যশোরে প্রাইভেট কার থামিয়ে নগদ এজেন্টের ‘৫৫ লাখ টাকা’ ছিনতাইয়ের অভিযোগ
Published: 17th, June 2025 GMT
যশোরের মনিরামপুর উপজেলায় প্রাইভেট কার থামিয়ে মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নগদের এক এজেন্টের ‘৫৫ লাখ টাকা’ ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার রাজারহাট-চুকনগর আঞ্চলিক মহাসড়কের কুয়াদা এলাকার জামতলা মোড়ে এ ঘটনা ঘটে বলে পুলিশকে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
নগদের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে পুলিশ বলছে, নগদের যশোর এজেন্ট আলমগীর কবির ওরফে হাজি সুমন। তাঁর প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক রবিউল ইসলাম যশোর শহরের এজেন্ট কার্যালয় থেকে প্রাইভেট কারে করে ৫৫ লাখ টাকা নিয়ে মনিরামপুর উপজেলা কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন। সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে প্রাইভেট কারটি মনিরামপুরের কুয়াদা এলাকার জামতলা মোড়ে পৌঁছায়। এ সময় একটি মোটরসাইকেলে থাকা দুই ব্যক্তি প্রাইভেট কারের সামনে মোটরসাইকেল আড়াআড়ি করে দিয়ে প্রাইভেট কারটির গতি রোধ করেন। এ সময় তাঁদের সহযোগী আরও দুই ব্যক্তি মোটরসাইকেলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তাঁরা প্রাইভেট কারের গ্লাস ভেঙে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে মনিরামপুর উপজেলা সদরের দিকে দ্রুত মোটরসাইকেল চালিয়ে পালিয়ে যান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আলমগীর কবির যশোর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর। তিনি যশোরে আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন।
এ বিষয়ে মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবলুর রহমান খান বলেন, প্রাইভেট কার থামিয়ে নগদের এজেন্ট হাজি আলমগীর কবির ওরফে হাজি সুমনের টাকা ছিনতাই করা হয়েছে। জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ থেকে কল পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ছিনতাইয়ের টাকার পরিমাণের ব্যাপারে ব্যবস্থাপক একেক সময় একেক রকমের তথ্য দিচ্ছেন। কখনো ৫৫ লাখ আবার কখনো ৩৫ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের কথা বলছেন। তাঁর কথাবার্তা সন্দেহজনক। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।
ওসি বলেন, নগদের এজেন্টের পক্ষ থেকে রাত সোয়া আটটা পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পাওয়ার পর এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আসামিদের হুমকিতে অসহায় মা, নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি
খুলনা মহানগরীর লবণচরার বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার ঘের ব্যবসায়ী মো. আলমগীর হোসেন বিদ্যুৎ (২৪) হত্যা মামলার বিচার কাজ এক যুগ অতিবাহিত হলেও এখনো শেষ হয়নি। মামলার দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে আসামিরা জামিনে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন নিহতের পরিবারকে। তাদের বিরুদ্ধে বাদীর অপর ছেলেকে হত্যার ভয়-ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে।
এ অবস্থায় সাক্ষীদের নিরাপত্তা দিয়ে সাক্ষ্য গ্রহণের ব্যবস্থা এবং আসামিদের অপতৎপরতা থেকে রক্ষা করে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির আহ্বান জানিয়েছেন নিহত বিদ্যুতের মা জাহানারা বেগম। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিচার বিভাগ, পুলিশ বিভাগ ও সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
আরো পড়ুন:
কেএমপির ৮ থানার ওসি রদবদল
জলবায়ু পরিবর্তন আজকের বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ: ইইউ রাষ্ট্রদূত
লিখিত বক্তব্যে জাহানারা বেগম বলেন, “২০১২ সালের ৪ ডিসেম্বর সন্ত্রাসীরা আমার ছোট ছেলে মো. আলমগীর হোসেন ওরফে বিদ্যুৎকে (২৪) নগরীর খানজাহান আলী (র.) সেতু এলাকায় নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনার পর ৭ ডিসেম্বর আমি বাদী হয়ে খুলনা সদর থানায় হত্যা মামলা করি (মামল নং- ০৩)। মামলাটি বর্তমানে খুলনা মহানগর দায়রা জজ (মামলা নং: ৪৪৯/১৫) বিচারাধীন আছে।”
“মামলায় লবণচরা বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার নাজিম খলিফার দুই ছেলে আরমান খলিফা ও আরিফ খলিফা, লবণচরা মোহাম্মদীয়া পাড়া মসজিদ এলাকার আব্দুল জলিল হাওলাদারের ছেলে হারুন হাওলাদার, লবণচরা ইব্রাহীমিয়া মাদরাসা রোড এলাকার হামিদ মিস্ত্রীর ছেলে মো. সিরাজ এবং লবণচরা মোক্তার হোসেন রোড এলাকার হযরত আলী ফকিরের ছেলে বাদল ফকিরকে আসামি করা হয়। এ মামলায় আসামিরা বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারেও ছিলেন। আসামিরা জামিনে মুক্তি পেয়ে জেল থেকে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে নানাভাবে হুমকি-ধামকি অব্যাহত রেখেছে। এই সব আসামিদের বিরুদ্ধে একাধিক থানায় বিভিন্ন মামলাও রয়েছে”, যোগ করেন তিনি।
জাহানারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, “আমার কলিজার টুকরো সন্তানকে হত্যা করেও সন্ত্রাসীরা ক্ষ্যান্ত হয়নি। উপরন্ত জামিনে মুক্তি পেয়ে তারা এখন মামলা তুলে নিতে আমি ও আমার এক মাত্র সন্তান এবং মামলার স্বাক্ষীদের জীবননাশসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে বারবার সাধারণ ডায়রি (জিডি) করার ফলে হত্যাকারী-সন্ত্রাসীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। যে কোন সময় তারা আমি ও আমার বড় ছেলেসহ আমার পরিবারের সদস্যদের বড় ধরণের ক্ষতি করতে পারে। এ অবস্থায় আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি।”
তিনি আরো বলেন, “হত্যাকারী-আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ভয়ে আমি এখন পর্যন্ত খুলনা ও লবণচরা থানায় চারটি সাধারণ ডায়রি করেছি। সর্বশেষ গত ৩ মার্চও আমি লবণচরা থানায় জিডি করি। কারণ ২ মার্চ দুপুরে মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রধান আসামি আরমান তার ভাই আরিফ এবং অপর আসামি জুয়েল শেখ, হারুন হাওলাদার, সিরাজ ও বাদল ফকিরসহ আরো অনেকে আমার বাসার সামনে এসে মামলা তুলে নেয়ার জন্য ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়। এমনকি তারা আমাকে ও আমার বড় ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন বিপ্লবকেও হত্যা করবেন বলেও হুমকি দেয়। এ ছাড়া, একই ধরণের ভয়ভীতি ও হুমকির কারণে আমি ২০১৪ সালের ৪ মার্চ ও ২ মে খুলনা থানায় এবং একই বছরের ৪ মে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে লবণচরা থানায় সাধারণ ডায়রি করি।”
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ