আদালতে শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমি পাওয়ারকে সিজদা করি (উপরের দিকে আঙুল ইশারা করে)। আমার যদি টাকা থাকতো আমি নিজেই পত্রিকা খুলতাম। আপনারা হলুদ সাংবাদিক হইয়েন না। যেটা সত্য, তদন্ত করে আপনারা সেটাই লেখেন। সত্য কথা লিখবেন। ১৯৮৯ সাল থেকে আমার বিরুদ্ধে লিখতেছে। আমার নাম বিক্রি করে যারা চাঁদাবাজি করেন, তাদের আপনারা ধরতে পারেন না? নিজে বাঁচার জন্য আমি কাছে অস্ত্র রাখি। কেউ যদি বলে রাখি না, তাহলে সেটা মিথ্যা হবে।’ 

আজ বুধবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারক আসার আগে কাটগাড়ায় দাঁড়িয়ে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর হাতিরঝিল থানার অস্ত্র আইনের একটি মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে মো.

ফাতেহ আলীকে (৬১)রিমান্ড আবেদনের জন্য  আদালতে হাজির করা হয়। ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালত তার আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এছাড়া অন্য তিনজনের ছয় দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।  

এ দিন আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন হাতিরঝিল থানার উপপরিদর্শক রিয়াদ আহমেদ। রিমান্ড চাওয়া অন্য আসামিরা হলেন- আবু রাসেল মাসুদ ওরফে মোল্লা মাসুদ (৫৩), এম এ এস শরিফ (২৫) ও মো. আরাফাত ইবনে মাসুদ (৪৩)। 

পরে আসামি সুব্রত বাইনের আইনজীবী বলেন, মিডিয়া তাকে সৃষ্টি করেছে। শত্রুদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এ লিস্ট তৈরি করা হয়। এরপর ২০২৫ পর্যন্ত আর কোনো লিস্ট কিন্তু তৈরি হয়নি। তিনি তিনবার গ্রেপ্তার হন মিডিয়ার কারণে। তিনিও আয়নাঘরে ছিলেন। গ্রেপ্তার চারজনের কাছ থেকে একটা মোবাইল ফোনও জব্দ হয়নি।

আইনজীবী আরও বলেন, কারাগারে তাকে যেন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। 

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ২০০১ সালে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আসামি সুব্রত বাইন ও তার সহযোগী মোল্লা মাসুদসহ ২৩ জন শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকা প্রকাশ করে এবং তাদেরকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়। তারা সন্ত্রাসী বাহিনী সেভেন স্টার গ্রুপ পরিচালনা করত। সুব্রত বাইন তৎকালীন খুন-ডাকাতি সংঘটনের মধ্য দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করেন। আসামিরা বিভিন্ন মামলায় সাজা ভোগ করা অবস্থায় ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আবারও সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু করেন। 

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানে গতকাল মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদ গ্রেপ্তার হন। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, আসামি এস এম শরীফের হাতিরঝিলের একটি বাড়িতে তারা নিয়মিত মিটিং করেন এবং সেখানে তাদের ব্যবহৃত অস্ত্র, গুলি, অপরাধ সংগঠনের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি রয়েছে। পরে হাতিরঝিল থানাধীন নতুন রাস্তা এলাকা থেকে একইদিন বিকেলে এম এ এস শরীফ ও আরাফাত ইবনে নাসিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার আসামিরা সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের সক্রিয় সদস্য। প্রাথমিক তদন্তে আসামিদের এ মামলায় জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তার আসামিদের নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদের আরও অনেক সহযোগীকে গ্রেপ্তার এবং আরও বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধারের সম্ভাবনা রয়েছে। তারা জামিনে মুক্তি পেলে চিরতরে পালাতে পারেন। তাই মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামিদের ১০ দশ দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আস ম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতে পাচারের শিকার ৩৬ কিশোর-কিশোরী দেশে ফিরেছে

ভারতে পাচারের শিকার দুই শিশুসহ ৩৬ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী বিভিন্ন মেয়াদে সাজাভোগের পর দেশে ফিরেছে। মঙ্গলবার (২৭ মে) সন্ধ্যায় ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ পাচার হওয়া বাংলাদেশিদের বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

ফেরত আসারা যশোর, রাজশাহী, খুলনা, নোয়াখালী, কুড়িগ্রাম, নাটোর, সাতক্ষীরা, নড়াইল, কক্সবাজার, ঢাকা, নেত্রকোণা, রংপুর, মাদারীপুর, নরসিংদী, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, লক্ষীপুর ও চট্টগ্রাম জেলার বাসিন্দা। 

আইনি সহায়তা দিতে রাইটস যশোর, জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার, মহিলা আইনজীবী সমিতি ও জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার, শিশু সুরক্ষা সংস্থা এই ৩৬ বাংলাদেশিকে গ্রহণ করেছে।

দেশের বিভিন্ন সীমান্তপথে তারা অবৈধভাবে ভারতে গিয়ে সে দেশের পুলিশের হাতে আটক হয়েছিল।

জাস্টিজ অ্যান্ড কেয়ারের যশোর শাখার সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার আব্দুল মুহিত জানান, ভালো কাজের প্রলোভনে দেশের বিভিন্ন সীমান্তপথে দালালের মাধ্যমে তারা ভারতে কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় যায়। সেখানে বিভিন্ন বাসাবাড়ি বা অন্যান্য কাজ করার সময় পুলিশ তাদের আটক করে। অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে পুলিশ তাদের জেলে পাঠায়। পরে আইনি সহায়তা দিতে ভারতীয় একাধিক মানবাধিকার সংস্থা তাদের আদালত থেকে ছাড়িয়ে হেফাজতে নেয়।

তিনি আরো জানান, বিভিন্ন মেয়াদে সাজাভোগের পর দুই দেশের সরকারের সহযোগিতায় বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে তারা দেশে ফেরার সুযোগ পায়। ফেরত আসা বাংলাদেশিরা যদি পাচারকারীদের শনাক্ত করে আইনি সহায়তা চায়, তাহলে দেওয়া হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের উপ-পরিদর্শক শাহাদাত হোসেন বলেন, ‍“ভারত ফেরত শিশুসহ ৩৬ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরীকে আমরা গ্রহণ করেছি। কার্যক্রম শেষে বেনাপোল পোর্ট থানায় তাদের সোপর্দ করা হয়েছে।”

তিনি বলেন, “সেখান থেকে এনজিও সংস্থা জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার, রাইটস যশোর, মহিলা আইনজীবী সমিতি ও শিশু সুরক্ষা সংস্থা তাদের গ্রহণ করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবে।”

ঢাকা/রিটন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এ টি এম আজহারের মামলায় ‘স্বার্থের সংঘাত’ নিয়ে দেওয়া কিছু বক্তব্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়
  • রায়ের কপি পেলে আইন দেখে সিদ্ধান্ত
  • রংপুরে কৃষক সলিম হত্যা মামলায় ৮ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
  • সারজিসের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন
  • ইশরাকের মেয়র পদ নিয়ে আপিল বিভাগে শুনানি বৃহস্পতিবার
  • আনিস-সালমান রিমান্ডে, নতুন মামলায় গ্রেপ্তার ৯
  • মুক্তি পেয়ে শাহবাগে সমাবেশে যোগ দিলেন আজহারুল ইসলাম
  • ভারতে সাজাভোগ শেষে বেনাপোল দিয়ে ফিরলেন ৩৬ জন
  • ভারতে পাচারের শিকার ৩৬ কিশোর-কিশোরী দেশে ফিরেছে