শীতের সন্ধ্যায় লালনের গানের সুরে উষ্ণতা
Published: 14th, January 2025 GMT
মাঘ আসার আগেই পৌষের শেষ দিনে খেই হারিয়েছে শীত। নাগরিক সন্ধ্যার শীতল বাতাসে যেন বসন্তের স্পর্শ। কিন্তু ভাবের সঙ্গে ভালোবাসার মিশেলে লালনের গানে পায় উষ্ণতা। সন্ধ্যা হয়ে ওঠে আরও মুখরিত।
মানবিকতা ও ঐক্যের শাশ্বত বার্তা সমাজের প্রতিটি হৃদয়ে পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের উদ্যোগে নন্দনমঞ্চে গতকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয়েছে সাধুমেলা ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’।
সাধুমেলা দেখতে পরিবারসহ উপস্থিত ছিলেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড.
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন একাডেমির সচিব মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন এবং স্বাগত বক্তব্য দেন সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক মেহজাবীন রহমান।
ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেন, মরমি গানের একেবারে মধ্যমণি হয়ে আছেন লালন সাঁইজি। লালন শাহ আমাদের উদ্বুদ্ধ করেন, জীবনের চেতনা দান করেন, আমাদের দিকনির্দেশ করেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, মানুষকে ভালোবাসার কথা বলেন। আর সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হচ্ছে, এদের ওপরই আক্রমণটা বেশি হয়। যেহেতু এরা দু’হাত তুলে মানুষকে ভালোবেসে আলিঙ্গন করতে চান, তাই সুযোগ পেলে তাদের ওপর নানাভাবে আক্রমণ করে। আমরা শিল্পকলা একাডেমির পক্ষ থেকে এর প্রতিবাদ জানাই এবং এগুলো বন্ধের আহ্বান জানাই।
সাধুমেলায় পরিবেশনার শুরুতে লালনগীতি ‘ধন্য ধন্য বলি তারে’ পরিবেশিত হয়। পরে একে একে ‘কেন ডুবলি নে মন মনরে’, ‘হে করুণা সিন্ধু’, ‘আমি ওই চরণ দাসের যোগ্য নই’সহ মানবাত্মার মিলনান্ত গান পরিবেশন করেন শিল্পীরা।
বাউল গান পরিবেশনে ছিলেন কহিনুর আক্তার গোলাপী, জাহিদুল ইসলাম, উপমা আক্তার বৃষ্টি, মিরাজ সিকদারসহ আরও অনেকে। এ ছাড়া আব্দুল মান্নান তালুকদার পরিবেশন করেন ‘বিনা কার্যে ধন উপার্জন’, লাভলী শেখ ‘এই মানুষে মিলতো মানুষ যদি’ এবং শাহ নেওয়াজ সজীব পরিবেশন করেন ‘চিরদিন পুষলাম এক অচিন পাখি’।
এমন সব গানে দর্শকদের সন্ধ্যা ভরিয়ে তোলেন শিল্পীরা। আয়োজনের সমাপ্তি ঘটে সমবেত কণ্ঠে ‘মিলন হবে কত দিনে’- গানের মধ্য দিয়ে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এক ড ম র ন কর ন পর ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিকের লাশ উদ্ধার, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
নড়াইলের লোহাগড়ায় প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিক সৈয়দ মাসুম বিল্লাহর (২০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মাসুমের বাম হাতের একটি আঙুলের নখ উপড়ে ফেলার আলামত থাকায় তার পরিবার অভিযোগ করছে, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
শুক্রবার (১ আগস্ট) দুপুরে কালনা মধুমতি সেতুর পশ্চিম পাশে রাস্তার ওপর মাসুমকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ইজিবাইকের চালক সুজন শেখ তাকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। বিকেলে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
মাসুম বিল্লাহ লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের মাকড়াইল গ্রামের মৃত সৈয়দ রকিবুল ইসলামের ছেলে।
আরো পড়ুন:
জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল
সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা: ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন
মাসুমের স্বজনরা জানিয়েছেন, শালনগর ইউনিয়নের এক কিশোরীর সঙ্গে মাসুমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেয়েটির বিয়ের খবর পেয়ে শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে তিনি ঢাকা থেকে লোহাগড়ায় আসেন। সকালে পরিবারের সঙ্গে তার শেষবার কথা হয়, এরপর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।
মাসুম বিল্লাহর চাচা শরিফুল ইসলাম বলেছেন, “আমরা শুনেছি, সকালে লোহাগড়া বাজারের একটি পার্লারে মেয়েটির সঙ্গে মাসুমের কথা হয়। এর পর মেয়েটির বাবার কাছ থেকে হুমকি পায় সে। পরে হাসপাতাল থেকে ফোন পেয়ে মাসুমের মৃত্যুর খবর জানি। তার বাম হাতের নখ উপড়ানো ছিল। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।”
মাসুমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া ইজিবাইক চালক সুজন বলেছেন, “ঘটনাস্থলে কোনো দুর্ঘটনার চিহ্ন ছিল না। তবে মনে হয়েছে, কেউ মাসুমকে গাড়ি থেকে ফেলে দিয়েছে।”
লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম শনিবার (২ আগস্ট) সকালে সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমরা মাসুম বিল্লাহকে মৃত অবস্থায় লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে থানায় নিয়ে আসি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।”
ঢাকা/শরিফুল/রফিক