বাবার মরদেহ দুই বছর লুকিয়ে রাখেন সন্তান
Published: 30th, April 2025 GMT
জাপানে বাবার মৃত্যুর পর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া না করে মরদেহ দুই বছর বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছেন এক ব্যক্তি। সম্প্রতি ঘটনাটি প্রকাশ্যে এলে পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
জাপানি ওই ব্যক্তির নাম নোবুহিকো সুজুকি (৫৬)। জাপানের টেলিভিশন নেটওয়ার্ক ফুজি নিউজ নেটওয়ার্কের খবরে বলা হয়, রাজধানী টোকিওতে নোবুহিকোর একটি রেস্তোরাঁ আছে। এক সপ্তাহ ধরে রেস্তোরাঁটি বন্ধ। প্রতিবেশীদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হলে তাঁরা পুলিশে খবর দেন।
পরে পুলিশ নোবুহিকোর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে তাঁকে খুঁজে পায় পুলিশ। তাঁর সঙ্গে বাড়ির একটি পোশাক রাখার আলমারিতে মানুষের কঙ্কাল খুঁজে পাওয়া যায়। জিজ্ঞাসাবাদে নোবুহিকো জানান, এটি তাঁর বাবার কঙ্কাল। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে তাঁর ৮৬ বছর বয়সী বাবা মারা যান। তিনি বাবার মৃতদেহ বাড়িতে লুকিয়ে রাখেন।
নোবুহিকোর বাবা কীভাবে মারা গেছেন, তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। তবে তিনি দাবি করেন যে ওই দিন তিনি বাড়িতে ফিরে তাঁর বাবার মৃতদেহ দেখতে পান।
যদি তা–ই হয়, তাহলে কেন তিনি মৃতদেহ লুকিয়ে রেখেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ওই ব্যক্তি বলেন, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনেক ব্যয়বহুল ছিল।
পুলিশ নোবুহিকোকে গ্রেপ্তার করেছে। বাবার অবসর ভাতা আত্মসাতের জন্য তিনি এমনটা করেছেন কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
জাপানে এ ঘটনা নিয়ে অনলাইনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, বাবার মৃত্যুর পরও অবসর ভাতা তুলতে নোবুহিকো এ কাণ্ড করেছেন।
তবে কেউ কেউ সমবেদনাও জানিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, যাঁদের অভিজ্ঞতা নেই, তাঁদের জন্য অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানের জটিলতা বুঝতে পারা কঠিন।
জাপানে করোনা মহামারির সময় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য গড়ে প্রায় ১৩ লাখ ইয়েন খরচ হতো বলে জানিয়েছেন এ–সংক্রান্ত কাজের সঙ্গে জড়িত এক কর্মকর্তা।
অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার খরচ জোগাড় করতে না পারায় স্বজনের মৃতদেহ লুকিয়ে রাখার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এর আগে ২০২৩ সালে আরেক ব্যক্তির বিরুদ্ধে তাঁর মায়ের মৃতদেহ বাড়িতে লুকিয়ে রাখার অভিযোগে মামলা হয়েছিল।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ত য ষ ট ক র য়
এছাড়াও পড়ুন:
গণপূর্ত অধিদপ্তরের ৫ প্রকৌশলী ও স্থাপত্য অধিদপ্তরের স্থপতি বরখাস্
বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় অসদাচরণের অভিযোগে গণপূর্ত অধিদপ্তরের ৫ প্রকৌশলী এবং স্থাপত্য অধিদপ্তরের স্থপতিকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
বরখাস্তকৃতরা হলেন: গণপূর্ত অধিদপ্তরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান মনি, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবদুল্লা আল মামুন, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোছাঃ রাহানুমা তাজনীন, নির্বাহী প্রকৌশলী ফারহানা আহমেদ, সহকারী প্রকৌশলী মফিজুল ইসলাম এবং স্থাপত্য অধিদপ্তরের সহকারী স্থপতি শিরাজী তারিকুল ইসলাম।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় জানায়, কর্মস্থলে বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত থাকায় অসদাচরণ ও পলায়নের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত আদেশের মাধ্যমে এ সকল কর্মকর্তাদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, মনিরুজ্জামান মনি টরেন্টো ইউনিভার্সিটিতে ডক্টোরাল প্রোগ্রামে অংশ নিতে ২০১৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ছুটি কাটানোর পর পরবর্তী সময়ে অনুমতি না নিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। সরকারি কর্মচারী বিধিমালা অনুযায়ী তাকে ২১ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে বরখাস্ত করা হয়।
আবদুল্লা আল মামুন পিএইচ.ডি করতে ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছুটিতে ছিলেন। এরপর থেকে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত। সরকারি কর্মচারী বিধিমালা মোতাবেক তাকে ১৫ মে ২০২৫ তারিখে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
মোছাঃ রাহানুমা তাজনীন ২০২১ সালের ১ আগস্ট থেকে ২০২৩ সালের জুলাইয়ের ৭ তারিখ পর্যন্ত ছুটিতে ছিলেন। ছুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে অননুমোদিতভাবে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত। তাকে ২ জুলাই ২০২৫ তারিখে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
ফারহানা আহমেদ ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষা ছুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত। তাকে ৮ জুলাই ২০২৫ তারিখে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
মফিজুল ইসলাম ২০২৩ এর ২০ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছুটি কাটালেও পরে ছুটি না নিয়ে অফিসে অনুপস্থিত। তাকে ২৭ জুলাই ২০২৫ তারিখে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
শিরাজী তারিকুল ইসলামও ২০২২ সালের ১২ মে থেকে ছুটি না নিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত। তাকে ২১ মে ২০২৫ তারিখে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন//