বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন মামলায় গ্রেপ্তারে অনুমতির সিদ্ধান্ত স্থগিতের আদেশ আপাতত বহাল
Published: 1st, June 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনার মামলায় আসামি গ্রেপ্তারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে, ঢাকা মহানগর পুলিশের এমন সিদ্ধান্ত (অফিস আদেশ) স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ আপাতত বহাল থাকছে। এ-সংক্রান্ত রুল হাইকোর্টে নিষ্পত্তি করতে বলেছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ আজ রোববার এ আদেশ দেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় করা মামলায় আসামি গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে গত ৯ এপ্রিল অফিস আদেশ জারি করা হয়। এই অফিস আদেশের বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো.
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২৩ এপ্রিল হাইকোর্ট রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনার মামলায় আসামি গ্রেপ্তারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এমন সিদ্ধান্তের (অফিস আদেশ) কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। রুলে ৯ এপ্রিলের সিদ্ধান্ত (ডিএমপির) কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
হাইকোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ গত মাসে আপিল বিভাগে আবেদন করে, যা গত ৭ মে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের কার্যতালিকায় ওঠে। সেদিন আদালত আবেদনটি (সিএমপি) আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ আদেশ প্রকাশের পর রাষ্ট্রপক্ষ নিয়মিত লিভ টু আপিল করে। আগের ধারাবাহিকতায় আজ আবেদন দুটি একসঙ্গে শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ২৬ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ শুনানিতে ছিলেন। রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. জসিম উদ্দিন।
আদেশের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্থগিতাদেশ দেননি আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের আদেশ বহাল থাকছে। স্থগিতাদেশ না দিয়ে হাইকোর্টে এ-সংক্রান্ত রুল শুনানি করতে বলেছেন আপিল বিভাগ।’
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিন মাসের জন্য হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ পর্যায়ে। রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল ও আবেদন নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে অবকাশ শেষে আদালত খোলার (২২ জুন) দুই সপ্তাহের মধ্যে এ–সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে।’
ঢাকা মহানগর পুলিশের সদর দপ্তর থেকে কমিশনারের পক্ষে ৯ এপ্রিল ‘অফিস আদেশ’ জারি করেন যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মো. ফারুক হোসেন। অফিস আদেশের ভাষ্য, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন-সংক্রান্ত মামলায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে এজাহারভুক্ত আসামির সংখ্যা অধিক। এসব মামলার এজাহারভুক্ত কিংবা তদন্তে প্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রমাণসহ অবশ্যই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। উপযুক্ত প্রমাণ ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনার মামলার এজাহারভুক্ত কিংবা তদন্তে প্রাপ্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার না করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ষ ট রপক ষ আপ ল ব ভ গ আইনজ ব র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
বাগেরহাটে ৪ আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে রিট
বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং একটি আসন কমিয়ে তিনটি আসন করার নির্বাচন কমিশনের গেজেট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
মানিকগঞ্জে কৃষিজমির মাটি কাটার বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
ডাকসু নির্বাচন স্থগিত চেয়ে করা ছাত্রলীগ নেতার রিট বাতিল
বাগেরহাট প্রেস ক্লাব ও অন্যান্যদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন রিট পিটিশন দাখিল করেন। এছাড়া চিতলমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট ১ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মুজিবর রহমান শামীমের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ আক্তার রসুল একই বিষয়ে পৃথক রিট পিটিশন করেন।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, “আমরা রিট পিটিশন করেছি। আদালত আমাদের কথা শুনেছেন এবং ১০ দিনের রুল জারি করেছেন। আশা করি, আদালতে ন্যায়বিচার পাব এবং বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল থাকবে।”
গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। এরপর থেকে বাগেরহাটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন আন্দোলন শুরু করে। চারটি আসন বহালের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতেও অংশ নেয় তারা।
তবে ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন শুধু সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসন রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে।
চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী বাগেরহাট-১ (সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) নির্ধারণ করা হয়। অথচ দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট), বাগেরহাট-২ (সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) এবং বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
ঢাকা/শহিদুল/বকুল