দেশে এখন ৩১টি ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে। সারাদেশে ব্যাংকগুলোর ১৫ হাজার ৯৫৭ জন এজেন্টের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে ২১ হাজার ১৮৬ এজেন্ট আউটলেট। এর মধ্যে ১৮ হাজার ১৩১টিই রয়েছে বিভাগীয়, জেলা ও পৌর এলাকার বাইরে। চাহিদা বিবেচনায় ১৩টি উপজেলায় এখন শতাধিক এজেন্ট আউটলেট রয়েছে। সবচেয়ে বেশি লক্ষ্মীপুর সদরে রয়েছে ১৫৮টি এজেন্ট আউটলেট। বাংলাদেশ ব্যাংকের নভেম্বর ভিত্তিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বিভাগ ভিত্তিতে সবচেয়ে বেশি এজেন্ট রয়েছে ঢাকা বিভাগে। ঢাকার ৪ হাজার ৭৪৯ এজেন্টের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে ৫ হাজার ৩৩৩টি আউটলেট। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ৩৯৮টি এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ৩০৩টি আউটলেট রয়েছে। বাকি আউটলেট রয়েছে অন্য এলাকায়।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চট্টগ্রামে ৩ হাজার ৭১১ এজেন্ট ৪ হাজার ৭৪৯টি আউটলেট পরিচালনা করছে। পর্যায়ক্রমে খুলনার ১ হাজার ৯৮৭ এজেন্ট ২ হাজার ৬২৫টি, রাজশাহীর ১ হাজার ৮৭৮ এজেন্ট ২ হাজার ৫৪২টি, বরিশালের ১ হাজার ৭৬ জন এজেন্ট ১ হাজার ৪০২টি, রংপুরের ১ হাজার ৪৪২ এজেন্ট ২ হাজার ১৩০টি এবং সিলেটে ৯১৯ এজেন্ট ১ হাজার ২০২টি আউটলেট পরিচালনা করছে। বিভাগীয় শহরের মধ্যে সর্বনিম্ন ১ হাজার ২০৩টি আউটলেট রয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগে।

কোন উপজেলায় কত আউটলেট
এককভাবে এখন সর্বোচ্চ এজেন্ট আউটলেট রয়েছে লক্ষ্মীপুর সদরে। গত নভেম্বর পর্যন্ত মোট ১৫৮টি আউটলেট খোলা হয়েছে এ উপজেলায়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৫২টি আউটলেট রয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায়। এর পরের অবস্থানে কুমিল্লার মুরাদনগরে রয়েছে ১৪০টি। চতুর্থ অবস্থানে থাকা নরসিংদীর রায়পুরায় আছে ১২৫টি আউটলেট। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর ১১৮টি আউটলেট খোলার মাধ্যমে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে।

শতাধিক এজেন্ট আউটলেট রয়েছে আরও ৮টি উপজেলায়। টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ১১০টি, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ১০৯টি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় ১০৬টি, যশোর মনিরামপুরে ১০৪টি, রংপুরের মিঠাপুকুরে ১০২টি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ১০১টি, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে ১০১টি ও ফরিদপুর সদর উপজেলায় রয়েছে ১০১টি।
৯০টির বেশি এজেন্ট আউটলেট রয়েছে ১০টি উপজেলায়।  কুমিল্লার দেবিদ্বার ৯৫টি, নোয়াখালী সদরে ৯৫টি, নরসিংদী সদরে ৯৫টি, ফেনী সদরে ৯৫টি, ধামরাইতে ৯৪টি, চরফ্যাসনে ৯৩টি, ঠাকুরগাঁও সদরে ৯৩টি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরে ৯২টি, মানিকগঞ্জের সিংগাইর ৯১টি এবং যশোর সদর ৯১টি। এর পর পর্যায়ক্রমে বেশি এজেন্ট আউটলেট থাকা উপজেলা হলো– চৌদ্দগ্রাম ৮৮টি, বরুড়া ৮৭টি, মাদারীপুরের শিবচর ৮৬টি, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ ৮৩টি, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর ৮৩টি, বগুড়ার শিবগঞ্জ ৮১টি, কুমিল্লার দাউদকান্দি ৮০টি, টাঙ্গাইল সদর ৭৯টি, ফরিদপুরের ভাঙ্গা ৭৯টি, কুমিল্লার নাঙ্গলকোট ৭৮টি, গাজীপুর কাপাসিয়া ৭৭টি, কুষ্টিয়া সদর ৭৭টি, মাদারীপুর সদর ৭৬টি, নবাবগঞ্জ ৭৬টি, কেরানীগঞ্জে ৭৫টি, গাজীপুরের কালিয়াকৈর ৭৫টি, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি ৭৪, কক্সবাজারের চকরিয়া ৭৪টি, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া ৭৩টি, জামালপুর সদর ৭৩টি, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ ৭২টি, নরসিংদীর শিবপুর ৭২টি, হবিগঞ্জের মাধবপুর ৭১টি, সিরাজগঞ্জ সদর ৭১টি এবং  গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ৭১টি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপজ ল য় প র সদর এল ক য় পর চ ল

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ