পাঁচ বছর আগে দেশের বিনোদন অঙ্গনকে পেছনে ফেলে হঠাৎ করেই যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন মডেল ও অভিনেত্রী পিয়া বিপাশা। তখন অনেকেই ভেবেছিলেন, হয়তো সাময়িক বিরতি নিচ্ছেন তিনি। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় দেখা গেল, সেটিই ছিল তাঁর জীবনের মোড় ঘোরানো সিদ্ধান্ত। একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিউইয়র্কে বসতি গড়ার পর ধীরে ধীরে বদলে গেছেন পিয়া– পরিণত হয়েছেন একজন কর্মঠ মার্কিন নাগরিক, একাধারে মা, ভালোবাসার মানুষ, আবার সফল পেশাজীবীও।

সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে একাধিক স্থিরচিত্র ও ভিডিও ক্লিপ পোস্ট করে পিয়া জানান দিয়েছেন, এবার তাঁর জীবনের আরেকটি নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে– বিয়ে করেছেন তিনি। যদিও বছর শুরুর দিকে তিনি বলেছিলেন, চলতি বছরের শেষ দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন, তবে শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করেননি। পিয়া বিপাশার ইনস্টাগ্রাম পোস্ট থেকে জানা যায়, গত ২৬ জুন তিনি মার্কিন নাগরিক প্রেমিকের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।

তবে বরাবরের মতোই ব্যক্তিগত জীবনে প্রাইভেসিকে প্রাধান্য দিচ্ছেন পিয়া। স্বামীর নাম কিংবা পরিচয় এখনও গোপন রেখেছেন তিনি। নিজের মতো করে বিয়ে করলেও কোনো ঘটা করে অনুষ্ঠান করেননি, এমনকি জনসম্মুখেও স্বামীকে আনেননি। এ প্রসঙ্গে পিয়া বলেন, ‘আমার স্বামী খুব সাধারণ একজন মানুষ, পাবলিসিটি পছন্দ করেন না। আমিও চাই না আমাদের ব্যক্তিগত জীবন হঠাৎ করে জনচর্চার বিষয় হয়ে উঠুক।’

তবে ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা ছবিগুলোতে তাদের মধ্যকার বোঝাপড়া ও ভালোবাসার স্পষ্ট আভাস মিলেছে। পিয়ার এই পোস্টে ১৪ হাজারের বেশি রিঅ্যাকশন এবং প্রায় ৬০টি মন্তব্য জমা পড়েছে। অধিকাংশেই তাঁকে শুভকামনা জানিয়েছেন ভক্ত ও অনুসারীরা।

পিয়া বিপাশার জীবনের গল্প রূপকথার মতোই। ছোটবেলায় রূপকথার বই পড়তে ভালোবাসতেন তিনি, নিজেকে কল্পনা করতেন গল্পের নায়িকা হিসেবে। সেই কল্পনা থেকেই হয়তো মিডিয়ায় পথচলা শুরু। ২০১২ সালে ‘লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার’ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পরিচিতি লাভ করেন পিয়া। যদিও প্রতিযোগিতার সেরা দশে পৌঁছানোর পর ক্যাম্প ত্যাগ করেন, এরপর দ্রুতই বিজ্ঞাপনচিত্র এবং নাটকে অভিনয় শুরু করেন। তাহসানের বিপরীতে অভিনীত নাটক ‘দ্বিতীয় মাত্রা’ তাঁকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে দেয়। বড় পর্দায়ও নাম লেখান পিয়া– মুক্তি পায় ‘রুদ্র: দ্য গ্যাংস্টার’। তবে তারকা শাকিব খানের বিপরীতে ‘রাজনীতি’ ছবিতে অভিনয়ের কথা থাকলেও সেটি বাস্তবায়িত হয়নি।

পিয়া জানান, মিডিয়াতে কাজের পদ্ধতি তাঁকে হতাশ করেছে। ‘বাংলাদেশে লবিং ছাড়া কাজ হতো না। ভালো একটি সিনেমা করার কথা ছিল, সেটা আর হয়নি। এরপর মিডিয়ার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলি,’ বলেন পিয়া। সেই হতাশা থেকেই দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। তখন তাঁর সংসারও ছিল ভাঙনের মুখে, একমাত্র কন্যাসন্তানকে সঙ্গে নিয়ে এক অনিশ্চিত যাত্রা শুরু করেন।

পাঁচ বছর আগে আমেরিকায় পাড়ি জমানোর পর শুরু হয় জীবনের নতুন লড়াই। একসময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকেও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন। তিন বছর ইনস্টাগ্রাম বন্ধ রেখেছিলেন পিয়া। তবে গত এক বছরে মার্কিন বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে আবারও ফিরেছেন সেই প্ল্যাটফর্মে। যুক্তরাষ্ট্রে এখন তিনি মূলত পণ্যের প্রচারণা নিয়ে কাজ করেন এবং জানান, এখান থেকে ভালো আয়ের পাশাপাশি মানসিক প্রশান্তিও পাচ্ছেন।

পিয়া বলেন, ‘আমার একটি মেয়ে ছিল, তাকে নিয়েই টিকে থাকার লড়াই। বাংলাদেশে যেভাবে মিডিয়া চলে, সেটা আমার স্বভাবের সঙ্গে মেলেনি। আমি কাজ করতে চেয়েছি অভিনয় দিয়ে, চাটুকারিতা দিয়ে নয়। তাই সিদ্ধান্ত নিই আমেরিকায় থাকার। এখন মনে হয়, সিদ্ধান্তটা ভুল ছিল না।’

পিয়া বিপাশার জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে ভালোবাসা ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে। বাংলাদেশের মিডিয়া থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েও তিনি নতুন করে গড়েছেন নিজের পরিচয়, ভেঙে গেছেন পুরোনো বন্ধন, গড়েছেন নতুন সম্পর্ক। নতুন দেশ, নতুন সংস্কৃতি, নতুন জীবন– সব মিলিয়ে পিয়া এখন রূপকথার নায়িকা নয়, বাস্তব জীবনের লড়াকু এক নারী। তাঁর নতুন জীবনের জন্য রইল শুভ কামনা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইনস ট গ র ম র জ বন র

এছাড়াও পড়ুন:

অক্সফোর্ডে পড়ে চাকরি মেলেনি, যে সিদ্ধান্ত নিলেন যুবক

চীনের ফুজিয়ান প্রদেশে বেড়ে ওঠা এক তরুণ দিং ইউয়াংঝু (৩৯)। পড়ালেখায় ভীষণ মেধাবী তিনি। যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেন ইউয়াংঝু। এরপর পছন্দের চাকরির খোঁজ করতে থাকেন। কিন্তু পছন্দসই চাকরি মেলেনি তার। শেষে এমন এক কাজ খুঁজে নিয়েছেন যা নিয়ে চীনে রীতিমতো আলোচনা তৈরি হয়েছে।

দিং ইউয়াংঝু ফুড ডেলিভারির কাজ করছেন। পেশা হিসেবে ফুড ডেলিভারির মতো কঠোর পরিশ্রমের কাজ বেছে নিয়েছেন তিনি। নিজের পরিশ্রমের গল্প সামাজিক যোগোযোগমাধ্যমে নিয়মিত পোস্টও করছেন তিনি। তার উদ্দেশ্যে তরুণদের কাজে উৎসাহ জোগানো। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ আলোচনা হচ্ছে।

সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে স্নাতক পাস করেন দিং। এরপর চীনের আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয় পিকিং ইউনিভার্সিটি থেকে জ্বালানি প্রকৌশল নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন সিঙ্গাপুরের নানাইয়াং টেকনোলজিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জীববিজ্ঞানে। সবশেষে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জীববৈচিত্র্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।

আরো পড়ুন:

প্রেমের টানে খুলনায় এসে বিয়ে করলেন চীনা তরুণ

বিড়াল দত্তক নিলে মিলবে ফ্ল্যাট

পড়াশোনা শেষ করে সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পোস্ট ডক্টরাল গবেষক হিসেবে কিছুদিন কাজ করেন ইউয়াংঝু। কিন্তু ওই কাজটি ছিল চুক্তিভিত্তিক। চলতি বছরের মার্চে তার চাকরির চুক্তি শেষ হয়ে যায়। ফলে বেকার হয়ে পড়েন দিং ইউয়াংঝু।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে জীবনবৃত্তান্ত পাঠান। একের পর এক চাকরির পরীক্ষা দিতে থাকেন। এভাবে  অন্তত ১০টি প্রতিষ্ঠানে মৌখিক পরীক্ষা দেওয়ার ডাক পান তিনি। কিন্তু কোথাও ভালো চাকরি মেলেনি।

উপায় না দেখে ইউয়াংঝু সিঙ্গাপুরের একটি ফুড ডেলিভারি প্রতিষ্ঠানে কর্মী হিসেবে নিবন্ধন করেন। আর এটিই নাকি তার স্থায়ী চাকরি।

দিং ইউয়াংঝু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘এটা একটা স্থায়ী চাকরি। এই আয় দিয়ে আমি পরিবারকে সাহায্য করতে পারি।’’

সিঙ্গাপুরে কিছুদিন ফুড ডেলিভারির কাজ করে আবার চীনে ফিরে যান এবং সেখানেও একই কাজ শুরু করেন দিং ইউয়াংঝু। বর্তমানে বেইজিংয়ের মেইতুয়ানে একজন ফুড ডেলিভারি কর্মী হিসেবে কাজ করছেন। এটি হলো চীনের একটি শীর্ষস্থানীয় কেনাকাটার প্ল্যাটফর্ম।

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সহায়তার টাকা না পেয়ে জুলাই ফাউন্ডেশনের অফিসে ভাঙচুর আহতদের
  • হতাশায় দেশ ছাড়া অভিনেত্রী পিয়া বিপাশা বিয়ে করেছেন মার্কিন যুবককে
  • হতাশায় দেশ ছাড়া সেই পিয়া বিপাশা বিয়ে করলেন মার্কিন যুবককে
  • ৫৩ বছর বয়সে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসলেন সালেহা বিবি
  • গৌরীকে কি বিয়ে করেছেন আমির খান
  • অক্সফোর্ডে পড়ে চাকরি মেলেনি, যে সিদ্ধান্ত নিলেন যুবক
  • বাঁশির সঙ্গে কেটে গেল গণেশের জীবনের ৬০ বছর
  • কৃতজ্ঞতাভরা হৃদয়ে দিলীপ কুমারের চিঠি এখনো পড়েন স্ত্রী সায়রা
  • কৃতজ্ঞতাভরা হৃদয়ে দিলীপ কুমারের চিঠিগুলো এখনো পড়েন স্ত্রী সায়রা