মে মাসে এলো ২৯৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স
Published: 1st, June 2025 GMT
ঈদের আগের মাস মে-তে রেমিট্যান্স এসেছে ২৯৭ কোটি ডলার। আগের বছরের একই মাসের তুলনায় যা প্রায় ৩২ শতাংশ বেশি। আর একক মাস হিসেবে এ যাবৎকালের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এখন পর্যন্ত কোনো এক মাসে সর্বোচ্চ ৩৩০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে গত ঈদের আগের মাস মার্চে। মূলত অর্থপাচার কমে যাওয়ায় হুন্ডি ব্যাপকভাবে কমেছে। যে কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় ব্যাপক বাড়ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের মে পর্যন্ত ১১ মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীরা মোট ২ হাজার ৭৫১ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ২ হাজার ১৩৭ কোটি ডলার। এর মানে ১১ মাসে বেশি এসেছে ৬১৩ কোটি ডলার বা ২৮ দশমিক ৭ শতাংশ। রেমিট্যান্সের এই উচ্চ প্রবৃদ্ধির কারণে ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে। বৈদেশিক মুদ্রার দর বাজারভিত্তিক করার পরও ১২২ থেকে ১২৩ টাকায় স্থিতিশীল রয়েছে ডলার। আগের মতো ডলার নিয়ে হাহাকার নেই ব্যবসায়ীদের।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে অর্থপাচারে ঠেকাতে কড়াকড়ি করছে সরকার। আগের পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। অর্থপাচারে শীর্ষ সন্দেহভাজন শেখ হাসিনা পরিবার ও ১১ ব্যবসায়ী গ্রুপের বিষয়ে ১১টি যৌথ তদন্ত চলমান আছে। এরই মধ্যে এসব ব্যক্তিদের ১ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি সংযুক্ত করা হয়েছে। এর আগে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রভাব শুরুর পর দেশে লকডাউনের মধ্যে রেমিট্যান্সে এ রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। ২০২০–২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার যা ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি।
রেমিট্যান্সের পাশাপাশি রপ্তানি আয়েও ভালো প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে যা কিছুটা স্বস্তি ফিরিয়েছে। আগে যেখানে ধারাবাহিকভাবে রিজার্ভ কমছিল, এখন বাড়ছে। টানা ২০ মাস পর গত এপ্রিল শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। অবশ্য আকু পরিশোধের পর তা কমে যায়। বর্তমানে রিজার্ভ রয়েছে ২০ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার। আওয়ামী লীগের পতনের সময় রিজার্ভ ছিল যেখানে ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব বাজেট হয়নি: ঢাকা চেম্বার
প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট সার্বিকভাবে ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব হয়নি। কারণ, প্রস্তাবিত বাজেটে বিনিয়োগ সম্প্রসারণ, ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়ন, সিএমএসএমই ও ব্যাংকিং খাত সংস্কারে সুনির্দিষ্ট কোনো দিকনির্দেশনা নেই।
আজ সোমবার সন্ধ্যায় প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এ কথা বলেছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ডিসিসিআইয়ের সহসভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী, সহসভাপতি সালিম সোলায়মানসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা।
তাসকীন আহমেদ বলেন, ব্যাংক খাতে ঋণের সুদের হার কমিয়ে আনাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এ ছাড়া বাজেটে ঘাটতি মেটাতে বেশি মাত্রায় ব্যাংকনির্ভর হওয়া একটি নেতিবাচক দিক। এবারের বাজেটে ব্যবসায় গতি আনার জন্য তেমন কোনো দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়নি।
এ সময় তাসকীন আহমেদ আরও বলেন, ‘বাজেটে মূল্যস্ফীতি কমাতে কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালন ব্যয় বাড়বে। এর ফলে সামগ্রিকভাবে অর্থনীতির গতি কিছুটা মন্থর হয়ে যাবে। এ ছাড়া আর্থিক খাত থেকে অধিক হারে ঋণ সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার কারণে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি আমদানি পর্যায়ে করমুক্ত পণ্যের ওপর ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর আরোপকে আমরা সঠিক মনে করছি না। এতে ব্যবসার কার্যকরী মূলধন কমে যাবে।’
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তাসকীন আহমেদ আরও বলেন, ব্যক্তিগত করের ক্ষেত্রে আয়সীমায় ৫ শতাংশের সীমা উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে আগামী অর্থবছরে দেশের ৫০ শতাংশ মধ্যবিত্ত পরিবারের ওপর বাড়তি করের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এ ছাড়া টার্নওভার কর শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি করেন ডিসিসিআইয়ের সভাপতি।
এ সময় অটোমোবাইল খাতে খুচরা যন্ত্রাংশের আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করায় এই খাতের স্থানীয় উৎপাদন ব্যয় বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি। ইন্টারনেট ব্যবহারে খরচ কমলেও স্থানীয়ভাবে মোবাইল ফোন উৎপাদনে ভ্যাট বাড়ানোয় এ শিল্পের বিকাশ ব্যাহত হবে বলেও মনে করছে ঢাকা চেম্বার।
ডিসিসিআইয়ের সভাপতি আরও বলেন, ‘বাজেটে এলএনজিসহ ব্যবসার কাঁচামাল আমদানিতে কর কিছুটা কমানো হয়েছে। এর ফলে আমাদের হয়তো কয়েক মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমিয়ে আনা যাবে। আমাদের বেসরকারি খাতে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ কমছে। তবে বাজেটে ব্যবসাবান্ধব তেমন কোনো পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাইনি। এসএমই খাতে আমাদের দেশের সর্বমোট শ্রমশক্তির ৫০ শতাংশ ও ৮০ লাখের বেশি মানুষ জড়িত। অথচ বাজেটে এই খাত নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো রোডম্যাপ দেওয়া হয়নি।’
স্টার্টআপ খাত নিয়ে তাসকীন আহমেদ বলেন, এই খাতে ১০০ কোটি টাকার তহবিল গঠনের উদ্যোগ ইতিবাচক। তবে অনলাইন ব্যবসার লেনদেনে শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। তাতে অনলাইনে যাঁরা ব্যবসা করছেন, তাঁদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।