বাণিজ্য মেলায় যুবদলের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে একজন নিহত, আহত ১০
Published: 14th, January 2025 GMT
মিরসরাইয়ে শিল্প ও বাণিজ্য মেলায় যুবদলের দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি জেরে সংঘর্ষে মো. মুন্না (২২) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। তিনি মিরসরাই পৌরসভার উত্তর গোভানিয়া এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে।
সোমবার রাত ১১টায় মিরসরাই স্টেডিয়াম ও মিরসরাই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সমানে দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে আরাফাত (২৩), আসিফ (২১), হাসান (২১), সজীব (২০), রাহাত (২৪), রাশেদ (২২) ও হৃদয়ের (২১) নাম জানা গেছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও আহতরা জানান, সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মিরসরাই স্টেডিয়ামে চলা শিল্প ও বাণিজ্য মেলায় পৌরসভা যুবদলের আহ্বায়ক কামরুল ইসলাম ও সদস্য সচিব জাহিদ হোসেন অনুসারীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। তার জেরে মেলার গেইটে সিএনজি অটোরিকশার টোল আদায়সহ শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা জাহিদ অনুসারীদের ওপর কামরুল অনুসারী ১৫-২০ জনের একটি গ্রুপ অতর্কিত হামলা চালায়।
এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। একপর্যায়ে জাহিদের অনুসারীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পশ্চিম পাশে চলে আসে। সেখানেও দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে জাহিদ অনুসারীরা মিরসরাই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। রাত ১১টার দিকে কামরুলের অনুসারীরা ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে জাহিদের অনুসারীদের ওপর আবার চড়াও হয়। এ সময় মুন্না নামে জাহিদের এক অনুসারী এককর্মী তাদের সামনে পড়লে তাকে কুপিয়ে আহত করে। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মান্নাকে মৃত ঘোষণা করে।
মিরসরাই পৌরসভা যুবদলের সদস্য সচিব জাহিদ হোসেন মুন্নার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন বলেন, এটি কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। মুন্না যুবদলের কর্মী ছিল।
মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতিকুর রহমান জানান, রাত ১১টার দিকে মিরসরাই পৌরসভায় যুবদলের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হয়েছে। আমরা জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছি। এখন এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে সৌদিতে বৈঠকে বসবেন ট্রাম্প-পুতিন
ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে সৌদি আরবে ‘শান্তি আলোচনায়’ অংশ নেবেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আজ বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে এএফপি।
এর আগে গতকাল বুধবার পুতিন ও ট্রাম্প ফোনে কথা বলেন। পরে ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইউক্রেন নিয়ে শান্তি আলোচনার জন্য তিনি শিগগির রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। এই বৈঠক সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত হবে।
হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের ফিরে আসার পর এটা ছিল দুই নেতার ‘দ্বিতীয় আনুষ্ঠানিক ও স্বীকৃত’ যোগাযোগের ঘটনা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, পুতিনের সঙ্গে তার দীর্ঘ ও ফলপ্রসূ ফোনালাপ হয়েছে।
তিনি বলেন, আলোচনায় ইউক্রেন, মধ্যপ্রাচ্য, জ্বালানি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ডলার ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ট্রাম্প ট্রুথে লিখেছেন, ‘আমরা দু’জনেই একমত হয়েছি যে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে যে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, তা বন্ধ করতে চাই।’
তিনি বলেন, আমরা উভয়েই এতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। কিন্তু প্রথমেই আমরা একসঙ্গে কাজ করতে এবং একে অপরের দেশ পরিদর্শন করতে সম্মত হয়েছি।
ইতোমধ্যে দুই নেতা তাদের দলকে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটানোর জন্য আলোচনা শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। এই যুদ্ধ প্রায় তিন বছর আগে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল।
ট্রাম্প বলেন, আর কোনো জীবনহানি হওয়া উচিত নয়। আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনকে তার সময় ও প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ জানাই এবং গতকাল মুক্তি পাওয়া মার্ক ফোগেলের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। তিনি একজন অসাধারণ মানুষ, যাকে আমি গত রাতে হোয়াইট হাউসে ব্যক্তিগতভাবে স্বাগত জানিয়েছি।
এই ফোনালাপটি মার্ক ফোগেলের মুক্তির একদিন পরেই অনুষ্ঠিত হয়। ফোগেল একজন মার্কিন নাগরিক, যিনি রাশিয়ায় তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্দি ছিলেন। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র আলেকজান্ডার ভিনিক-কে মুক্তি দিতে পারে। যিনি গত বছর অর্থপাচার ষড়যন্ত্রের দায় স্বীকার করেছিলেন। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি পুতিনের সঙ্গে তার যোগাযোগের বিষয়ে খোলাসা করেননি।
ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারের সময় ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন যে, প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার আগেই তিনি এই যুদ্ধ বন্ধ করতে পারবেন। পুতিনের সঙ্গে এই ফোনালাপ ইঙ্গিত দিচ্ছে যে শান্তি আলোচনা আরও গুরুতর হতে পারে।
ট্রাম্প ও তার মিত্ররা ইউক্রেনে মার্কিন সহায়তা অব্যাহত রাখার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন এবং তিনি বলেছেন, যে ইউরোপের উচিত কিয়েভকে সমর্থনে আরও বড় ভূমিকা নেওয়া। পাশাপাশি, গত মাসে ট্রাম্প মস্কোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন। যদি তারা যুদ্ধবিরতির আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানায়।
এদিকে সহ-রাষ্ট্রপতি জেডি ভ্যান্স ইউরোপের মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিতে যাচ্ছেন এবং সেখানে তিনি জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট ইউক্রেনে গিয়ে জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করবেন। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদে আরও বেশি প্রবেশাধিকার পেতে চায়।