ছাত্রী হেনস্থার প্রতিবাদ করায় ঢাবির ২ শিক্ষার্থীকে মারধর
Published: 27th, May 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সংলগ্ন চাঁদনী চক মার্কেটে ছাত্রী হেনস্থার প্রতিবাদ করতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছে দুই শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাবি প্রশাসন।
মঙ্গলবার (২৭ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সোমবার (২৬ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে হেনস্থা ও অশালীন মন্তব্যের প্রতিবাদ করতে গেলে রাজধানীর চাঁদনী চক মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে মারধর করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অনুরোধ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থীর গায়ে হাত ওঠালে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে প্রশাসন।
আরো পড়ুন:
রবিতে রবীন্দ্র জন্মোৎসবের উদ্বোধন
যৌন হয়রানির অভিযোগে নোবিপ্রবি আরেক শিক্ষক বরখাস্ত
এদিকে, মঙ্গলবার উপাচার্য অধ্যাপক ড.
সোমবার (২৬ মে) রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহেদুল ইসলাম ও আয়াজুর রহমান এক নারী শিক্ষার্থীসহ কাপড় কিনতে চাঁদনী চক মার্কেটে যান। দরদামের একপর্যায়ে পরে নেবে জানিয়ে ফিরতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীকে উদ্দেশ্য করে কটুক্তি করে সংশ্লিষ্ট দোকানদার।
তাৎক্ষণিকভাবে এর প্রতিবাদ করেন শাহেদুল ইসলাম ও আয়াজুর রহমান। এতে ওই দোকানের ম্যানেজার ও আশেপাশের আরো বেশ কয়েকটি দোকানের লোকজন এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে মারধর করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে গেলে মব সৃষ্টি করে তাদেরও মারধর করে ব্যবসায়ীরা।
শিক্ষার্থী শাহেদুল ইসলামকে টানা ৪০ মিনিট একটি কক্ষে আটকে রেখে ব্যবসায়ীরা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। এসময় তাকে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। মারধরে আহত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা মেডিকেল সেন্টার ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
ঘটনা জানাজানি হলে অপরাধীদের দ্রুত আটক করে বিচারের আওতায় আনতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিউমার্কেট থানার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
এ সময় সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. ফারুক শাহ, সহকারী প্রক্টরগণসহ প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ ঘটনায় পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৫০ জন ব্যবসায়ীকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।
বাকী অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছে নিউমার্কেট থানা পুলিশ।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস য় ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা খর্ব হলে রাষ্ট্র পরিচালনায় ভারসাম্য নষ্ট হবে: সালাহউদ্দিন
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ থেকে কিছু সময়ের জন্য ওয়াকআউট করার পর আবারও আলোচনায় যোগ দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা খর্ব করা হলে রাষ্ট্র পরিচালনায় ভারসাম্য নষ্ট হবে বলে তিনি সতর্ক করেছেন।
আজ সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার ২০তম দিনে সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশে যেন আর কখনো স্বৈরাচার বা ফ্যাসিবাদ জন্ম নিতে না পারে, সে লক্ষ্যে সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগে বিএনপি সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকেই প্রস্তাব ছিল, কেউ যেন ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে না পারেন, সেটি গৃহীত হয়েছে। আমরা আরও প্রস্তাব দিয়েছি, নির্বাচন কমিশন গঠনে একটি স্বাধীন সার্চ কমিটি গঠন করা হোক, যেখানে সরকারি দল, বিরোধী দল ও বিচার বিভাগের প্রতিনিধি থাকবে, সেটিও গ্রহণযোগ্য হয়েছে।’
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, ‘আমরাই প্রস্তাব করেছি যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলে পরবর্তী সময়ে সংসদ কোনো সংশোধনী আনলে, তা রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের আগে গণভোটে যেতে হবে। এটি গৃহীত হওয়া মানে, দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় পদক্ষেপ।’
তবে এসব অগ্রগতির মধ্যেও নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিএনপির এই নেতা। বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নির্বাহী বিভাগের জবাবদিহি যেমন সংসদের কাছে, তেমনি জনগণের কাছেও রয়েছে। কিন্তু যদি কর্তৃত্ব না থাকে, কেবল দায়িত্ব আর জবাবদিহি থাকে, তাহলে তা কার্যকর রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যথেষ্ট নয়।’
সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগে নির্বাহী বিভাগের হাত–পা বাঁধা হলে তা ভবিষ্যতের জন্য বাধা সৃষ্টি করতে পারে বলেও মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘জনগণের প্রত্যাশা পূরণে নির্বাহী বিভাগকে শক্তিশালী হতে হবে, দুর্বল নয়।’
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা গঠনমূলক লক্ষ্য নিয়ে সংলাপে অংশ নিচ্ছে। তবে যেখানে মৌলিক দ্বিমত রয়েছে, সেখানে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকা বা মতপার্থক্য প্রকাশ করাও গণতন্ত্রের ভাষা।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘সব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, এমন দাবি কেউ করেননি। দ্বিমত থাকবে, ভিন্নমত থাকবে, আর সেগুলোর মধ্য দিয়েই তো গণতন্ত্রের সংগ্রাম এগিয়ে যায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি না যে নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে কাউকে ঐকমত্যে বাধ্য করা উচিত। ঐকমত্যের অর্থই হচ্ছে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে পথচলা। বিএনপি অংশ না নিলে কীভাবে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হবে, সেটি নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়।’
বক্তব্য শেষে সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, সংলাপের পরবর্তী পর্যায়ে বিএনপি অংশ নেবে এবং ইতিবাচক আলোচনার জন্য প্রস্তুত থাকবে।
আরও পড়ুনঐকমত্য কমিশনের বৈঠক: ফায়ার অ্যালার্ম বেজে ওঠায় হুড়োহুড়ি করে বের হলেন সবাই৫৪ মিনিট আগেবিএনপির ওয়াকআউটকমিশনের প্রস্তাবিত সরকারি কর্ম কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান আলোচনায় অংশ নেয়নি বিএনপি। বেলা সাড়ে ১১টার পর বিষয়টি আলোচনার জন্য উপস্থাপন করেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, তাঁরা আলোচনায় অংশ নেবেন না।
পরে আলী রীয়াজ বলেন, বিএনপির পক্ষে বলা হয়েছে, তারা আলোচনায় থাকবে না। একটি রাজনৈতিক দল আলোচনায় অংশ না নিলে আলোচনা করা যাবে না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারি না।
আজ আলোচনায় অংশ নিয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), গণসংহতি আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল।
আলোচনায় সভাপতিত্ব করছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত আছেন কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, এমদাদুল হক, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান ও আইয়ুব মিয়া।
আরও পড়ুনজাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক থেকে বিএনপির ওয়াক আউট, পরে যোগদান২ ঘণ্টা আগে