চারদিকে সবুজ অরণ্য। কোলাহল নেই, তবে পাখির কিচিরমিচির আছে। এমন ছায়াসুনিবিড় গ্রামীণ জনপদে গড়ে উঠেছে একটি ফুটবল একাডেমি। প্রায় বিনা খরচায় সেখানে প্রশিক্ষণ পাচ্ছে খুদে ফুটবলাররা। স্বপ্ন দেখছে আগামী দিনের ফুটবলের ‘মেসি-নেইমার’ হওয়ার। এরই মধ্যে কেউ কেউ জায়গা করে নিচ্ছে জাতীয় দলে।

এই ফুটবল একাডেমির অবস্থান যশোর সদর উপজেলার হামিদপুর গ্রামে। নাম শামস-উল–হুদা ফুটবল একাডেমি। এই একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ফুটবল খেলে কৃতিত্ব দেখাচ্ছে অন্তত ২০ জন খেলোয়াড়। মেসি-নেইমার হওয়ার স্বপ্ন দেখছে একাডেমির এক ঝাঁক খুদে ফুটবলার।

চলতি বছর ভারতে অনুষ্ঠেয় অনূর্ধ্ব-১৯ সাফ গেমসে অংশ নিতে একাডেমিতে ১৫ দিনের ক্যাম্পে অংশ নেন বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়েরা। গত ১৭ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া ক্যাম্পে যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি ও ইংল্যান্ডের তিনজন প্রবাসী খেলোয়াড়ও ছিলেন।

নিভৃত গ্রামে প্রশিক্ষণ ক্যাম্প করতে এসে সব সুযোগ–সুবিধা পেয়ে খুশি অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবল দলের প্রধান কোচ গোলাম রব্বানী (ছোটন)। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকার বাইরে গ্রামে এমন মানসম্মত একাডেমি পাওয়া সত্যিই খুব কঠিন। এখানে গাড়ির শব্দ নেই। মানুষের কোলাহল নেই। মাঠের সঙ্গে আবাসিক ভবন। প্রশিক্ষণে শতভাগ ফোকাস করা যাচ্ছে। এবারের ক্যাম্পটি ঢাকার চেয়ে ভালো হচ্ছে। কারণ, ঢাকায় একদিকে আবাসন, অন্যদিকে অনুশীলনের মাঠ। যানজটে রাস্তায় অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়। এখানে ভালো মানের দুটি মাঠ, আবাসনের ব্যবস্থা, খেলোয়াড়দের অভ্যন্তরীণ ব্যায়ামাগারসহ জাতীয় মানের সব সুযোগ-সুবিধা আছে।

২২ একরের সাজানো একাডেমি

হামিদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে ২০১১ সালে শামস-উল–হুদা ফুটবল একাডেমির যাত্রা শুরু হয়। প্রথমে বিদ্যালয়ের মাঠ ভাড়া নিয়ে বছর তিনেক প্রশিক্ষণ চলে। এরপর পাশে জমি কিনে নিজস্ব অবকাঠামোয় ২২ একর ভূখণ্ডে একাডেমির কার্যক্রম চলছে। বর্তমানে একাডেমিতে ৬০ জন আবাসিক ও ৯০ জন অনাবাসিক প্রশিক্ষণার্থী ফুটবলের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। ১৪ থেকে ১৬ বছর বয়সী প্রশিক্ষণার্থীদের আবাসিকে রেখে প্রশিক্ষণ ও লেখাপড়ার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সীদের অনাবাসিকে প্রশিক্ষণের সুযোগ দেওয়া হয়।

গত ২৪ এপ্রিল হামিদপুর গ্রামে একাডেমিতে গিয়ে দেখা গেল, গ্রামের মধ্যে বিশাল এলাকাজুড়ে একাডেমি। পাশাপাশি দুটি সবুজ মাঠ। একটি মাঠে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের খেলোয়াড়েরা ও অন্য মাঠে একাডেমির প্রশিক্ষণার্থীরা অনুশীলন করছে। মাঠের এক প্রান্তে একাডেমির পুরোনো ভবন। অন্য প্রান্তে ছয়তলার ভাষাসৈনিক মুসা মিয়া ভবন নামের নতুন আবাসিক ভবন করা হয়েছে। ভবনে স্থাপন করা হয়েছে ব্যায়ামাগার। অনুশীলনের সময় আশপাশের মানুষ মাঠের চারপাশে ভিড় করেন।

অনূর্ধ্ব-১৯ সাফ গেমসে অংশ নিতে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয় শামস-উল–হুদা ফুটবল একাডেমিতে। গত এপ্রিলে যশোর সদর উপজেলার হামিদপুর গ্রামে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ টবল এক ড ম এক ড ম ত এক ড ম র ফ টবল র

এছাড়াও পড়ুন:

আজ ‘ছিটেফোঁটা’ বৃষ্টির সম্ভাবনা, তবে লঘুচাপ হতে পারে আবার

প্রায় পাঁচ দিন ধরে চলার পর ভারী বৃষ্টি অনেকটাই কমেছে গত বুধবার থেকে। তবে এর পরও থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। তাতে গরম খুব একটা কমছে না। আবহাওয়া অফিস বলছে, আজ শুক্রবারও দেশের কিছু কিছু স্থানে ‘ছিটেফোঁটা’ বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। তবে এরই মধ্যে সাগরে আবার একটি লঘুচাপ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এ লঘুচাপ এবার বাংলাদেশের উপকূলের কাছাকাছি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে আপাতত।

চলতি মাসের শুরু থেকেই তাপমাত্রা বাড়তে থাকে, কমে আসে বৃষ্টি। তবে গত শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি বাড়তে থাকে। দেশের প্রায় সর্বত্র বৃষ্টি হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রাম, সন্দ্বীপ, কিশোরগঞ্জের নিকলী—এসব এলাকায় ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়। রাজধানীতেও অনেক বৃষ্টি হয়। তবে গত বুধবার থেকে বৃষ্টি কমে আসতে থাকে।

গতকাল দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয় সিলেটে ৫২ মিলিমিটার। রাজধানীতে বৃষ্টি হয় মাত্র ২ মিলিমিটার। রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট অঞ্চলে গতকাল খানিকটা বৃষ্টি হলেও চট্টগ্রাম, বরিশাল ও খুলনা বিভাগ ছিল প্রায় বৃষ্টিহীন।

আজ আবার রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু স্থানে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক প্রথম আলোকে বলেন, আজ দেশের কিছু অঞ্চলে বৃষ্টি হলেও তা হবে ছিটেফোঁটা। এমনটা চলতে থাকবে আরও দুই থেকে তিন দিন।

চলতি মাসে এরই মধ্যে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে বঙ্গোপসাগরে। তবে এর প্রভাব বাংলাদেশে পড়েনি। তবে আগামী মঙ্গল বা বুধবার থেকে সাগরে আরেকটি লঘুচাপের সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ নাজমুল হক। তিনি বলেন, এখনো খানিকটা সময় বাকি। তবে এখন পর্যন্ত গতিপ্রকৃতি যা, তাতে মনে হচ্ছে বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলা খুলনার কাছাকাছি সাগরে এ লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। পরে অবশ্য এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ হয়ে ওডিশা উপকূলে চলে যেতে পারে।

সম্ভাব্য এই লঘুচাপের প্রভাবে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন নাজমুল হক। তিনি বলেন, ২৬ ও ২৭ সেপ্টেম্বর বৃষ্টি হতে পারে। লঘুচাপের প্রভাব কতটা হবে তা কিন্তু এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ