গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার অফিস ঘরে প্রবেশ করে পাশে অবস্থিত স্কাউট কার্যালয় থেকে দুটি সিলিং ফ্যান ও বৈদ্যুতিক তার চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় চরম উদ্বেগ ও ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় ক্রীড়া সংশ্লিষ্টরা। 

চাবির দায়িত্ব ও নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল ভূঁইয়া দায় নিচ্ছেন না। ক্রীড়া সংস্থার অফিসের চাবি কার কাছে আছে, তা তিনি জানেন না বলে নিজের দায় এড়ানোর চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল বুধবার (১৮ জুন) সকালে স্কাউট কার্যালয়ে চুরির বিষয়টি নিশ্চিত করেন স্কাউট কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও মসলিন কটন মিলস উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক আব্দুল আলীম। এ ঘটনায় নিজে বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন বলেও জানান তিনি। 

স্কাউট সাধারণ সম্পাদক জানান, ঈদের ছুটির পর গত ১৫ জুন (রোববার) সন্ধ্যায় স্কাউট কার্যক্রম শুরুর প্রস্তুতিকালে দেখা যায়, অফিসে থাকা দুটি সিলিং ফ্যান ও বৈদ্যুতিক তার চুরি হয়ে গেছে। স্কাউট অফিসের তালা অক্ষত থাকলেও ধারণা করা হচ্ছে, চোরেরা পাশের ক্রীড়া সংস্থার অফিস দিয়ে প্রবেশ করে সিলিংয়ের ফাঁক দিয়ে স্কাউট অফিসে ঢুকে চুরি করে নিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, “স্কাউট অফিসের দরজা তালাবদ্ধ ছিল। কিন্তু ভিতরে ঢুকে দেখি ফ্যান ও বৈদ্যুতিক তার নেই। তখন বুঝতে পারি, পাশের অফিসের সিলিং ব্যবহার করে কেউ ভিতরে ঢুকেছে। ঘটনার পরদিন বিষয়টি গত (১৬ জুন) (সোমবার) ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।”

স্থানীয়রা বলছেন, ক্রীড়া সংস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ অফিসের চাবি নিয়ে এমন দায়িত্বহীনতা প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনার বড় উদাহরণ। দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের শনাক্ত না করলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা কঠিন হবে।

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় ক্রীড়া সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করে বলেন, ক্রীড়া সংস্থার বর্তমান সাধারণ সম্পাদক দায়িত্ব গ্রহণের পর ক্রীড়া ক্ষেত্রে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। বরং ব্যক্তি প্রচার আর পদমর্যাদার পেছনে বেশি সময় দিচ্ছেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা (চ.

দা.) মো. ইসমাইল ভূঁইয়া বলেন, “আমি জানি না ক্রীড়া সংস্থার অফিসের চাবি কার কাছে ছিল। নতুন করে তালা লাগানো হয়েছে।”

তবে সম্পাদক হিসেবে চাবির দায়িত্ব ও অবস্থান জানা তার দায়িত্ব নয় কি? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। চাবি কার কাছে আছে, সেটি আমার জানা নেই।”

উল্লেখ্য, গেল বছরের ১৭ নভেম্বর কালীগঞ্জ উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন বদলি হওয়ার পর, একই দিন বর্তমান যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. ইসমাইল ভূঁইয়া চলতি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ফলে পদাধিকারবলে তিনিই বর্তমানে কালীগঞ্জ উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে গত প্রায় ৮ মাস ধরে দায়িত্ব পালন করছেন।

ঢাকা/রফিক/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স স থ র অফ স স ক উট ক অফ স র

এছাড়াও পড়ুন:

সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতার সমর্থকদের

চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীকে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ায় তাঁর বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকেরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী শহীদ মিনার এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেন তাঁরা।

এ সময় বিক্ষোভকারীরা টায়ার জ্বালিয়ে স্লোগান দেন। এ ছাড়া মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করার খবর পাওয়া গেছে। রাত সাড়ে আটটার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করে মিছিল করছিলেন বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা।

এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের নাম ঘোষণা করা হয়। বাদ পড়েন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী।

এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আসলাম চৌধুরীর কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে দেন। এ সময় তাঁরা ‘দুর্দিনের আসলাম ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই’ ‘আসলাম ভাইয়ের ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ এমন স্লোগান দেওয়া হয়।

বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতা-কর্মীরা বলছেন, আসলাম চৌধুরী দলের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ করেছেন। তিনি দলের জন্য কাজ করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের রোষানলে পড়ে কারাবন্দী হন। দীর্ঘ সময় তিনি জেল-জুলুম অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেছেন। অথচ এখন সুসময়ে দল তাঁকে বঞ্চিত করছে। তাঁরা দলের এ সিদ্ধান্ত মানেন না। তাই প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছেন তাঁরা।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মো. মোরসালীন প্রথম আলোকে বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থী ঘোষণার পর বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। তাঁরা যে যাঁর জায়গা থেকে মহাসড়কে উঠে প্রতিবাদ শুরু করেন। তাঁরা অন্তত সীতাকুণ্ডের ৩০টি স্থানে মহাসড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।

ঘোষিত প্রার্থী কাজী মুহাম্মদ সালাউদ্দিন উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব কাজী মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের ছোট ভাই। একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম তাঁকে যোগ্য মনে করেছেন বিধায় তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছে। তিনি দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন করতে চান। এর আগে ২০১৪ সালে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন।

ফৌজদারহাট পুলিশ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, ফৌজদারহাট-বন্দর সংযোগ সড়কের মাথা, ফৌজদারহাট, জলিল গেইট, ভাটিয়ারী, মাদামবিবিরহাট, কদমরসুল এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা। এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ রয়েছে। ফলে উভয় দিকে যান চলাচল বন্ধ। পুলিশ বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের সরাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ