রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পুলিশ সদস্য হুমায়ুন কবিরের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তার স্ত্রীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে ঢাকা ও বরিশালে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন-পুলিশ সদস্য হুমায়ুন কবিরের স্ত্রী সালমা বেগম (৩২), ফজলে রাব্বি (২৩), মরিয়ম বেগম (৩৮), পলি বেগম (৩৫), মো.

কায়েচ হাওলাদার (৩৪) ও এক কিশোর।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত সোমবার সকালে যাত্রাবাড়ী থানা-পুলিশ দয়াগঞ্জ বটতলা জজ মিয়ার বাড়ির ভাড়া বাসার ফটকের কাছ থেকে পুলিশ সদস্য হুমায়ুন কবিরের (৪৪) মরদেহ উদ্ধার করে। পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়। পরদিন মঙ্গলবার ওই ঘটনায় নিহত হুমায়ুনের ভাই খোকন হাওলাদার বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

মামলায় বলা হয়, হুমায়ুন কবির ডিএমপির পরিবহন বিভাগে জলকামানের চালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি স্ত্রী সালমা বেগম ও দুই সন্তানকে নিয়ে দয়াগঞ্জে থাকতেন। সালমার সঙ্গে তাঁর আত্মীয় মো. রাজীব হোসেনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, তা হুয়ায়ুন জানতেন। এ নিয়ে গত ২৫ এপ্রিল একটি পারিবারিক সালিস বৈঠক হয়। বৈঠকের পর সালমা ও তাঁর ভাই মো. মানিকের সঙ্গে হুমায়ুন কবিরের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এর জেরে সালমা বেগম ও তাঁর বন্ধু রাজীব হোসেন ও ওই ভবনের চারতলায় থাকা তার আত্মীয় মরিয়মসহ আরও কয়েকজন মিলে হুমায়ুনকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।

ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিহত হুমায়ুনের দুই সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে এজাহারভুক্ত আসামি সালমা বেগম ও মরিয়ম বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় আজ ভোর পাঁচটার দিকে বরিশাল থেকে শুভ, রাফি, পলি ও কায়েসকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় পুলিশ সদস্য হুমায়ুনের দুটি মুঠোফোন শুভর কাছ থেকে জব্দ করা হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প ল শ সদস য হ ম য় ন গ র প ত র কর

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ