সাবেক এমপি সুজাতের ওপর দিনে হামলা, রাতে বাসায় আগুন
Published: 2nd, May 2025 GMT
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় মে দিবসের অনুষ্ঠান শেষ ফেরার পথে বেলা ১২টার দিকে সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সুজাত মিয়ার ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আবার রাত ১০ টার দিকে তার বাসভবনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
হামলার ঘটনায় তাৎক্ষণিক স্থানীয়দের সহযোগিতায় অভিযান চালিয়ে দেশি অস্ত্রসহ একজনকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে নবীগঞ্জ-হবিগঞ্জ সড়কে উপজেলার তিমিরপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান নবীগঞ্জ থানার ওসি মো.
হামলার শিকার শেখ সুজাত মিয়া হবিগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্তর্জাতিক মে দিবস উপলক্ষে সকালে নবীগঞ্জ উপজেলা শ্রমিক দলের উদ্যোগে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন সুজাত মিয়া। কর্মসূচি শেষে বাসায় ফিরতে গাড়িতে ওঠার সময় কয়েকজন যুবক দেশি অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা চালায়। এ সময় স্থানীয় নেতাকর্মীদের প্রতিরোধের মুখে হামলাকারীরা পালিয়ে গেলে সুজাত মিয়া রক্ষা পান বলে জানায় পুলিশ।
খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় হামলাকারী সন্দেহে জামিল মিয়াকে আটক করা হয় বলে জানান ওসি কামাল হোসেন। তিনি বলেন, আটক যুবকের কাছ থেকে একটি রামদা ও ছুরি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে রাতে বাসভবনে আগুনের ঘটনায় তিনি বলেন, এটি তদন্ত করা হচ্ছে। নাশকতা নাকি অন্য কিছু তা খতিয়ে দেখা হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গোপালগঞ্জে ডিসির বাসভবনে হামলার ঘটনায় ১০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি ঘিরে হামলা ও সংঘর্ষের জেরে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) বাসভবনে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সদর থানার সহকারী উপপরিদর্শক ফারুক হোসেন বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি করেন।
মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৪১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ পৌর পার্ক, লঞ্চঘাট, কাঁচাবাজার এলাকাসহ সড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে জনগণের মনে ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে যান চলাচল ব্যাহত করা হয়। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের পক্ষে মিছিল করা হয়। আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে ও এনসিপির পথসভা নস্যাৎ করতে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করতে জনসাধারণের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করেন। এ সময় জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।
এ নিয়ে গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা ও ককটেল নিক্ষেপ, পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, জেলা কারাগারে হামলা, জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা, রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়ানোর অভিযোগে ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মোট ১৪টি মামলা করা হলো। সদর, কাশিয়ানী, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া থানায় মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে। ১৪টি মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১ হাজার ১৭৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১৪ হাজার ৫৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় ১৬ জুলাই থেকে গত সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা হামলা চালান। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেদিন প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। রাতেই কারফিউ জারি করা হয়। পরে কারফিউর মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়। পরে ২০ জুলাই রাত আটটায় কারফিউ ও ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হয়।