আসন্ন ২০২৫–২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে ওয়ান টাইম বা একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক পণ্যের ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) দ্বিগুণ হতে যাচ্ছে। এতে চা, কফি থেকে শুরু করে প্লেট ও বাটি ইত্যাদি পণ্যের ওপর ভ্যাট বেড়ে দাঁড়াবে ১৫ শতাংশ। ফলে এসব পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। তবে এসব পণ্যের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপকরণ থেকে তৈরি পণ্যের ওপর কোনো ভ্যাট থাকবে না। দেশে পরিবেশবান্ধব পণ্যের ব্যবহার বাড়াতে নতুন বাজেটে এমন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে।

ভ্যাট মওকুফ পেতে যাওয়া পরিবেশবান্ধব বিকল্প পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে কাগজ, গাছের উপকরণ, পোড়ামাটির প্লেট ও পচনশীল উপাদানে তৈরি গ্লাস, প্লেট ও বাটি ইত্যাদি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, পরিবেশবান্ধব শিল্পোদ্যোগের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সহায়তার জন্যই এই ভ্যাট ছাড়ের চিন্তা করা হয়েছে।

দেশে গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত ছোট–বড় সব ধরনের দোকানে একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিকের ব্যবহার মোটামুটি বেড়েছে। চা–কফির দোকান থেকে শুরু করে রাস্তা–ফুটপাতে ঝালমুড়ি–ফুচকাও এখন ওয়ান টাইম প্লাস্টিকের প্যাকেট বা ঠোঙায় করে বিক্রি করা হয়।

পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, একই কাজে ব্যবহার হয় এমন ধরনের ওয়ান টাইম বা একবার ব্যবহারের প্লাস্টিক পণ্য ও কাগজের পণ্যের দামে পার্থক্য খুব কাছাকাছি। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পাইকারিতে প্লাস্টিকের চা–কফির ছোটো কাপ প্রতি ১০০টি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। একই ধরনের প্রতি ১০০টি কাগজের কাপ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা। যদিও প্লাস্টিকের প্লেটের দাম কাগজের প্লেটের তুলনায় কিছুটা কম। ১০ ইঞ্চি মাপের কাগজের প্লেট ১০০টি বিক্রি হয় ৬০০ টাকা। একই মাপের প্লাস্টিকের ১০০টি প্লেট মানভেদে ২৫০, ৩০০, ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে প্লাস্টিকের কিছু প্লেট অবশ্য ৫০০ টাকায়ও বিক্রি হয়।

কারওয়ান বাজারের সুন্দরবন প্যাকেজিং স্টোরের শামীম বলেন, প্লাস্টিকের তুলনায় কাগজের কাপ দিন দিন বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে। তাই প্লাস্টিক পণ্যে ভ্যাট বাড়ালেও সমস্যা নেই।

একই বাজারের মদিনা প্যাকেজিংয়ের রিপন জানান, কাগজের কাপ বেশি বিক্রি হলেও প্লেট বেশি চলে প্লাস্টিকের। কারণ, কাগজের প্রতিটি প্লেটের দাম পড়ে ৬ টাকা। আর প্লাস্টিকের প্রতিটি প্লেটের দাম পড়ে আড়াই–তিন টাকা। তাই কাগজে ভ্যাট কমলে প্লেটের দাম কমতে পারে। এ ছাড়া বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও আজকাল প্লাস্টিকের এসব পণ্য বিক্রি হচ্ছে। তবে সে ক্ষেত্রে মূল্যের সঙ্গে ৫০ থেকে ১০০ টাকা ডেলিভারি চার্জ যুক্ত হয়।

এদিকে ওয়ান টাইমের পাশাপাশি অন্যান্য প্লাস্টিক পণ্যের ক্ষেত্রেও বাড়তি ভ্যাট যুক্ত হতে পারে। এতে এ শিল্পের ওপর চাপ বাড়বে বলে মনে করছে বাংলাদেশ প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি। সংগঠনটির সভাপতি শামীম আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, প্লাস্টিকের পণ্য ছোট ছোট দোকান বা ফেরিওলাদের মাধ্যমে বেশি বিক্রি হয়। ফলে এসব অনানুষ্ঠানিক খাত থেকে ভ্যাট আদায় সেভাবে বাড়বে না; বরং শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশে প্লাস্টিক পণ্যের বার্ষিক বিক্রি আনুমানিক ৪০ হাজার কোটি টাকার মতো। এ খাতে বর্তমানে প্রায় ছয় হাজার উদ্যোক্তা আছেন। তাদের বেশির ভাগই ক্ষুদ্র ও মাঝারি। এ শিল্পে সব মিলিয়ে কাজ করছেন প্রায় ১৫ লাখ মানুষ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ব যবহ র র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ

আগে থেকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে, নইলে হোয়াইট হাউসের প্রেস অফিসের মূল অংশে সাংবাদিকেরা প্রবেশ করতে পারবেন না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন গতকাল শুক্রবার এ নিষেধাজ্ঞা জারি করে বলেছে, ‘সংবেদনশীল উপকরণ’ সুরক্ষিত রাখতে এ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

এ নিষেধাজ্ঞার অর্থ, এখন থেকে যেসব সাংবাদিকের অ্যাপয়েন্টমেন্ট থাকবে না, তাঁরা হোয়াইট হাউসের ওয়েস্ট উইংয়ের ‘আপার প্রেস’ নামে পরিচিত এলাকায় প্রবেশ করতে পারবেন না। এ অংশে প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিটের কার্যালয় অবস্থিত।

নতুন এক চিঠিতে বলা হয়েছে, সাংবাদিকদের ‘লোয়ার প্রেস’ নামে পরিচিত এলাকায় প্রবেশের অনুমতি রয়েছে। এটি হোয়াইট হাউসের ব্রিফিং কক্ষের পাশে অবস্থিত। এখানে জুনিয়র প্রেস কর্মকর্তারা কাজ করেন।

এ সিদ্ধান্তের পক্ষে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে হোয়াইট হাউসের যোগাযোগবিষয়ক পরিচালক স্টিভেন চুয়াং বলেন, সাংবাদিকেরা ওই এলাকায় মন্ত্রিসভার সদস্যদের হঠাৎ ঘিরে ধরেন এবং গোপনে ভিডিও-অডিও ধারণ করেন। যদিও তিনি তাঁর এ অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেননি।

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের (এনএসসি) একটি চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্দেশ জারি করা হচ্ছে যে প্রেস পাসধারীরা আগাম অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়া ওভাল অফিসের পাশে অবস্থিত আপার প্রেসে প্রবেশ করতে পারবেন না।

আরও পড়ুনহোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি পদে ২৭ বছরের ক্যারোলিনকে বেছে নিলেন ট্রাম্প১৬ নভেম্বর ২০২৪

চিঠিটি লেভিট ও চুয়াংকে পাঠানো হয়েছে। সেখানে আরও বলা হয়, এ পদক্ষেপের লক্ষ্য আপার প্রেসের সংবেদনশীল উপকরণ অননুমোদিত প্রকাশ থেকে রক্ষা করা।

তবে সাংবাদিকদের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের নানা বিধিনিষেধ আরোপের ধারাবাহিকতায় এ সিদ্ধান্ত এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

হোয়াইট হাউসের ওয়েস্ট উইং। এখানেই ‘আপার প্রেস’ অবস্থিত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ