সোনারগাঁয়ে সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যবিধি ও নিরাপদ পানি পরিকল্পনা বিষয়ক দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

৩২টি পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও মানববর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ এনভায়রণমেন্টাল স্যানিটেশন প্রকল্পের আওতায় বুধবার দিনব্যাপী সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ সভা কক্ষে এ কর্মশালা অনুষ্টিত হয়।

সোনারগাঁ পৌরসভার সহযোগিতায় উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তররের আয়োজনে অনুষ্ঠানে প্রধান সঞ্চালক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়নগঞ্জ জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শেখ ফরিদ। সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন প্রকল্পের ডেভেলপমেন্ট অফিসার মোহাম্মদ বাবুল আখতার, সোনারগাঁ পৌর সচিব মাশরেকুল আলম, সোনারগাঁ উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রক্যেশলী শাহিন আলম, জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান, বিএনপি নেতা আব্দুর রহিম, সাংবাদিক ইমরান হোসেন, মো.

পারভেজ প্রমুখ। কর্মশালায় উপজেলা ও পৌর বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও পৌর নাগরিকবৃন্দ অংশ নেন।

বক্তারা বলেন, পৌর এলাকায় সেপটিক ট্যাংক থেকে মানববর্জ্য খোলা ড্রেনে ফেলার কারণে মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে শিশুরা রোগাক্রান্ত হচ্ছে বেশি এর থেকে পরিত্রাণে মানববর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য সামাজিক সচেতনতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

এক্ষেত্রে বর্জ্য শোধানাগার নির্মাণে সরকারকে জায়গা দিয়ে সহযোগিতা করা পৌরবাসীর দায়িত্ব। বর্জ্য শোধানাগার নির্মাণ করতে পারলে পৌরবাসী দূর্গন্ধমুক্ত, জীবাণুমুক্ত ও রোগমুক্ত জীবন যাপন করা সহজ হবে। 
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ জনস ব স থ য স ন রগ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

চিরকুট: ‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’

রাজশাহীর পবার একটি ঘরে শুক্রবার সকালে চার মরদেহের সঙ্গে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে, যার শব্দ-বাক্যে জীবন-সংসারে অভাব ও ঋণের চরম অভিঘাতের কথা লেখা রয়েছে। তার মধ্যে দুটি বাক্য এমন- “আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে। এত কষ্ট আর মেনে নিতে পারছি না।”

দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করা একটি পরিবারের কর্তা ব্যক্তির বর্ণনা অনুযায়ী, প্রথমে স্ত্রী, তারপর ছেলে-মেয়ের প্রাণ নিয়ে নিজেও শেষ হয়ে গেছেন। তবে এই চিরকুট যে তারই লেখা, সেটি তদন্তের আগে নির্ধারণ করার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য পুলিশের।

পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের বামনশিকড়ে শুক্রবার সকাল এল চারজনের জীবনাবসনের শোকের ছায়া নিয়ে। বৃহস্পতিবার রাত দ্বিপ্রহরে একই ঘরে চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। স্ত্রী ও দুই সন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।

আরো পড়ুন:

পদ্মায় গোসলে নেমে নিখোঁজ দুই ছাত্রের লাশ উদ্ধার

কুমিল্লায় মা-মেয়ের মরদেহ উদ্ধার

৩৫ বছর বয়সি মিনারুল ইসলামের সংসার ছিল স্ত্রী মনিরা খাতুন (২৮), ছেলে মাহিম (১৪) ও মেয়ে মিথিলাকে নিয়ে। তারা এখন বামনশিকড়ের অভাবে-ঋণে হারিয়ে যাওয়া একটি শোকগাথা।

মতিহার থানার ওসি আবদুল মালেকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মিনারুলের ঘরে তাদের লাশের পাশে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। চিরকুটে বেশ কিছু কথা লেখা আছে। তবে এখনই বিস্তারিত কিছু বলা যাচ্ছে না। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

দুই পাতার চিরকুটের ছবি রাইজিংবিডি ডটকমের হাতে এসেছে, যেখানে অভাব-ঋণ, বাবা-ভাইয়ের কাছ থেকে পাওয়া কষ্টের কথা লেখা রয়েছে।  

চিরকুটের এক পাতায় লেখা আছে, “আমি মিনারুল নিচের যে সব লেখা লেখবো। সব আমার নিজের কথা লিখে যাচ্ছি। কারণ, আমরা চারজন আজ রাতে মারা যাবো। এই মৃত্যুর জন্য কারো কোনো দোষ নেই। আমি মিনারুল প্রথমে আমার স্ত্রীকে মেরেছি। তারপর আমার মাহিমকে (ছেলে) মেরেছি। তারপর আমার মিথিলাকে (মেয়ে) মেরেছি। তারপর আমি নিজে গলায় ফাঁস দিয়ে মরেছি।”

চিরকুটে আরো লেখা আছে, “আমাদের চারজনের মরা মুখ যেন বাপের বড় ছেলে ও তার স্ত্রী-সন্তান না দেখে এবং বাপের বড় ছেলে যেন জানাজায় না আসে। আমাদের চার জনকে কাফন দিয়ে ঢাকতে আমার বাবা যেন টাকা না দেয়। এটা আমার কসম।”

চিরকুটের দ্বিতীয় পাতায় লেখা আছে, “আমি নিজ হাতে সবাইকে মারলাম, কারণ আমি একা যদি মরে যাই তাহলে, আমার স্ত্রী-সন্তানরা কার আশায় বেঁচে থাকবে? কষ্ট আর দুঃখ ছাড়া কিছুই পাবে না।”

এরপরের বাক্যগুলো হুবহু এমন, “আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে। এত কষ্ট আর মেনে নিতে পারছি না। তাই আমারা বেঁচে থাকার চেয়ে মরে গেলাম সেই ভাল হলো। কারও কাছে কিছু চাইতে হবে না। আমার জন্যে কাউকে মানুষের কাছে ছোট হতে হবে না। আমার বাবা আমার জন্য অনেক মানুষের কাছে ছোট হয়েছে, আর হতে হবে না। চিরদিনের জন্য চলে গেলাম। আমি চাই সবাই ভালো থাকবেন।”

শেষে লেখা, “ধন্যবাদ।”

ঢাকা/কেয়া/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ