্যাংশ দিয়েছে দেশের স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস। গত জুনে সমাপ্ত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের ১১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। গত বুধবার কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সভায় লভ্যাংশের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আজ বৃহস্পতিবার স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের এ তথ্য জানিয়েছে কোম্পানিটি।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে সব ধরনের খরচ ও কর বাদ দেওয়ার পর স্কয়ার ফার্মা প্রকৃত মুনাফা করেছে ২ হাজার ৯৩ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই মুনাফার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৮৯৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে স্কয়ার ফার্মার মুনাফা ১৯৫ কোটি টাকা বা সোয়া ১০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। গত জুনে সমাপ্ত অর্থবছর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ টাকা ৬১ পয়সায়। আগের বছর যার পরিমাণ ছিল ২১ টাকা ৪১ পয়সা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ২০২৪ স প রব হ দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

রেকর্ড ১৪৩২ কোটি টাকা নিট মুনাফা অর্জন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক

২০২৪ সালে মুনাফার রেকর্ড গড়েছে বেসরকারি খাতের দেশীয় মালিকানাধীন ব্র্যাক ব্যাংক। গত বছর ব্যাংকটি এককভাবে ১ হাজার ২১৪ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফাসহ হিসাব করলে ব্যাংকটির সমন্বিত মুনাফা দাঁড়ায় ১ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা।

আজ মঙ্গলবার ব্র্যাক ব্যাংক থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

তথ্য অনুসারে, এখন পর্যন্ত ব্র্যাক ব্যাংকের ইতিহাসে একক কোনো বছরে এটিই রেকর্ড মুনাফা। ২০২৩ সালে ব্যাংকটি এককভাবে মুনাফা করেছিল ৭৩০ কোটি টাকা। সেবার সমন্বিত মুনাফা ছিল ৮২৭ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে ব্র্যাক ব্যাংকের একক মুনাফা বেড়েছে ৪৮৪ কোটি টাকা বা ৬৬ শতাংশ। আর সহযোগী প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে সমন্বিত মুনাফা বেড়েছে ৬০৫ কোটি টাকা বা ৭৩ শতাংশ। এক বছরে ব্র্যাক ব্যাংকের মুনাফায় এত বেশি প্রবৃদ্ধি আগে কখনো হয়নি।

ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত বছর ব্র্যাক ব্যাংক শুধু নিজেরা রেকর্ড মুনাফা করেছে তা নয়, দেশের ব্যাংক খাতের ইতিহাসেও এটি সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জনের রেকর্ড। দেশীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মধ্যে যেখানে অতীতে কখনো কোনো ব্যাংকের মুনাফা হাজার কোটি টাকা ছাড়ায়নি সেখানে ব্র্যাক ব্যাংকের মুনাফা হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে দেড় হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। সর্বশেষ দেশীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর ২০২৩ সালে মুনাফার যে তথ্য রয়েছে তাতে ওই বছরও সর্বোচ্চ মুনাফা করেছিল ব্র্যাক ব্যাংক, সেটি ছিল ৮২৭ কোটি টাকা।

গতকাল সোমবার ব্র্যাক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। তাতে বছর শেষে সমন্বিতভাবে ১ হাজার ৪৩২ কোটি টাকার মুনাফার এই তথ্য উঠে এসেছে। ব্যাংকটি বলছে, গত বছর আমানত ও ঋণে খুব ভালো প্রবৃদ্ধি ছিল ব্যাংকটির। পাশাপাশি ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোও খুব ভালো ব্যবসা করেছে। এ কারণে মুনাফায় অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।

রেকর্ড মুনাফা করায় সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লভ্যাংশও ঘোষণা করেছে ব্যাংকটি। ২০২৪ সালের জন্য ব্যাংকটি শেয়ারধারীদের ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ঘোষিত এই লভ্যাংশের মধ্যে সাড়ে ১২ শতাংশ নগদ ও সাড়ে ১২ শতাংশ বোনাস। এর আগে ২০১৭ সালে ব্যাংকটি ২৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছিল। আর সর্বশেষ ২০২৩ সালে নগদ ও বোনাস মিলিয়ে লভ্যাংশ দিয়েছিল ২০ শতাংশ। সেই হিসাবে গত বছরের জন্য লভ্যাংশের পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ বেড়েছে।

গতকাল ব্যাংকের পর্ষদ সভায় আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের পাশাপাশি লভ্যাংশও অনুমোদন করা হয়। আগামী বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) সাধারণ শেয়ারধারীদের অনুমোদনের পর এই লভ্যাংশ বিতরণ করা হবে। গত বছরের জন্য ব্যাংকটি নগদ যে লভ্যাংশের ঘোষণা দিয়েছে শেষ পর্যন্ত এজিএমে সেটি বহাল থাকলে ব্যাংকটি নগদ লভ্যাংশ বাবদ বিতরণ করবে ২২১ কোটি টাকার বেশি। এর বাইরে ব্যাংকটির শেয়ারধারীরা বোনাস হিসেবে প্রতি ১০০ শেয়ারের বিপরীতে পাবেন সাড়ে ১২টি শেয়ার।

এদিকে রেকর্ড মুনাফার ফলে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএসও বেড়েছে। গত বছর শেষে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ টাকা ৯৫ পয়সায়। ২০২৩ সালে ব্যাংকটির ইপিএস ছিল ৪ টাকা ৩০ পয়সা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ইপিএস ২ টাকা ৬৫ পয়সা বা ৬২ শতাংশ বেড়েছে। সেই সঙ্গে শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্যও বেড়েছে। গত বছর শেষে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৪৪ টাকা ১১ পয়সায়। ২০২৩ সালে যার পরিমাণ ছিল ৩৭ টাকা ৬০ পয়সা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে শেয়ারপ্রতি প্রকৃত সম্পদমূল্য বা এনএভি বেড়েছে ৬ টাকা ৫১ পয়সা বা ১৭ শতাংশের বেশি।

গত বছর ব্র্যাক ব্যাংকের আমানতের বড় ধরনের প্রবৃদ্ধির কারণে ব্যাংকটির ক্যাশ ফ্লো বা নগদ প্রবাহও অনেক বেড়ে গেছে। বছর শেষে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থের প্রবাহ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬১ টাকায়। ২০২৩ সালে যার পরিমাণ ছিল ৩৭ টাকা।

ব্র্যাক ব্যাংকের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের জুন শেষে ব্যাংকটির আমানতের পরিমাণ ছিল ৫৮ হাজার ৮২৮ কোটি টাকা। আর ঋণের পরিমাণ ছিল ৫৫ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের অর্থায়নে অগ্রাধিকার দেওয়ার ভিশন নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত দেশের অন্যতম দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী একটি ব্যাংক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ‘BRACBANK’ প্রতীকে ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেন হয়। ১৮৯টি শাখা, ৭৪টি উপশাখা, ৩২৯টি এটিএম, ৪৪৬টি এসএমই ইউনিট অফিস, ১ হাজার ১১৯টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং ৮ হাজারেরও বেশি মানুষের বিশাল কর্মীবাহিনী নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক কর্পোরেট ও রিটেইল সেগমেন্টেও সার্ভিস দিয়ে আসছে। ব্যাংকটি দৃঢ় ও শক্তিশালী আর্থিক পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে এখন সকল প্রধান প্রধান মাপকাঠিতেই ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষে অবস্থান করছে। ১৮ লাখেরও বেশি গ্রাহক নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বিগত ২৩ বছরেই দেশের সবচেয়ে বৃহৎ জামানতবিহীন এসএমই অর্থায়নকারী ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও নিয়মানুবর্তিতায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে বিদেশি ঋণ শোধ ৩০০ কোটি ডলার ছাড়াল
  • শক্তিশালী ব্যালান্স শিট প্রবৃদ্ধিসহ ২০২৪ সালে ব্র্যাক ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য সাফল্য
  • ২০২৪ সালে রেকর্ড হারে বেড়েছে বিশ্বের সামরিক ব্যয়: সিপ্রির প্রতিবেদন
  • ৭৮০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে পূবালী ব্যাংক
  • রেকর্ড ১৪৩২ কোটি টাকা নিট মুনাফা অর্জন ব্র্যাক ব্যাংকের
  • রেকর্ড ১৪৩২ কোটি টাকা নিট মুনাফা অর্জন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক
  • হাজার কোটি টাকা নিট মুনাফার মাইলফলকে সিটি ব্যাংক
  • রেকর্ড ১৪৩২ কোটি টাকা মুনাফা ব্র্যাক ব্যাংকের
  • বিশ্বে সামরিক ব্যয় রেকর্ড বেড়ে ২.৭ ট্রিলিয়ন ডলার