সংশ্লিষ্টদের কেন জবাবদিহি করা হবে না
Published: 29th, May 2025 GMT
মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় স্বাভাবিক প্রসবকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থায়। যে কারণে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের অধীনে পরিচালিত হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে স্বাভাবিক প্রসবের সময় জরুরি ওষুধ ও সরঞ্জাম বিনা মূল্যে দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছার অভাবে এক বছর ধরে সেই বিনা মূল্যে ওষুধ ও সরঞ্জাম পাচ্ছেন না প্রসূতিরা। এটি নিরাপদ মাতৃত্বের জন্য অবশ্যই হুমকিস্বরূপ। আমরা এতে উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, শুধু প্রসূতিদের জরুরি ওষুধ ও সরঞ্জাম বিতরণ বন্ধ আছে তা নয়, মা ও শিশুস্বাস্থ্যের জন্য বিনা মূল্যের প্রয়োজনীয় ওষুধের প্যাকেট ‘ড্রাগ অ্যান্ড ডায়েটারি সাপ্লিমেন্ট (ডিডিএস) কিট’ সরবরাহও বন্ধ রয়েছে। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো হচ্ছে দরিদ্র পরিবারের বড় ভরসাস্থল। ফলে বিনা মূল্যে ওষুধ ও সরঞ্জাম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়ছে বিশাল দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ওপর। কারণ, এসব ওষুধ ও সরঞ্জাম বাইরে থেকে কিনে আনতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। অনেকে সব ওষুধ ও সরঞ্জাম কিনতে সক্ষমও নন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউনিয়ন পর্যায়ে পর্যন্ত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রগুলোতে স্বাভাবিক প্রসবের দারুণ সাফল্য পাওয়া গেছে। এ সাফল্যের পেছনে বিনা মূল্যে জরুরি ওষুধ ও সরঞ্জাম বিতরণের নিঃসন্দেহে বড় ভূমিকা ছিল। এমন গুরুত্বপূর্ণ সেবা দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা খুবই হতাশাজনক। জানা যাচ্ছে, আগের প্রকল্পের (চতুর্থ এইচপিএনএসপি) মেয়াদ শেষ হওয়া এবং নতুন প্রকল্প (পঞ্চম এইচপিএনএসপি) অনুমোদন না হওয়ায় ৯ মাস ধরে কেনাকাটা বন্ধ। ফলে ২২টি আঞ্চলিক গুদামে ও ৪৯৪টি উপজেলায় স্বাভাবিক প্রসব কিট নেই; ৪৭৪টি উপজেলায় নেই ডিডিএস কিট।
জনস্বাস্থ্যবিদদের মতে, এই সংকট ছিল অনুমেয়, তবু সরকারি কর্মকর্তারা পূর্বপ্রস্তুতি নেননি। একটি কর্মসূচির মেয়াদ শেষের সময়ে এ ধরনের পরিস্থিতি হতে পারে, সেটা বিবেচনায় নিয়ে কেনাকাটা করার দরকার ছিল। সরকারি কর্মকর্তারা তা না করে হাত-পা গুটিয়ে বসে ছিলেন। সদিচ্ছার অভাব ও দায়িত্বহীনতার কারণে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে তাঁদের জবাবদিহি করা উচিত। তাঁদের কারণে বিশালসংখ্যক নারী ও শিশু সরকারের বিনা মূল্য সেবা থেকে বঞ্চিত হলো। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও কর্মকর্তাদের কাছ থেকে এটি কোনোভাবেই কাম্য ছিল না। তাঁদের এ ব্যর্থতা অতীতের সাফল্যকে ম্লানই করে দেয়।
আমরা জানতে পেরেছি, জরুরি বরাদ্দ দিয়ে ওষুধ ও সরঞ্জাম কেনাকাটার প্রচেষ্টা চলছে এবং জুনের মধ্যে সরবরাহ শুরু করার আশা করা হচ্ছে। কিন্তু এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য নতুন করে প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। আশা করি, নীতিনির্ধারকেরা দ্রুত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
পায়রা বন্দরসহ দুই প্রকল্পের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন
পায়রা বন্দরের জন্য সংশ্লিষ্ট পরিসেবাসহ দুটি শিপ টু শোর ক্রেন সরবরাহ এবং নারায়ণগঞ্জের খানপুরে অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার এবং বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পে কাজের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। প্রস্তাব দুটিতে ব্যয় হবে ৪৫০ কোটি ১১ লাখ ১০ হাজার ২৫৪ টাকা।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রি পরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় কমিটির সদস্য ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভা সূত্রে জানা যায়, পায়রা সমুদ্র বন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্পের আওতায় সংশ্লিষ্ট পরিসেবাসহ দুটি শিপ টু শোর ক্রেন সরবরাহ এবং স্থাপন কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে ৪টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে (১) এইচপি এবং (২) এনজে, চায়না প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ১৬২ কোটি ২ লাখ ১১ হাজার ৫৬৮ টাকা।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘নারায়ণগঞ্জের খানপুরে অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার এবং বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পের প্যাকেজ নম্বর দুইয়ের পূর্ত কাজের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এ জন্য উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ২টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। দরপত্রের সকল প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে (১) স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স এবং (২) এসএস রহমান ইন্টারন্যানাল লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ২৮৮ কোটি ৮ লাখ ৯৮ হাজার ৬৮৬ টাকা।
ঢাকা/হাসনাত//