বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদের সভাপতি প্রার্থী জাকির হোসেন
Published: 20th, June 2025 GMT
দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের ২০২৫-২৭ মেয়াদের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদ। তাদের প্যানেল লিডার বা সভাপতি পদে প্রার্থী হবেন জাকির হোসেন। তিনি বাংলাদেশ সিএনজি যন্ত্রপাতি আমদানিকারক সমিতির সভাপতি।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) গতকাল বৃহস্পতিবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদের উপদেষ্টা গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী এই ঘোষণা দেন। তিনি জানান, শিগগিরই পুরো প্যানেলের নাম ঘোষণা করা হবে।
বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদ পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক গিয়াস উদ্দীন খোকন, বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদের সদস্যসচিব মো.
আগামী নির্বাচনে বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদের সভাপতি প্রার্থী জাকির হোসেন বলেন, বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময় একটি বিশেষ স্থান থেকে ওহি নাজিলের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হতেন। এ সময় সাধারণ ভোটারের তেমন মূল্য ছিল না। বিরোধী মতের কেউ নির্বাচন করতে চাইলে তাঁকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হতো। ফেডারেশনে ঢুকতে দেওয়া হতো না। এখন সংস্কার হওয়াতে এই চর্চা থাকবে না।
জাকির হোসেন আরও বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন অবহেলিত ছিলেন। তাঁদের দিকে নজর দেওয়ার সুযোগ এসেছে। তা ছাড়া ব্যবসায়ীদের ভেতর নারী উদ্যোক্তা কম। মোট ব্যবসায়ীদের মধ্যে মাত্র ১২ শতাংশ। তাঁদের সংখ্যা না বাড়ালে ব্যবসা টেকসই হবে না।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এফবিসিসিআইয়ের পরিচালনা পর্ষদের পদত্যাগের দাবিতে তৎপর হন সদস্যদের একাংশ। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সভাপতি পদ থেকে মাহবুবুল আলম পদত্যাগ করেন। পরে ১১ সেপ্টেম্বর এফবিসিসিআইয়ের পর্ষদ বাতিল করে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য মো. হাফিজুর রহমানকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচন বোর্ড গত বুধবার ২০২৫-২৭ মেয়াদে ফেডারেশনের পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনের তফসিল প্রকাশ করেছে। তফসিল অনুযায়ী, ৪৬ জনের পর্ষদের মধ্যে সভাপতি, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও সহসভাপতির বাইরে ৪২ জন পরিচালক থাকবেন। তাঁদের মধ্যে পণ্যভিত্তিক বাণিজ্য সংগঠন বা অ্যাসোসিয়েশন ও চেম্বার গ্রুপ থেকে ১৫ জন করে ৩০ জন সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হবেন। বাকি ১২ জন মনোনীত পরিচালকের মধ্যে অ্যাসোসিয়েশন ও চেম্বার থেকে ৫ জন করে ১০ জন এবং নারী চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন থেকে ১ জন করে ২ জন আসবেন।
নতুন বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা অনুযায়ী এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচনে সভাপতি, সহসভাপতি ও পরিচালক পদে এবার সরাসরি ভোট হবে। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর ফেডারেশনের সাধারণ পরিষদের সদস্যরা ভোট দিয়ে সভাপতি, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি, ২ জন সহসভাপতি এবং ৩০ জন পরিচালক নির্বাচিত করবেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এফব স স আইয় র ব যবস য় সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
বৃহস্পতিবার গণসংযোগ, রবিবার থেকে কঠোর কর্মসূচি
সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ বাতিলের দাবিতে বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা কর্মচারী ঐক্য ফোরাম। সচিবালয়ে ৪ নম্বর ভবনের সামনে এই কর্মসূচি পালন করবেন তারা। দাবি মেনে নেওয়া না হলে, রবিবার (২২ জুন) থেকে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
বুধবার (১৮ জুন) সচিবালয়ে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও এক উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি প্রদান শেষে সচিবালয় কর্মকর্তা কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার সচিবালয়ের চার নম্বর ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে ওই ভবনে গণসংযোগ কর্মসূচি করা হবে। আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। আগামী রবিবার আমরা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব।”
আরো পড়ুন:
সচিবালয়ে আন্দোলন
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন কর্মচারীরা
সচিবালয়ে কর্মচারীদের বিক্ষোভ, চলবে মঙ্গলবারও
এর আগে, আজ সকাল সোয়া ১১টায় কর্মচারীরা সচিবালয়ে ৬ নম্বর ভবনের সামনের বাদামতলায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। তারা মিছিল নিয়ে সচিবালয় চত্বর প্রদক্ষিণ করেন। এরপর তারা ৬ নম্বর ভবনে সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদের বরাবরে স্মারকলিপি দেন।
শেষে ৬ নম্বর ভবনের লিফটের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ঐক্য ফোরামের চেয়ারম্যান মো. নূরুল ইসলাম বলেন, “প্রত্যেকটা মানুষ সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিল চায়। ফলে কোনো সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন আমরা মানব না। এখন পর্যন্ত আমরা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ডাক পাইনি। যদিও পর্যালোচনা কমিটি গঠনের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে সুপারিশ দিতে।”
তিনি বলেন, “কর্মচারীদের দাবি সম্বলিত পোস্টার লাগানো হয়েছিল। পোস্টার যারা ছিড়েছে সিসিটিভির মাধ্যমে তাদের শনাক্ত করে আমরা তাদের পরিচয় প্রকাশ করব। যার যার জায়গা থেকে পোস্টার ব্যানার লিফলেট তৈরি করে পুরো সচিবালয়ে সাটিয়ে দিতে হবে।”
নূরুল ইসলাম বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সরকারকে চোরাবালিতে আটকে ফেলার জন্য ফ্যাসিস্ট সরকারের কিছু আমলারা এই আইন তৈরি করেছে, আমরা তাদের চিহ্নিত করেছি। যদি আজকে দিনের মধ্যে তাদের প্রত্যাহার করা না হয়, তাহলে এমনও হতে পারে বিভাগীয় সম্মেলনের থেকেও কঠোর কর্মসূচি আমরা ঘোষণা করব। আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই, কিন্তু আমাদের বন্দি করে আপনারা শান্তিতে দেশ পরিচালনা করতে পারবেন এটা কি হতে পারে? আমরা হলাম বিল্ডিংয়ের ফাউন্ডেশন। যদি ফাউন্ডেশনটাই উপড়ে ফেলেন তাহলে আপনারা কীভাবে কাজ করবেন?”
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. বাদিউল কবীর, কো-মহাসচিব মো. নজরুল ইসলামসহ নেতারা।
ঈদের ছুটির পর গত সোমবার (১৬ জুন) ফের আন্দোলনে নামেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা। সোমবার ও মঙ্গলবার তারা সচিবালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ শেষে দুই দিনে চার উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেন।
চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধুমাত্র কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে এমন বিধান রেখে গত ২৫ মে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করা হয়।
এর আগে গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অধ্যাদেশটির খসড়া অনুমোদন হয়। ২৪ মে থেকেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আইনটির বিরোধিতা করে এই অধ্যাদেশটিকে কালো আইন অবহিত করে তা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/মাসুদ