ইসরায়েল ও ইরান পরপর সাত দিন ধরে একে অপরের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে এবং গোটা অঞ্চল এখন একটি বৃহত্তর যুদ্ধের আশঙ্কায় স্নায়ুচাপের মধ্যে রয়েছে। তবে দুই দেশের পক্ষে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ পরিচালনার আর্থিক সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের শীর্ষ সামরিক কমান্ডার ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের হত্যা করে এবং কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনার ক্ষতি করে। এরপর তারা ইরানের কয়েকটি জীবাশ্ম জ্বালানি ক্ষেত্রেও আঘাত হানে। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরান ইসরায়েলের সরকারি ভবন ও মহানগর এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ২৪০ জন নিহত হয়েছে এবং ইরানের পাল্টা হামলায় নিহত হয়েছে কমপক্ষে ২৪ জন।

আরো পড়ুন:

ইরানে রেজিম চেঞ্জ: পশ্চিমা বিশ্বের ‘ভন্ডামির ইতিহাস’

তেহরানের ‘জেন জি’: আমার ঘরই আমার কবর হোক, তবু উদ্বাস্তু হয়ে বাঁচব না

যুদ্ধের ব্যয়: ইসরায়েলের ওপর চাপ
ইসরায়েলের জন্য এই যুদ্ধ অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক ব্যয়বহুল হয়ে উঠছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে এবং ইরানের সঙ্গে সাম্প্রতিক উত্তেজনার জেরে দেশটি তার ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যয়বহুল সামরিক সময় পার করছে।

ইসরায়েলের অর্থনৈতিক পত্রিকা ক্যালকালিস্ট-এর জানুয়ারি ২০২৪-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা যুদ্ধের একক ব্যয় ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ পৌঁছেছে ২৫০ বিলিয়ন শেকেল বা আনুমানিক ৬৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

ইউনেট নিউজ-এর ১৫ জুনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের সঙ্গে যুদ্ধের প্রথম দুই দিনে ইসরায়েলের ব্যয় হয়েছে প্রায় ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন শেকেল (প্রায় ১.

৪৫ বিলিয়ন ডলার)। এই হারে চলতে থাকলে ইরানের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ গাজা যুদ্ধের মোট ব্যয়কে মাত্র সাত সপ্তাহের মধ্যেই ছাড়িয়ে যেতে পারে।

চাপ ও শঙ্কা
এই ধরনের অর্থনৈতিক চাপ ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক পরিকল্পনা, বাজেট ও প্রবৃদ্ধি সম্ভাবনার ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে। একই ধরনের আর্থিক সংকটে ইরানও পড়তে পারে, বিশেষ করে তাদের ওপর চলমান নিষেধাজ্ঞা ও অর্থনৈতিক দুরবস্থার কারণে।

এখন প্রশ্ন হলো- এই দুই দেশ তাদের আর্থিক ও রাজনৈতিক সক্ষমতা দিয়ে কতদিন এই যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারবে এবং তাতে গোটা অঞ্চলের ভবিষ্যৎই বা কোন দিকে মোড় নেবে?

ইরানের সঙ্গে উত্তেজনার আগেই প্রতিরক্ষা ব্যয় বেড়েছিল, এখন ইসরায়েলের অর্থনীতি আরো চাপে
ইসরায়েল ২০২৩ ও ২০২৪ সালে তার প্রতিরক্ষা ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছে। এখন ইরানের সঙ্গে চলমান সংঘাত সেই চাপ আরো বাড়াচ্ছে এবং দেশের ঋণ পরিস্থিতি, বাজেট ঘাটতি ও আর্থিক স্থিতিশীলতার ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে।

প্রতিরক্ষা বাজেটের ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধির চিত্র দেখে আসা যাক। ২০২৩ সালে ১৭ বিলিয়ন ডলার, ২০২৪ সালে ২৮ বিলিয়ন ডলার, ২০২৫ সালে (প্রাক্কলন) ৩৪ বিলিয়ন ডলার।

ইসরায়েলের অর্থ মন্ত্রণালয় ২০২৪ অর্থবছরের জন্য জিডিপির ৪ দশমিক ৯ শতাংশ ঘাটতির সীমা নির্ধারণ করেছে, যা ২৭ দশমিক ৬ বিলিয়নের সমান। সামরিক ব্যয়ের এই রেকর্ড বৃদ্ধির ফলে সেই ঘাটতি সীমা লঙ্ঘিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ঋণ ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি
সম্প্রতি ইসরায়েলের কর রাজস্বের পূর্বাভাস বাড়িয়ে ১৪৮ থেকে ১৫৪ বিলিয়ন করা হয়েছে। তবে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৪ দশমিক ৩ শতাংশের পরিবর্তে কমিয়ে ৩ দশমিক ৬ করা হয়েছে।

বাণিজ্যিক জরিপ সংস্থা কোফেসবিডিআই-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে প্রায় ৬০ হাজার ইসরায়েলি কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেছে মূলত জনশক্তি সংকট ও সরবরাহ সমস্যার কারণে।
ওই জরিপে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের পর্যটন খাতেও মন্দা চলছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরের আগের অবস্থায় ফিরতে পারছে না।

যদি ইরানের সঙ্গে একটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ শুরু হয়, তবে এই প্রবণতাগুলো আরো খারাপ হতে পারে।

আন্তর্জাতিক সতর্কতা
এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রেটিংস ১৭ জুন ইসরায়েলি অর্থনীতির দুর্বলতা নিয়ে একটি কড়া সতর্কতা জারি করে বলেছে, যদি যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং ইরান কৌশলগতভাবে পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেয়, তাহলে ইসরায়েলের ক্রেডিট রেটিং এ থেকে এ মাইনাসে নামিয়ে দেওয়া হতে পারে।

তারা আরো বলেছে, এমন হলে ঋণের সুদের হার বাড়বে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা দুর্বল হতে পারে, যা দেশের দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

সামরিক ব্যয়, ঋণ ঘাটতি, কমে যাওয়া প্রবৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক ক্রেডিট রেটিং; সব মিলিয়ে পরিস্থিতি একটি ভঙ্গুর অর্থনৈতিক বাস্তবতার দিকে যাচ্ছে।

ইসরায়েলি হামলায় ইরানের তেলখাত ক্ষতিগ্রস্ত
চলমান সংঘাতে ইরানের জ্বালানি খাত বিশেষ করে তেল ও গ্যাস শিল্প গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইসরায়েলি হামলার ফলে রপ্তানি ব্যাহত হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো অচল হয়েছে এবং রাজস্বের ওপর চাপ বেড়েছে।

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইরানের তেল রপ্তানি খুবই কমে গেছে। চলতি বছর প্রতিদিন গড়ে ২ লাখ ৪২ হাজার ব্যারেল তেল রপ্তানি করেছে দেশটি। কিন্তু গত সপ্তাহে দিনে রপ্তানি নেমে এসেছে মাত্র ১ লাখ ২ হাজার ব্যারেলে, যা গড়ের চেয়ে ৫৮ শতাংশ কম।

এলএসইজি-এর স্যাটেলাইট শিপ ট্র্যাকিং জানিয়েছে, ইরানের খার্গ দ্বীপ থেকে দেশটির ৯০ শতাংশের বেশি তেল রপ্তানি হয়। তবে শুক্রবার (১৩ জুন) থেকে সেখানে সব রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। সোমবার (১৬ জুন) পর্যন্ত সেখানে একটি ট্যাঙ্কারও নোঙর করেনি। 

উৎপাদন ও প্রধান ক্রেতা
যুক্তরাষ্ট্রের এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বলেছে, ২০২৫ সালে ইরান দৈনিক গড়ে ৩ দশমিক ৪ মিলিয়ন ব্যারেল ক্রুড তেল উৎপাদন করেছে। এর বেশিরভাগ ঘরোয়া চাহিদা পূরণে ব্যবহৃত হয়েছে। 

ইরানের রপ্তানির তেলের প্রধান ক্রেতা মনে করা হয় চীনকে।

গ্যাস খাতেও বড় ধাক্কা
ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইরান পারস্য উপসাগরের সাউথ পার্স গ্যাসক্ষেত্রে উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। এই ক্ষেত্রটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্র, যা ইরান কাতারের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছে। এটি ইরানের মোট গ্যাস উৎপাদনের প্রায় ৮০ শতাংশ যোগান দেয়।

ইরানের জ্বালানি খাতে সাম্প্রতিক হামলার পূর্ণ ক্ষয়ক্ষতি এখননো অজানা। তবে নিষেধাজ্ঞা দীর্ঘদিন ধরেই দেশটির অর্থনীতিকে দুর্বল করে রেখেছে। 

ইসরায়েলের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাউথ পার্স গ্যাসক্ষেত্র এবং সাহর রে রিফাইনারি ও তেহরানের আশপাশের জ্বালানি ডিপো। তবে ঠিক কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা এখনো পরিষ্কারভাবে জানা যায়নি। ইরানের জ্বালানি খাত যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার চাপের মধ্যে যখন ঠিকে থাকার লড়াই করছে, তখন তাতে হামলা চালাল ইসরায়েল।

নিষেধাজ্ঞার ইতিহাস ও প্রভাব
১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লব ও মার্কিন দূতাবাস জিম্মি সংকটের পর থেকেই ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়। পরবর্তীতে পারমাণবিক কর্মসূচি ঘিরে নিষেধাজ্ঞা আরো কঠোর হয়।

ইরানের ওপর চাপ বাড়াতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বিশ্বের বড় অর্থনীতিগুলোকে উৎসাহিত করেন; যেন তারা ইরান থেকে তেল কেনা কমিয়ে দেন বা বন্ধ করেন। ফলস্বরূপ ইরানের বৈদেশিক মুদ্রা আয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।

২০১৫ সালের পর কিছু স্বস্তি পায় ইরান। ইরান জিসিপিওএ পারমাণবিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করে (যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে)। এর পরের বছর ২০১৬ সালে ইরান প্রতিদিন ২ দশমিক ৮ মিলিয়ন ব্যারেল পেট্রোলিয়াম পণ্য রপ্তানি করেছিল।

ট্রাম্প প্রশাসনের সময় ফের নিষেধাজ্ঞা
২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জিসিপিওএ চুক্তি থেকে সরে এসে নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপ করেন এবং আরো কঠোর ব্যবস্থা নেন। আবার দেশগুলোকে ইরানের তেল না কেনার জন্য চাপ দেওয়া হয়। ফলে ২০২২ ও ২০২৩ সালে ইরান তেল রপ্তানি থেকে মাত্র ৫০ বিলিয়ন ডলার আয় করতে পেরেছে, যা দৈনিক গড়ে মাত্র ২ লাখ ব্যারেল, অর্থাৎ ২০১৬ সালের তুলনায় ১০ শতাংশেরও কম।

চীনের ভূমিকা ও ইরানের টিকে থাকা
চীনই এখন ইরানের প্রধান তেল ক্রেতা এবং স্বল্পসংখ্যক বাণিজ্য অংশীদারদের একজন, যারা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তেহরানের সঙ্গে লেনদেন করে যাচ্ছে। চীনের সহায়তাতেই ইরান সম্পূর্ণ অর্থনৈতিক পতন থেকে নিজেকে আংশিকভাবে রক্ষা করতে পেরেছে।

নিষেধাজ্ঞা ইরানের বৈদেশিক মুদ্রা আয়কে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, ফলে দেশটিতে বিনিয়োগ হ্রাস, অবকাঠামোর উন্নয়নে ব্যর্থতা এবং দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক স্থবিরতা সৃষ্টি হয়েছে।

প্রেসিডেন্টের প্রতিক্রিয়া
নতুন প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান বেশ কয়েকবার দেশের অর্থনৈতিক সংকটের তীব্রতা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই মুহূর্তের সংকট এমনকি ১৯৮০-এর দশকের ইরান-ইরাক যুদ্ধকালীন অবস্থার চেয়েও খারাপ।

মার্চ মাসে তিনি প্রকাশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞা, বিশেষ করে ইরানি তেলবাহী ট্যাংকার লক্ষ্য করে নেওয়া পদক্ষেপের সমালোচনা করেন।

ইরানের সংকট শুধু যুদ্ধ নয়, আরো কিছু
ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান সংঘাতের মধ্যেও ইরানকে একাধিক অভ্যন্তরীণ সংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছে। জ্বালানি ও পানি ঘাটতি, মুদ্রামূল্যের পতন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, দারিদ্র্য, বেকারত্ব এবং সামরিক বাজেটের সীমাবদ্ধতা সব মিলিয়ে দেশটি গভীর ও বহুমাত্রিক সংকটে রয়েছে।

প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদন হ্রাস ও নিম্নমানের সেচব্যবস্থার কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং পানির সংকট ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। বিনিয়োগের অভাব এই সংকটকে আরো গভীর করে তুলছে।

২০১৮ সালে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের পর থেকে রিয়াল মুদ্রার দাম ডলারের বিপরীতে ৯০ শতাংশের বেশি কমেছে। সরকারি মূল্যস্ফীতি হার ৪০ শতাংশ বলা হলেও বাস্তবে তা ৫০ শতাংশেরও বেশি। এর ফলে আমদানি পণ্যের দাম আকাশছোঁয়া এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়েছে।

টিএস ল্যামবার্ড-এর বিশ্লেষক হামজেহ আল গাওয়াদ বলেন, “বহু বছরের নিষেধাজ্ঞা রিয়ালের অবমূল্যায়নের মাধ্যমে তীব্র মূল্যস্ফীতি সৃষ্টি করেছে। এর ফলে বিদেশি পণ্যের দাম বেড়ে গেছে।”

ইরানের সংবাদ সংস্থা তাসনিমের চলতি বছরের জানুয়ারির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২২ থেকে ২৭ শতাংশ ইরানি এখন দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেন। সরকারিভাবে বেকারত্বের হার ৯ দশমিক ২ শতাংশ। কিন্তু শ্রমজীবীদের প্রতিনিধি সংগঠন বলছে, প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি, বিশেষ করে যারা বেঁচে থাকার মতো কাজও পাচ্ছে না।

সামরিক ব্যয় ও সীমাবদ্ধতা
ইরান জিডিপির মাত্র ৩ থেকে ৫ শতাংশ প্রতিরক্ষায় ব্যয় করে, যা আনুমানিক ১২ বিলিয়ন ডলার। তাদের মোট বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, তা যদি স্বল্পমেয়াদি যুদ্ধে ব্যবহার করা হয়, তাহলে দীর্ঘমেয়াদে অর্থনীতি ভেঙে পড়বে।

আল গাওয়াদ বলেছেন, “যুদ্ধে রিজার্ভ ব্যবহার করলে ভবিষ্যতের জন্য মারাত্মক ক্ষতি হবে। সাম্প্রতিক সময়ে জনগণের মধ্যে কিছুটা ‘জাতীয় পতাকার নিচে একত্র হওয়ার’ মনোভাব দেখা গেলেও যদি হামলা ও সাধারণ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া বাড়ে; তবে এই মনোভাব দ্রুত পাল্টে যেতে পারে।”

ঢাকা/রাসেল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল য ক তর ষ ট র র ২০২৩ স ল ২০২৪ স ল ল র অর থ ব শ ষ কর আর থ ক স র ওপর চ ন ইসর য ইসর য় ল ল র পর র জন য দশম ক চলম ন

এছাড়াও পড়ুন:

সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশের নামে জমায় উল্লম্ফন

সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশের নামে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ বেড়েছে। বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক (এসএনবি) বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে ২০২৪ সালে তাদের দেশের ব্যাংকগুলোর দায় ও সম্পদের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে।

প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সাল শেষে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে বাংলাদেশের নামে পাওনা রয়েছে ৫৯ কোটি ৮২ লাখ সুইস ফ্রাঁ। বাংলাদেশি মুদ্রায় ( প্রতি ফ্রাঁ ১৫০ টাকা ধরে ) যার পরিমাণ ৮ হাজার ৯৭২ কোটি টাকা। ২০২৩ সাল শেষে যার পরিমাণ ছিল ২ কোটি ৬৪ লাখ ফ্রাঁ। এখনকার বিনিময় হার ধরলে যার পরিমাণ ৩৯৬ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশের নামে থাকা অর্থের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ২৩ গুণ। ২০২২ সাল শেষে বাংলাদেশের কাছে সুইজারল্যান্ডের দায় ছিল ৫ কোটি ৮৪ লাখ সুইস ফ্রাঁ বা প্রায় ৮৭৬ কোটি টাকা।

সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে দায়ের মধ্যে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর পাওনা, আমনাতকারীদের পাওনা এবং পুঁজিবাজারে বাংলাদেশের নামে বিনিয়োগের অর্থ রয়েছে। এর মধ্যে ৯৫ শতাংশের বেশি বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর পাওনা, যা বাণিজ্য কেন্দ্রিক অর্থ বলে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে থাকা অর্থের একটি অংশ পাচার করা সম্পদ হতে পারে বলে ধারণা রয়েছে। তবে এ বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। কয়েক বছর ধরে সুইজারল্যান্ড বার্ষিক ব্যাংকিং পরিসংখ্যান প্রকাশ করছে।  বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বা বিএফআইইউ সুইজারল্যান্ডের এফআইইউর সঙ্গে কয়েক দফা যোগাযোগও  করেছিল। কিন্তু ব্যক্তির তালিকা সম্বলিত কোনো তথ্য তারা দেয়নি। 

সুইজারল্যান্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, অবৈধভাবে কেউ অর্থ নিয়ে গেছে এমন প্রমাণ সরবরাহ করলে তারা তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে পারে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের কোনো নাগরিক বা প্রতিষ্ঠান যদি নিজের বদলে অন্য দেশের নামে অর্থ গচ্ছিত রাখে তাহলে তা সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশের নামে থাকা পরিসংখ্যানের মধ্যে আসেনি। একইভাবে সুইস ব্যাংকে গচ্ছিত রাখা মূল্যবান শিল্পকর্ম, স্বর্ণ বা দুর্লভ সামগ্রীর আর্থিক মূল্যমান হিসাব করে এখানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। অনেক দেশের নাগরিকই মূল্যবান সামগ্রী সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকের ভল্টে রেখে থাকেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ১৩%
  • ফাঁস হওয়া ফোনালাপে সংকটে থাই সরকার, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমাপ্রার্থনা
  • জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মরণে নির্মাণ হবে গণমিনার
  • চট্টগ্রামে সাবেক এমপি ফজলে করিম নতুন ২ মামলায় গ্রেপ্তার
  • সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশের নামে জমায় উল্লম্ফন
  • যে পাঁচটি কোম্পানির শেয়ারের দাম সবচেয়ে বেশি কমল
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের ফরম পূরণের সময় ২৩ জুন পর্যন্ত বাড়ল
  • শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধিতে শীর্ষ পাঁচ কোম্পানি
  • গল থেকে শুরু নতুন অভিযান