না’গঞ্জ আদালতের বিচারকের স্বাক্ষর জালিয়াতি, আইনজীবীর সহকারী আটক
Published: 26th, May 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জে আদালতের একজন বিচারকের স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া আদেশনামা ও পরোয়ানা ফেরত তৈরির অভিযোগ উঠেছে এক আইনজীবীর সহকারীর বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় সোমবার (২৬ মে) দুপুরে সিয়াম আহমেদ নামের একজন আইনজীবী সহকারীকে আটক করা হয়েছে। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন সরকারের সহকারী ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, রূপগঞ্জ থানায় দায়ের করা একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় মো.
এদিকে, ওই মামলায় রোববার রাতে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ রুবেলকে গ্রেপ্তার করলে তার স্বজনরা আদালতের কথিত আদেশনামা ও পরোয়ানা ফেরতের কাগজ দেখান। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শককে তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্তে কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক ভুয়া কাগজপত্রের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এ বিষয়ে কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইউম খান বলেন, “কয়েক মাস ধরে আমাদের কাছে অভিযোগ আসছিল যে, কিছু ব্যক্তি বিচারকদের স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া আদেশনামা ও পরোয়ানা ফেরত তৈরি করছে। রোববার রাতেও এমন একটি পরোয়ানা ফেরতের কাগজ আমাদের হাতে আসে, যা আমাদের সন্দেহ হয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা অনুসন্ধানে জানতে পারি, অ্যাডভোকেট ধীরেন সরকারের সহকারী সিয়াম আহমেদ এই কাজটির সঙ্গে জড়িত। জিজ্ঞাসাবাদে সে প্রাথমিকভাবে দোষ স্বীকার করেছে। আমরা তাকে নজরদারিতে রেখেছি এবং আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
নিজের সহকারী সম্পর্কে অ্যাডভোকেট ধীরেন সরকার বলেন, “সিয়াম আহমেদ আমার সহকারী ছিল। তবে তার এই জালিয়াতির বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না। আমি তাকে আর সহকারী হিসেবে রাখছি না। আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সহকারী সমিতির সভাপতি হামিদুর রহমান বলেন, “ঘটনার পরপরই আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। ইতোমধ্যে তার পরিচয়পত্র বাতিল করা হয়েছে। এখন আইন তার নিজস্ব প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেবে।”
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন বলেন, “সিয়াম আহমেদের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ পেয়েছি।
আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং যিনি তার আইনজীবী ছিলেন, তাকেও সতর্ক করেছি। অভিযুক্ত সহকারীকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।”
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ আইনজ ব স য় ম আহম দ ন র য়ণগঞ জ ও পর য় ন র সহক র ব যবস থ আইনজ ব ব চ রক সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বিহারের ভোটার তালিকা নিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট: ‘মৃত’ নন জীবিত এমন ১৫ জনকে হাজির করলে ব্যবস্থা
বিহারে খসড়া ভোটার তালিকায় ‘মৃত’ চিহ্নিত ১৫ জন জীবিতকে হাজির করাতে পারলে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ব্যবস্থা নেবেন। বিহারের ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে মামলাকারীদের আইনজীবীদের এ আশ্বাস দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি সূর্য কান্ত ও জয়মাল্য বাগচী এ আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে তাদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। গণহারে ভোটার বাদ দেওয়া দেওয়া হলে তাঁরা অবশ্যই পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
আবেদনকারীদের উদ্দেশে দুই বিচারপতি বলেছেন, প্রক্রিয়ায় অনিয়ম বা ত্রুটি পাওয়া গেলে অবশ্যই তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন।
মামলাকারীদের আবেদন মেনে সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য খসড়া ভোটার তালিকা পেশ করার ওপর স্থগিতাদেশ দেননি। তবে ইসিকে তাঁরা বলেছেন, তাদের কাজ গণহারে ভোটার বাদ দেওয়া নয়। তাদের দেখা উচিত যাতে গণহারে ভোটারদের তালিকাভুক্ত করা যায়।
এসআইআর–প্রক্রিয়া অনুযায়ী ভোটার তালিকা সংশোধনের পর খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে ১ আগস্ট। সে লক্ষ্যেই ইসি এগিয়ে চলেছে। ইসি সূত্রে খবর, নিবিড় সংশোধনপ্রক্রিয়ার পর প্রাথমিকভাবে দেখা যাচ্ছে ৬৫ লাখেরও বেশি নাম খসড়া তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে। তাঁদের মধ্যে অন্তত ২২ জন ‘মৃত’, ৩৬ লাখ ‘নিখোঁজ’। এ ছাড়া বেশ কয়েক লাখ ভোটারের নাম বিভিন্ন এলাকার তালিকায় রয়েছে। অর্থাৎ একই ভোটার অন্তত দুই জায়গায় নথিভুক্ত। আগের তালিকা অনুযায়ী বিহারে মোট ভোটারের সংখ্যা ৭ কোটি ৮৯ লাখ। ইসির দাবি, এই তালিকায় বহু ভোটার ভুয়া। তাদের বাদ দিতেই এই নিবিড় সংশোধন।
যে প্রক্রিয়ায় এই খসড়া তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে, মামলাকারীদের আপত্তি তা নিয়েই। তাঁদের অভিযোগ, ইসি যেভাবে নাগরিকত্বের যাচাই করছে, সে জন্য যেসব নথি পেশ করতে বলা হচ্ছে, তা বহু ক্ষেত্রে সম্ভবপর নয়। তেমন করা তাদের কাজও নয়। সেই কাজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। তাঁদের অভিযোগ, এভাবে বহু দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের ভোটাধিকার ইসি কেড়ে নিচ্ছে।
গত সোমবার ও মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি হয়। মঙ্গলবারের শুনানিতে মামলাকারীদের আইনজীবী কপিল সিব্বাল ও প্রশান্ত ভূষণকে আশ্বস্ত করে বিচারপতিরা বলেন, কমিশনের ত্রুটি–বিচ্যুতি দেখলে তাঁরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেবেন। ভোটার প্রমাণে আধার কার্ড ও ভোটার কার্ডকে নথি হিসেবে গ্রাহ্য করার সুপারিশ বিচারপতিরা জোরের সঙ্গে করেছেন। এই দুই নথি জাল করা সহজ বলে ইসির দাবি নস্যাৎ করে বিচারপতিরা বলেছেন, যে ১১টি নথির ওপর নির্ভর করে তারা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, সেগুলোর প্রতিটিই জাল করা সম্ভব। কপিল সিব্বাল ও প্রশান্ত ভূষণকে বিচারপতিরা বলেন, খসড়া ভোটার তালিকায় ‘মৃত’ অথচ আসলে জীবিত, এমন ১৫ জনকে আপনারা হাজির করুন। আমরা ব্যবস্থা নেব।
আগামী ১২ ও ১৩ আগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি। তার আগে ৮ আগস্টের মধ্যে মামলাকারীদের বক্তব্য লিখিতভাবে আদালতে পেশ করতে হবে।