বাংলা আধুনিক সংগীতের তিনজন বরেণ্য গীতিকবি শহীদ মাহমুদ জঙ্গী, লিটন অধিকারী রিন্টু ও গোলাম মোর্শেদকে সম্মান জানাল গীতিকবি সংঘ বাংলাদেশ। শনিবার বিকেলে ঢাকার বাংলামোটরে অবস্থিত বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে গীতিকবি সংঘ বাংলাদেশ আয়োজিত প্রথম ‘গীতিকবি আড্ডা’ অনুষ্ঠানে তাদের প্রতি এ সম্মান জানানো হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নকীব খান, ফোয়াদ নাসের বাবু, আলী সুমন, শওকত আলী ইমন, নাসির আহমেদ, ডা.

আরিফ, মিল্টন খন্দকার, শহীদুল্লাহ্ ফরায়জী, আনজীর লিটন, বাপ্পী খান, বাকীউল আলম, এনামুল কবির সুজন, সীরাজুম মুনীরসহ সংঘের সদস্যরা।

সন্ধ্যা ৬টায় তুষার হাসানের সঞ্চালনায় আয়োজনটি শুরু হয়। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংঘের সাধারণ সম্পাদক জয় শাহরিয়ার। তারপর প্রথম পর্বে জয় শাহরিয়ারের সঞ্চালনায় আড্ডায় অংশ নেন শহীদ মাহমুদ জঙ্গী। এরপর দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্বে যথাক্রমে সাকী আহমদ ও অধরা জাহানের সঞ্চালনায় আড্ডায় অংশ নেন লিটন অধিকারী রিন্টু ও গোলাম মোর্শেদ। 

এই আয়োজনে অতিথিরা সংগীতে তাদের পথচলা নিয়ে উপস্থাপক ও দর্শকদের সঙ্গে কথা বলেন, মতবিনিময় করেন। এ সময় ভিডিওচিত্রের মাধ্যমে প্রত্যেকের সংক্ষিপ্ত জীবনী উপস্থাপন করা হয়।

আড্ডায় গীতিকবি তিনজনের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার ছাড়াও জীবনের নানা ঘটনাপ্রবাহ উঠে আসে। এ অনুষ্ঠানে গীতিকবি সংঘ বাংলাদেশ তাদের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল উন্মুক্ত করেন। সংঘের সভাপতি আসিফ ইকবালের সমাপনী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শেষ হয় ‘গীতিকবি আড্ডা’-এর প্রথম আয়োজন।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলি-আমেরিকান জিম্মি আলেক্সান্ডার শিগগির মুক্তি পাচ্ছেন: হামাস

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের হাতে জিম্মি থাকা ইসরায়েলি-আমেরিকান এডান আলেক্সান্ডার খুব শিগগির মুক্তি পাচ্ছেন। হামাসের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা গতকাল রোববার রয়টার্সকে এ কথা বলেছেন।

মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার ও মিসর এই পদক্ষেপকে গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা আবার শুরু করার ক্ষেত্রে একটি উৎসাহব্যঞ্জক অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করেছে।

২১ বছর বয়সী ইসরায়েলি সেনা এডান আলেক্সান্ডার ঠিক কবে মুক্তি পাবেন, সে বিষয়ে হামাসের ওই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি। তবে ঘটনাটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, আগামীকাল মঙ্গলবার তিনি মুক্তি পেতে পারেন।

ধারণা করা হচ্ছে, এডান আলেক্সান্ডার হামাসের কাছে থাকা শেষ জীবিত আমেরিকান জিম্মি।

হামাস বলেছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোসহ গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ তৈরির অংশ হিসেবে এডান আলেক্সান্ডারকে মুক্তি দেওয়ার এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি সপ্তাহেই মধ্যপ্রাচ্য সফরে যাচ্ছেন। তাঁর বিশেষ দূত অ্যাডাম বোয়েলার বলেছেন, আলেক্সান্ডারকে যে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে, এ খবরটি একটি ইতিবাচক অগ্রগতি।

অ্যাডাম বোয়েলার আরও বলেন, জিম্মি অপর চার আমেরিকানের মরদেহ ফেরত দেওয়ার জন্য তাঁরা হামাসের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন।

আলেক্সান্ডারের মুক্তির পথ খোলার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই কৃতজ্ঞতা জানান।

ট্রাম্প লিখেছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্র এবং মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার ও মিসরের প্রচেষ্টার প্রতি একটি সদিচ্ছাপূর্ণ পদক্ষেপ। যার লক্ষ্য, এই নৃশংস যুদ্ধের অবসান ঘটানো, সব জীবিত জিম্মি ও নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ তাঁদের প্রিয়জনদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। ইসরায়েলি হিসাব অনুসারে, ওই হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হন। ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। এটিকে ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী দিন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্যানুসারে, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৫২ হাজার ৮০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

অবরুদ্ধ এই উপত্যকার ২৩ লাখ মানুষ বর্তমানে আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। গত মার্চ মাসে ইসরায়েল অবরোধ আরোপ করার পর এই সহায়তা দ্রুত কমে আসছে।

এক যৌথ বিবৃতিতে কাতার ও মিসর বলেছে, হামাস এডান আলেক্সান্ডারকে মুক্তি দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা গাজায় যুদ্ধরত পক্ষগুলোর মধ্যে নতুন করে যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরুর ক্ষেত্রে একটি উৎসাহব্যঞ্জক পদক্ষেপ।

এই আলোচনা গত মার্চ মাস থেকে বন্ধ আছে। কাতার ও মিসর আরও বলেছে, গাজার মানবিক পরিস্থিতির উন্নয়ন, একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং এই যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাতে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একযোগে কাজ চালিয়ে যাবে।

গাজাভিত্তিক হামাসের নির্বাসিত প্রধান খলিল আল-হায়া বলেছেন, এডান আলেক্সান্ডারের মুক্তি নিশ্চিত করতে কাতার, মিসর ও তুরস্ক যৌথভাবে উদ্যোগ নিয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ