প্রস্তাবিত বাজেট জনবান্ধব: অর্থ উপদেষ্টা
Published: 3rd, June 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট জনবান্ধব। তবে, একেবারেই বাজেট ব্যবসাবান্ধব হয়ে যাবে, তা নয়। ব্যবসায়ীরা বাজেটে ছাড় দেওযার কথা বলেন। কিন্তু, এক জায়গায় ছাড় দিয়ে অন্য জায়গায় কর বসানো, সেটি খুবই কঠিন হয়ে যায়।
মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা মো.
আরো পড়ুন:
এবারের বাজেট সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন হবে: পরিকল্পনা উপদেষ্টা
আমরা ক্ষমতা নিইনি, দায়িত্ব নিয়েছি: অর্থ উপদেষ্টা
অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন, “আমাদের সামনের পথ কঠিন। আমরা চেষ্টা করছি, এনবিআরকে রিঅর্গানাইজ করতে। বাইরে থেকে ঋণ আনার প্রক্রিয়াটাও মোটামুটি নেগোশিয়েট করে ফেলেছি।”
তিনি বলেন, “আমি মনে করি, আমরা জনবান্ধব ও ব্যবসাবান্ধব বাজেট দিতে পেরেছি। অনেকে বলছে, তোমরা আগের পদাঙ্ক অনুসরণ করেছ। হুট করেই যে আমরা একটা বিপ্লবী বাজেট দিয়ে দেব, সেটা তো সম্ভব না। বাজেটে একেবারে যে ইনোভেশন নেই, তা কিন্তু নয়। গতকাল বাজেট দিয়েছি, এটা ওপেন থাকবে। কিছু সাজেশন আসবে। পরবর্তীতে ফাইনাল বাজেটটা আসবে।”
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমি মনে করি, সার্বিকভাবে চ্যালেঞ্জের মুখে আছি। একটু কোলাবোরেটিভ, সিমপেথেটিক হয়ে কাজ করবেন; সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। আমরা একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই যে, এত প্রতিকূলতার মধ্যেও ঘুরে দাঁড়িয়েছি। বাজেটের নির্যাস হলো—সবার জীবনযাপনকে স্বচ্ছ করা, সামাজিক নিরাপত্তা বাড়ানো ও জীবনমান উন্নত করা।”
তিনি আরো বলেন, “সব সময় বাজেট বাড়ে, এবার বাজেটের আকার কমেছে। এতদিন প্রবৃদ্ধি শুনেছেন, কিন্তু প্রবৃদ্ধির সুফল ঠিকভাবে সাধারণ জনগণের মধ্যে পৌঁছায়নি। যাতে মানুষের জীবনযাত্রা সহজ হয়, সেই লক্ষ্য নিয়েই এবারের বাজেট করা হয়েছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা যাতে বাড়ে, সেদিকে লক্ষ্য রাখা হয়েছে।”
সোমবার (২ জুন) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা।
ঢাকা/এনএফ/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
অনুমতি ছাড়াই গাসিক কর্মকর্তা কিবরিয়ার বিদেশ যাত্রা
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে সরকারি চাকরি বিধি লঙ্ঘন, তথ্য গোপন, অনুমতি ছাড়া বিদেশ ভ্রমণ ও বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচারের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর গত ১৫ সেপ্টেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের নাগরিক শাহেদ আলম নামে এক ব্যক্তি।
অভিযোগে বলা হয়েছে, গোলাম কিবরিয়া সরকারি কর্মকর্তা হয়েও তথ্য গোপন করে বেসরকারি পাসপোর্ট (নং A০১২৬৬৬১২) সংগ্রহ করেছেন, যা সরকারি চাকরি বিধিমালার স্পষ্ট লঙ্ঘন। ওই পাসপোর্ট ব্যবহার করে তিনি একাধিকবার কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই বিদেশ ভ্রমণ করেছেন।
অভিযোগকারী দাবি করেন, তিনি ২০২৪ ও ২০২৫ সালের বিভিন্ন সময়ে কানাডা সফর করেছেন, যার কোনো অনুমোদন তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নেননি।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সর্বশেষ ২০২৫ সালের ১৯ জুন কানাডা সফরের সময় তিনি প্রায় ৫০ হাজার মার্কিন ডলার সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন।
অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়, গোলাম কিবরিয়া নিয়মিত বিদেশ ভ্রমণের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করে কানাডায় সেকেন্ড হোম এবং ব্যবসায়িক বিনিয়োগ করেছেন। তার নামে সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা পাচারের দুর্নীতির মামলাও চলমান রয়েছে। এমন অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি এখনো পদে বহাল থেকে প্রভাব খাটাচ্ছেন এবং যেকোনো সময় বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অভিযোগকারী বলেন, “তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়েও কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নিয়মিত বিদেশে যাচ্ছেন, যা সরকারি চাকরি বিধিমালার সরাসরি লঙ্ঘন এবং গুরুতর শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”
সূত্র জানায়, গোলাম কিবরিয়া গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের একজন বিতর্কিত কর্মকর্তা। তার নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি এখন ওপেন সিক্রেট। তিনি দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করে কানাডায় স্থায়ী হওয়ার চেষ্টা করছেন। গাজীপুরবাসীর স্বার্থে এমন বেপরোয়া ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (যুগ্ম সচিব) মুহাম্মদ সোহেল হাসান বলেন, “লিখিত অভিযোগটি প্রাথমিকভাবে যাচাই করা হয়েছে। প্রশাসক মহোদয় বিষয়টি নিয়ে অবগত আছেন। তথ্য গোপন করে বিদেশ যাত্রা শাস্তিযোগ্য অপরাধ, প্রমাণ মিললে বিভাগীয় তদন্তে পাঠানো হবে।”
এ বিষয়ে জানতে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সচিব মো. আমিন আল পারভেজ বলেন, “বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছি। অভিযোগ পাওয়ার পর তাকে শোকজ করা হয়েছিল এবং তিনি জবাবও দিয়েছেন। শোকজের প্রতিবেদনটি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি।”
এ বিষয়ে গোলাম কিবরিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/রেজাউল/এস